× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দক্ষিণে স্বপ্নের ট্রেনযাত্রা

ইতিহাস কেন শেখ হাসিনাকে মনে রাখবে

আবদুল মান্নান

প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:২২ পিএম

আবদুল মান্নান

আবদুল মান্নান

১০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেলযাত্রা করে বাঙালির আর একটি স্বপ্ন পূরণ করলেন। সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন। তিনি প্রমাণ করলেন দেশ যোগ্য নেতৃত্বের হাতে থাকলে অনেক অসম্ভব সম্ভব করা যায়। এক্ষেত্রে তিনি পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মনে রেখেছেন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ঘাতকরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিল। বিদেশে থাকার কারণে তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে গিয়েছিলেন। অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৭ মে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ মাথায় নিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন। বাংলাদেশের ক্ষমতায় তখন বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারী আর তাঁর ঘাতকরা। সেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন শুধু টানা তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি একজন বিশ্বনন্দিত রাষ্ট্রনায়ক। বদলে দিয়েছেন এক ঘুণে ধরা, পোকায় খাওয়া বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তাঁর ঘাতকরাই বাংলাদেশ শাসন করেছিল পরবর্তী ২১ বছর। সেই বাংলাদেশে মোট ২০ বছর প্রধানমন্ত্রী থেকে শেখ হাসিনা রেকর্ড করেছেন।

ইতিহাস কেন মনে রাখবে শেখ হাসিনাকে? কন্যা, জায়া, জননী নাকি একজন সফল রাজনীতিবিদ? সহজ কথায় বলতে গেলে তিনি তার ওপর অর্পিত সব দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেছেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর রাজনৈতিক কারণে বঙ্গবন্ধু অবিভক্ত পাকিস্তানের ২৩ বছরে ১৩ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। এ সময় মা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের পাশে থেকে বাড়ির বড় সন্তান হিসেবে সহায়তা করেছেন। বড় বোন হিসেবে ছোট চার ভাইবোনের প্রতি তার দায়িত্ব পালন করেছেন। মা বেগম মুজিব যখন কারাগারে বাবার সঙ্গে দেখা করতে যেতেন তখন তাঁর সঙ্গী হয়েছেন। সংসারে মাকে সহায়তা করেছেন। বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর তার সংসার সামাল দিয়েছেন। শেখ হাসিনার যখন বিয়ে হয় তখন বঙ্গবন্ধু কারাগারে। এ সময় শেখ হাসিনা দুটি সংসারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭৫ সালে ড. ওয়াজেদ মিয়া যখন গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানিতে চলে যান, শেখ হাসিনা তার সঙ্গে সেখানে যোগ দিয়েছেন। তিনি জার্মানিতে যাওয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় ঘাতকরা বাবা-মাসহ পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন করে দেয়। শুরু হয় আর এক কঠিন সময়। যখন শেখ হাসিনার দুই সন্তানের জন্ম হয় তখন তিনি মায়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। মায়ের ভূমিকা সব সময় কঠিন। এ ভূমকায় তার অর্জন অসাধারণ। শত প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও তিনি জয় ও পুতুলকে মানুষ করে তুলেছেন, সহায়তায় ছোট বোন শেখ রেহানা। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর ছোট বোন বড় বোনের ছায়াসঙ্গী ছিলেন। এখনও এই নিভৃতচারী বোনটি শেখ হাসিনার ছায়াসঙ্গী হিসেবেই আছেন। পদ্মার ওপর রেলযাত্রায় তিনি ও পরিবারের সবাই পাশে ছিলেন। তার এসব পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের চারবারের প্রধানমন্ত্রী হওয়াটা মোটেও সহজ ছিল না।

১৯৮১ সালে বিধ্বস্ত আওয়ামী লীগের হাল ধরার পর থেকেই সব সময় শেখ হাসিনার পেছনে একটি বুলেট তাড়া করেছে। দেশে ফেরার পর জিয়া তো শেখ হাসিনাকে ৩২ নম্বরের বাড়িতে ঢুকতেই দেননি। আশ্রয় পেয়েছিলেন ফুফুর বাড়ি। শুরু হলো আর এক জীবন। জিয়ার মৃত্যুর পর ক্ষমতায় তখন আর এক জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি দেশে চালু করলেন স্বৈরতন্ত্র। শুরু হলো এরশাদবিরোধী আন্দোলন। সব রাজনৈতিক দল, ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠন, পেশাজীবী আর সাংস্কৃতিক সংগঠন তথা দেশের মানুষ একজোট। এরশাদের পতন ঘটিয়ে দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার নির্বাচিত করতে হবে। ১৯৯০ সালে এরশাদের পতন হলো। সব দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হলো।

১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনে জামায়াতের সমর্থন নিয়ে বিএনপি জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। শেখ হাসিনার সংসদে প্রবেশ বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে। এ সংসদের জন্যই পিতা আজীবন লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়া সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে সব সময় সচেতন ছিলেন। কথা বলেছেন জনগণের স্বার্থ নিয়ে। দেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের উত্থান আর আস্ফালন নিয়ে। পাঁচ বছর সংসদের সময়টা ছিল তার জন্য একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের প্রশিক্ষণকাল। তবে রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হিসেবে তিনি এসব বিষয় সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। শেখ হাসিনার একটি বড় গুণ তিনি প্রচুর লেখাপড়া করেন।

১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয় লাভ করলে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার নতুন যাত্রা হয়। এ আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। ২১ বছরে বদলে গেছে অনেক হিসাবনিকাশ। প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে অনেকটা বঙ্গবন্ধুর দর্শনের বিরোধী। তাদের বেশিরভাগের নিয়োগই দুই সেনাশাসকের আমলে। বেগম জিয়ার রাষ্ট্র পরিচালনার দর্শনও ছিল স্বামী জেনারেল জিয়ার অনুরূপ। শুধু স্বামীর স্থলে স্ত্রী, এই যা। নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন সরকার গঠন করতে পারলে তিনি ১৫ আগস্টের ঘাতকদের বিচারের মুখোমুখি করবেন। বিচার করবেন একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের। দুটি কাজই কঠিন ছিল। ১৫ আগস্টের ঘাতকদের বিচারের বাধা ছিল জিয়া কর্তৃক সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত ইনডেমনিটি আইন; যার বলে জিয়া নিশ্চিত করে গিয়েছিলেন ঘাতকদের কোনো বিচার করা যাবে না। সংসদে বিল উত্থাপন করে সেই কালো আইন বাতিল করে উন্মুক্ত আদালতে শুরু হয়েছিল বিচারকাজ। পরামর্শ ছিল বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করার। রাজি হননি শেখ হাসিনা। তিনি বিশ্বের কাছে ন্যায়বিচারের একটি উদাহরণ স্থাপন করতে চেয়েছিলেন। এ রকমের একটি বিচার সম্পাদন করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ মেয়াদে এ বিচারকাজ শেষ হয়নি। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বেগম জিয়া কৌশলে ঘাতকদের বিচারকাজ বন্ধ করে দেন।

নানা ধরনের দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা তার নতুন পথচলা শুরু করেন। হাতে অনেক অসমাপ্ত কাজ। এক-এগারোর সেনাসমর্থিত অসাংবিধানিক সরকারের সময় বন্দি হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কারাজীবনে যত্নসহকারে পারিকল্পনা তৈরি করেছিলেন কখনও ক্ষমতায় গেলে তার অগ্রাধিকার কী হবে। সরকার গঠন করেই লেগে গেলেন আগেরবারের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে। শেষ হলো পঁচাত্তরের ঘাতকদের বিচারকাজের শেষ পর্যায়। তারপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের ঘাতকদের বিচার শুরু হলো। বাধা এলো দেশবিদেশ থেকে। বেগম জিয়া প্রকাশ্যে ঘাতকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বললেন, যুদ্ধাপরাধ বিচারের নামে সরকার আলেম-ওলামাদের বিচার করছে। অবিচল শেখ হাসিনা। একসময় বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হলো। দণ্ডিত আসামিদের সাজা দেওয়া হলো।

সবশেষে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন যার মধ্যে কৃষি ও জ্বালানি অন্যতম। পূর্ববর্তী সরকার আমলে এ দুটি খাত ছিল সবচেয়ে অবহেলিত। বাড়ল কৃষিতে ভর্তুকি। শুরু হলো জ্বালানি নিরাপত্তার পরিকল্পনা আর তার বাস্তবায়ন। শেখ হাসিনার নিরবচ্ছিন্ন তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থাকার সময় সবচেয়ে বড় বিপ্লব ঘটেছে এ দুটি খাতে। স্থাপিত হলো নতুন নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, যার মধ্যে রামপাল, পায়রা উল্লেখযোগ্য। রূপপুর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনের যুগে। বর্তমানে বাংলাদেশে ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। রূপপুরে দুটি ইউনিট। এ কেন্দ্র সম্পূর্ণ চালু হলে প্রতিটি ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই দেশ কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভ করে। তার শাসনামলে দেশের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন চোখ ধাঁধানো। বিশ্বের দ্বিতীয় খরস্রোতা নদী পদ্মার ওপর নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো কর্মটি তো বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরেই হয়েছে। সেই পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো রেল চলল। পদ্মা সেতু নির্মাণের যখন কথা চলছিল তখন কথা ছিল বিশ্বব্যাংক এ সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করবে। দেশের ভেতর থেকে একটি মহল বিশ্বব্যাংককে খবর পাঠালÑ খবরদার! টাকা দেবেন না কারণ এ টাকা নিয়ে একটি ভয়াবহ দুর্নীতির পরিকল্পনা হয়েছে। তখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক এক টাকাও ঋণ ছাড় করেনি। কিছু মিডিয়া, কিছু পণ্ডিতজন আর কতিপয় বিশেষ ব্যক্তির ঢাকা-ওয়াশিংটন দৌড়ঝাঁপ ছিল তখন দেখার মতো। শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেনÑ নিজের অর্থায়নেই এ সেতু হবে। শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে এখন সেই সেতু বাস্তব।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল, ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, আধুনিক মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কক্সবাজারের সঙ্গে সরাসরি রেলযোগাযোগ, চট্টগ্রাম বন্দর আধুনিকায়ন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রমুখ মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচয় বদলে দিয়েছে। যে দেশে ২০ বছর আগেও রাজধানীতে যেখানে ধীরগতির গাড়ি চলত, সে দেশ যেদিন মহাশূন্যে উপগ্রহ পাঠাল তখন এ বিষয়ে বিরোধী দলের মতামত জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বললেন, ‘আগে ঘুরুক তারপর বলব’। সেই বিরোধী দলই এখন ঘুরছে। বাংলাদেশ এখন মহাশূন্যে দ্বিতীয় উপগ্রহ পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। তাইতো এখন সব পরাশক্তির নজর বাংলাদেশে।

পিতা বঙ্গবন্ধু বেঁচেছিলেন ৫৫ বছর। তিনি বাঙালিকে একটি স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন। কন্যা হাজারো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ৭৭ বছরে যাত্রা করেছেন। তার অর্জন আকাশছোঁয়া। তবে তিনি বাগে আনতে পারেননি দুর্নীতিবাজদের; যা অত্যন্ত জরুরি। পিতা আর কন্যা এক জনমে দেশকে যা দিয়েছেন তার বেশি কিছু দেশের মানুষের চাওয়া বা আশা করা উচিত নয়। দেশের মানুষ এখন কন্যার নিরাপদ জীবন আর দীর্ঘায়ু কামনা করতে পারে। তার চারপাশে শত্রুর অভাব নেই। তলে তলে অনেকেই ঢুকে পড়েছে। ঘরের শত্রুরাই সুযোগ পেলে ছোবল মারে। সাবধান হওয়ার এখনই সময়।

  • বিশ্লেষক ও গবেষক। সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন

১০ অক্টোবর, ২০২৩

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা