প্রজন্মের ভাবনা
তৌহিদ-উল বারী
প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৫ এএম
আজকের শিশু আগামীর
ভবিষ্যৎ। এ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুন্দর ও পরিপূর্ণভাবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন শিক্ষা।
শিক্ষা অর্জন সবার জন্য একটি আবশ্যকীয়। শিক্ষা অর্জনে শিশুদের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায়
পাঠদান করাতে হয়। পাঠদানের পাশাপাশি শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে প্রয়োজন পড়ে খেলাধুলার।
দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
কার্যক্রম শুধু শিক্ষার্থীদের পাঠদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। শারীরিক ও মানসিক বিকাশ তথা
সৃজনশীল কার্যক্রমের কোনো সুযোগ এখানে প্রায় নেই বললেই চলে। তার অন্যতম একটি কারণ দেশের
অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেই নিজস্ব কোনো খেলার মাঠ। বিশেষ করে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়
গড়ে ওঠা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠের অভাব চোখে পড়ার মতো।
একটা সময় ছিল যখন মাঠ বা স্কুল-কলেজের খেলার চত্বর মুখর থাকত। এখন তেমনটি খুব একটা চোখে পড়ে না। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে পুরোনো কিছু স্কুল-কলেজ ছাড়া নতুন অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ নেই বললেই চলে। অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর স্থান সংকুলান করতে না পেরে নতুন ভবনের জন্য খেলার মাঠের একাংশ ব্যবহার করা হয়। আস্তে আস্তে সংকুচিত হতে শুরু করে খেলার মাঠ। এভাবে খেলার মাঠ হারিয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় এখনও খেলার মাঠ রয়েছে। তবে এসব মাঠ বিভিন্ন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় এমনকি রাজনৈতিক জনসভার অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। খেলাধুলার পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে মাঠ। অনেক সময় খেলার মাঠের চারপাশে ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়। খেলাধুলার কোনো সুযোগ সেখানে মেলে না।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা বাসাবাড়ি ভাড়া নিয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করে দেন। ফলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মাঠের অভাবে যথাযথ শারীরিক কসরত কিংবা খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে না। তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তুলনামূলকভাবে। তাতে শিক্ষার্থীরা যেন বন্দিজীবন পার করছে। সংশ্লিষ্ট মহলকে অবশ্যই এ বিষয়ে ভাবতে হবে। নিতে হবে এ থেকে পরিত্রাণের যথাযথ উদ্যোগ। মাথায় রাখতে হবে, দেশের সব খেলার মাঠ যেন সরকারি বা বেসরকারি প্রয়োজনে ব্যবহার না করা হয়। পাশাপাশি শিশুদের খেলাধুলার প্রতি উৎসাহ প্রদান স্বরূপ নানা ধরনের শরীরচর্চার কার্যক্রম হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের দিকে নজর দিতে হবে। শিশুরা বেড়ে উঠুক মুক্তভাবে, আনন্দ আর উদ্দীপনায় উদ্দীপ্ত হয়- একটি বিকশিত সমাজে এ প্রত্যাশা খুবই স্বাভাবিক। শিশুদের যদি যথাযথভাবে বিকাশ ঘটে তাহলেই আমরা সমস্বরে বলতে পারব, ‘আজ যে শিশু পৃথিবীর আলোয় এসেছে, আমরা তার তরে সাজানো একটি বাগান চাই।’