× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

পাউবোর এ কেমন গাফলতি

সম্পাদক

প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:২২ এএম

পাউবোর এ কেমন গাফলতি

সুপেয় পানির দাবিতে বিক্ষোভ, জমিতে সেচের পানির অভাবে বিক্ষোভÑ এ রকম খবর সংবাদমাধ্যমে হরহামেশাই দেখা যায়। রাজধানীতে পানির সংকট এবং পানির অপচয় নিয়েও প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। বিক্ষোভ-দাবি-আন্দোলনে এসব সমস্যার সাময়িক সমাধান হলেও তা যে আশাপ্রদ নয়, তা স্পষ্ট হয় ফি বছর এমন দাবিতে মানুষ পথে নেমে আসায়। প্রতিবছরই দেশে বাড়ছে খরাপ্রবণ স্থানের সংখ্যা। উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে মরুকরণ প্রক্রিয়া। সারা দেশেই নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। ফুরিয়ে আসছে ভূগর্ভস্থ পানির ভান্ডারও। গৃহস্থালি কাজে তো বটেই, কৃষিকাজেও পানির খরচ কম নয়। কিন্তু সেই পানিরই এখন সংকট। পানির অভাবে বাড়ছে আনুষঙ্গিক নানান সমস্যা। ইউনিসেফের একটি প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ ভুগতে শুরু করবে পানির সংকটে। শুধু সুপেয় পানিই নয়, স্বাভাবিক পানি না মিললে কি সোনার ফসল ফলবে? ফলবে না। এই যে পানির সংকট নিয়ে এত কথা। একইভাবে অতিরিক্ত পানিও কিন্তু ডেকে আনে বিপদ এবং সংকট।

পানি না মিললে যেমন সোনার ফসল ফলে না, তেমনি অতিরিক্ত পানির কারণেও নষ্ট হয়ে যায় ফসল। এজন্য পানি ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি। অতিরিক্ত পানির কারণেই এবার নষ্ট হতে বসেছে ফেনী জেলার ২৯ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান। ১২ ডিসেম্বর প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ ‘পাউবোর গাফিলতিতে ২৯ হেক্টরের ধান পানির নিচে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। তাতে বলা হয়েছে ফেনীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গাফিলতিতে পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা কার্যকর না থাকায় ডুবে আছে ২৯ হেক্টর জমির আমন ধান। এতে ক্ষতি হয়েছে ১২৮ মেট্রিক টন ফসলের। ফসল নষ্ট হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে হাহাকার। পানিতে ডুবে থাকায় এলাকার আমন ধান, মৌসুমি বিভিন্ন শাক-সবজিসহ প্রায় অর্ধকোটি টাকার ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সময়মতো রবিশস্য চাষাবাদ করতে না পারার দুশ্চিন্তাও কৃষকদের ঘিরে ধরেছে।

স্থানীয় কৃষকদের এই যে দুশ্চিন্তা ও ক্ষতি, তার পেছনের কারণটিও স্পষ্ট। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে জেলার ২৮ দশমিক ৯৫ হেক্টর জমির ১২৮ মেট্রিক টন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এসব জমিতে জমে থাকা পানি সরে না যাওয়ায় রবিশস্যÑ গম, ভুট্টা, সরিষাসহ ডালজাতীয় ও অন্যান্য ফসল চাষাবাদেও বিলম্ব হচ্ছে। শুধু ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবই নয়, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবেও বৃষ্টি হয়েছে। সেই পানির প্রভাবে তলিয়ে গেছে ফেনীর সদর উপজেলার ফাজিলপুর, কাজিরবাগ, মোটবি, সোনাগাজীর বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। পানিতে নুয়ে পড়েছে আমন ধান। কৃষকদের অভিযোগ, ফেনী পাউবোর মুহুরী সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ নেওয়া হলে এ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হতো না তাদের। শুধু ভুক্তভোগী কৃষকই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত একটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানও দায়ী করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিকে। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশের প্রতিবেদককে বলেছেন, ‘পাউবোর গাফিলতির কারণে মুহুরী সেচ প্রকল্পের রেগুলেটরের গেট বন্ধ রাখায় অতিরিক্ত পানি সরতে পারছে না। তাই ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি কৃষকরা আমাকে জানালে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যার কথা জানিয়েছি। কিন্তু তারা এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গত বছর ফেনীতে রেকর্ড পরিমাণ সরিষা আবাদ হয়েছে। এবার তার অর্ধেক হবে কি না সন্দেহ।’ মূলত মুহুরী সেচ প্রকল্পের রেগুলেটরের গেটগুলো বন্ধ থাকায় এবং মুহুরী নদীতে পর্যাপ্ত পানি থাকার কারণেই প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল।

ইতোমধ্যে পাউবো কর্তৃপক্ষ গেট খুলে অতিরিক্ত পানি অপসারণের বিষয়ে স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেছে বলেও প্রতিদিনের বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রকাশ। বিষয়টি ইতিবাচক। এখন সিদ্ধান্ত যত দ্রুত কার্যকর হবে, ফসলের জন্য তা তত ভালো। আমরা সিদ্ধান্তটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাই যাতে করে কৃষকদের দুর্ভোগের অবসানের পাশাপাশি ফসল উৎপাদন ব্যাহত না হয়। করোনার অভিঘাতে এমনিতেই অর্থনীতি সংকটে, তার রেশ কাটার আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তাতে নতুন মোড়ক লাগায়। এই দুঃসময় থেকে বেরিয়ে এসে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার পেছনে বড় অবদান আমাদের কৃষকদের। দেশকে এখনও খাদ্যঘাটতিতে পড়তে না দেওয়ার কৃতিত্বও আমাদের কৃষকদের। খাদ্যঘাটতি মোকাবিলার পাশাপাশি দেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে সরকারও কৃষিব্যবস্থার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে। তাই কারও অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা ও অযোগ্যতায় যেন আমাদের কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে যেমন নজর দেওয়া প্রয়োজন, তেমনি দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুততার সঙ্গে তার সমাধানও জরুরি। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা