× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

‘টোটকা দাওয়াই’য়ের বাইরে বাজারের সমাধান খুঁজুন

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:৩১ এএম

‘টোটকা দাওয়াই’য়ের বাইরে বাজারের সমাধান খুঁজুন

বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা বহুবার এই সম্পাদকীয় স্তম্ভে প্রশ্ন উত্থাপন করেছি, বাজারের নাটাই কার হাতে? কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, সংবাদমাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির নানা চিত্র উঠে এলেও এর কোনো প্রতিবিধান নিশ্চিত হচ্ছে না। আমরা দেখেছি, কোনো কারণ ছাড়াই হুটহাট নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায় এবং এই প্রেক্ষাপটে ‘সিন্ডিকেট’ শব্দটি আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত হয়ে ওঠে। সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব ও কারসাজির কথা সরকারের অনেক মন্ত্রীও ইতোমধ্যে স্বীকার করে নেওয়ার পাশাপাশি সিন্ডিকেটের হোতাদের সম্পর্কে তারা কখনও কখনও এমন কথা বলেছেন, এ যেন অসহায় আত্মসমর্পণ বৈ কিছু নয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য আর শাক-সবজির দাম বাড়ার প্রেক্ষাপট এক নয়। শাক-সবজি আমাদের আমদানি করতে হয় না। একই সঙ্গে এমন কোনো প্রাকৃতিক কারণে ফলন বিপর্যয়ও ঘটেনি, যাতে সরবরাহে ঘাটতির কারণে দাম বেড়ে যেতে পারে। বরং আমরা দেখছি, শাক-সবজি উৎপাদক পর্যায় থেকে ভোক্তার নাগাল পর্যন্ত যে ধাপগুলো পেরিয়ে আসে, তাতে ফুলেফেঁপে উঠছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। এর ফলে একদিকে উৎপাদক শ্রেণি নায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে ভোক্তার ক্রয়সাধ্যের বাইরে থেকে যাচ্ছে শাক-সবজি। ১০ জানুয়ারি প্রতিদিনের বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ফের এ সাক্ষ্যই দিয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে জানা যায়, শুধু শাক-সবজিই নয়; বয়লার মুরগি, ছোলা, ডিম এবং আরও কিছু নিত্যপণ্যের দাম আরেক দফা বেড়েছে। আমরা জানি, পবিত্র রমজানে সাধারণত ছোলার চাহিদা তুলনামূলক বেশি বাড়ে। কিন্তু গড় হিসাবে রমজান এখনও প্রায় দুই মাস বাকি। প্রতিদিনের বাংলাদেশে ওই প্রতিবেদন অনুসারে ছোলা আমদানি ও মজুদের যে চিত্র উঠে এসেছে, তাতে কোনোভাবেই চাহিদা ও সরবরাহজনিত কোনো সংকট না থাকলেও ছোলার দাম নিয়ে কারসাজির হোতা কারা- এও অনুমান করা কঠিন নয়। শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কমে না এবং বিস্ময়কর বিষয় হলো- আলু এত আমদানির পরও ভর মৌসুমে এর দাম আকাশছোঁয়া। শিম, ফুলকপি-বাঁধাকপিসহ শীতের যেকোনো সবজির দাম অতীতের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। আমরা এর আগেও বলেছি, অতি মুনাফালোভী ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজিতে সবজির বাজারে ফের যে ঊর্ধ্বমুখী তাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে, এর যৌক্তিক কারণ নেই। কিন্তু লাগাতার এমন অন্যায়ের পরও যে এর কোনো প্রতিবিধান হয় না- সেটাই হলো সবচেয়ে বড় বিস্ময়। আমরা মনে করি, জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতার পাট চুকে গেলে যা হয় বা হতে পারে- তা-ই হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বাজারে এরকম তুঘলকি কাণ্ড চলতে থাকবে আর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল মহলগুলোর ব্যর্থতাও সমান্তরালে দৃশ্যমান হবে- তা তো হতে পারে না। হাতবদল হলেই সবজির দাম কীভাবে কয়েকগুণ বেড়ে যায় এবং উৎপাদক শ্রেণি মধ্যস্বত্বভোগীর কারসাজির কারণে কীভাবে বঞ্চিত হয় নায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকে- এও ইতোমধ্যে বহুবার সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। বাজার বিশ্লেষকরা তো বটেই, বাজারসংশ্লিষ্ট সরকারের দায়িত্বশীল মহলগুলোর তরফেও দামের এই কারসাজির কারণগুলো স্পষ্ট করে দেওয়া সত্ত্বেও অসাধু কিংবা সিন্ডিকেটের হোতাদের নাটাই ঘোরানোর হাত গোটানো যায়নি! ভোক্তা ও উৎপাদকÑ এই দুই শ্রেণির মধ্যখানে ‘মূল্যসন্ত্রাসী’দের অতিমুনাফার লোভ প্রমাণ করে- বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রকৃতপক্ষে কথা হয় যত, কাজ হয় না এর কিয়দংশও। এবার শীতকালে মৌসুমি সবজির ফলন বিগত কয়েক বছরের মধ্যে তুলনামূলক ভালো- এই বার্তাও মিলেছে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেই। কিন্তু তারপরও শাক-সবজির দামের তাপ প্রশ্নের পৃষ্ঠে প্রশ্নই দাঁড় করায়।

ভোক্তার স্বার্থ দেখুন সর্বাগ্রে- এ কথাও আমরা এই সম্পাদকীয় স্তম্ভেই ইতঃপূর্বে বলেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, ভোক্তার স্বার্থ মূলত থেকে যাচ্ছে আলোচনা-পর্যালোচনাতেই। আমরা জানি, প্রান্তিক চাষি কিংবা ক্ষুদ্র খামারিদের সামনে ব্যাংকের ঋণপ্রাপ্তি থেকে শুরু করে কৃষি কিংবা মৎস্য ও পশুসম্পদ বিভাগের তরফে কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা না পেলেও তারা নানাভাবে উৎপাদন ব্যবস্থার পথ মসৃণ রাখার প্রাণান্ত চেষ্টা করেন তাদের সামনের পথ অমসৃণ হওয়া সত্ত্বেও। আমরা মনে করি, বাজারে সুশাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি উৎপাদক ও ভোক্তার স্বার্থরক্ষায় বহুমুখী কর্মপরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। বারবার আমরা বাজারে তদারকি-নজরদারি বাড়ানোর তাগিদও দিয়ে আসছি। তবে আমরা এও মনে করি, অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির যে ব্যাধি বাজারে গাঢ় ছায়া ফেলেছে, তা কোনোভাবেই ‘টোটকা দাওয়াই’য়ে সমাধান মিলবে না। এর জন্য প্রয়োজন আইনানুগ যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা