× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পরিপ্রেক্ষিত

প্রতিবন্ধীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের অধিকার

সাবরিনা সুলতানা

প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:২৬ এএম

প্রতিবন্ধীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের অধিকার

নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশকে অনেকেই মডেল বলছেন। কিন্তু সেখানেও প্রতিবন্ধী নারী উপেক্ষিত। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই দেখছি, সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে নারীর ক্ষমতায়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এ সুফলের ভাগ প্রতিবন্ধী নারীর কাছে পৌঁছাচ্ছে না কেন? প্রতিবন্ধী নারী কি তবে নারীর মধ্যে পড়ে না? প্রতিবন্ধী বিষয়ক নীতিনির্ধারকরাও কেন বেমালুম তাদের ভুলে যান? রাষ্ট্রের কাছে প্রতিবন্ধীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ কিংবা জাতীয় সংসদে সদস্য পদে তাদের মনোনয়ন দেওয়া ও এ অধিকার নিশ্চিতের দাবি দীর্ঘদিনের।

প্রথম এ দাবি বাস্তবায়নের পথ খোলে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ বাস্তবায়নকল্পে করা জাতীয় কর্মপরিকল্পনা-২০১৩-এর মাধ্যমে। সেখানে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন অংশে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের মধ্যে সংসদে ন্যূনতম দুটি আসন প্রতিবন্ধী নারীর জন্য বরাদ্দের আশ্বাস ছিল। কিন্তু এক যুগ পেরিয়ে গেলেও নীতিমালায় দেওয়া ওই আশ্বাস ছাড়া লক্ষ্যপূরণে কোনো অগ্রগতিই হয়নি। দেড় দশক এক মতাদর্শের সরকারই ক্ষমতায় আছে। এমন না যে এক সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, অন্য সরকার এসে চোখ বুজে । প্রতিবন্ধীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়টি সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। কেবল একের পর এক আইনি নীতিমালাই হচ্ছে, কিন্তু কাজির গরু শেষ পর্যন্ত কেতাবেই থাকছে। কেবল কি দেশের ভেতরকার জাতীয় নীতিমালা, প্রতিবন্ধীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারও রয়েছে। বিশেষভাবে বলা যেতে পারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অধিকার সনদ সিআরপিডির কথা। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজিতেও প্রতিবন্ধীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা-২০১১-এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে হওয়া জাতীয় নারী কর্মপরিকল্পনায় জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের ন্যূনতম দুটি আসন (ধারা-৩২.৭) প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য বরাদ্দের লক্ষ্যে কার্যক্রম সমন্বয় করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, জাতীয় সংসদ, নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে। কিন্তু কাউকেই এ-সংক্রান্ত কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। এ কর্মপরিকল্পনার সব সিদ্ধান্ত গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছেÑএ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে কি শুধুই দালিলিক করে রেখে দেওয়ার জন্য? ক্যাবিনেটে অনুমোদন দেওয়ার এক যুগের বেশি পেরিয়ে গেলেও আজও কেন এটি কার্যকর হলো না? জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন আইন-২০০৪-এর সর্বশেষ সংশোধিত গেজেট প্রকাশিত হয় ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩। এতেও প্রতিবন্ধী নারীদের প্রসঙ্গ আমলে নেওয়া হয়নি। বর্তমান বা আগের সংসদে বিভিন্ন সম্প্রদায়, জাতিসত্তা, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সংরক্ষিত আসন দেওয়ার প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার প্রবণতা দেখা গেছে। কিন্তু প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অথবা প্রতিবন্ধী নারীর প্রতিনিধিত্ব বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ১৫ ভাগ প্রতিবন্ধী। সে ক্ষেত্রে এ দেশে প্রায় ২ কোটি প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছে। যার অর্ধেকই নারী। অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি প্রতিবন্ধী নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার বিষয়টি কেন গুরুত্ব পাচ্ছে না? আমরা প্রতিনিয়ত বৈচিত্র্যময় সমাজকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলি। কিন্তু মানববৈচিত্র্যের অংশ প্রতিবন্ধী মানুষকে কেন মনে রাখি না? জাতীয় সংসদের আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকরা বিষয়টি কবে কার্যকর করবেন?

প্রতিবন্ধী নারীর জন্য সংরক্ষিত দুটি আসন থাকার প্রসঙ্গে ক্যাবিনেট থেকে একটি নয়, দুটি গেজেটেড নীতিমালা প্রকাশিত হয়েছে। এত বড় দুটি শক্তিশালী হাতিয়ার থাকার পরও প্রতিবন্ধী নারী নেতৃবৃন্দকেও এ বিষয়ে সোচ্চার হতে দেখা যাচ্ছে না। বর্তমানে রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সদস্যের অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোটাধিকার প্রসঙ্গে প্রতিবন্ধীরা  সচেতন হচ্ছেন। সুতরাং স্থানীয় থেকে জাতীয় সংসদ সব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের চর্চা, প্রতিনিধিত্ব, নেতৃত্বসহ সর্বস্তরের কমিটিতে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রতিবন্ধী নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হোক। রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বোচ্চ কাঠামোয় অর্থাৎ জাতীয় সংসদে প্রতিবন্ধী নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

  • প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের কর্মী
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা