× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জ্ঞানসাধক আহমদ শরীফ

শারমীম ইসলাম

প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:২২ পিএম

জ্ঞানসাধক আহমদ শরীফ

আহমদ শরীফের জন্ম ১৯২১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার সুচক্রদণ্ডীতে। বাবা আবদুল আজিজ ও মা মিরাজ খাতুন। বাবার হাত ধরে পরিবারে শিক্ষার আলো ঢুকেছিল উনিশ শতকেই। চট্টগ্রামে মুসলমানদের মধ্যে প্রথম এন্ট্রান্স পাস করা এবং বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ ছিলেন তার চাচা ও পিতৃপ্রতিম। জন্মের পর আহমদ শরীফ তার এ চাচা ও চাচির কাছে পুত্রস্নেহে লালিতপালিত হন। আহমদ শরীফ ১৯৩৮ সালে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৪০ সালে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৪২ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে স্নাতক পাসের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিভাগে চতুর্থ স্থান অধিকার করে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৭ সালে ‘সৈয়দ সুলতান, তাঁর গ্রন্থাবলি ও তাঁর যুগ’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য লাভ করেন পিএইচডি ডিগ্রি।

আহমদ শরীফ

আহমদ শরীফ ২৫০ টাকা বেতনে যোগ দেন গ্রিভেনসিভ অফিসার হিসেবে দুর্নীতি দমন বিভাগে। কিন্তু বেশিদিন এখানে থিতু হননি। মাত্র এক বছরের মাথায় শিক্ষকতা পেশায় চলে আসেন। যোগ দেন লাকসামের পশ্চিমগাঁও নওয়াব ফয়জুন্নেসা কলেজে। এরপর ফেনী ডিগ্রি কলেজে কিছুদিন। ১৯৫০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর কিছুদিন বাংলা বিভাগের অস্থায়ী লেকচারার এবং ১৯৫৭ সালে লেকচারার হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে বাংলা বিভাগের প্রধান হন এবং ১৯৮৩ সালের ৩১ অক্টোবর অবসর গ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ-১৯৭৩ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নেরও তিনি অন্যতম রূপকার।

আহমদ শরীফ চিন্তা-চেতনায় প্রগতি ধারণ করেছেন। দ্রোহ ও প্রতিবাদকে জীবন-চেতনার অংশ হিসেবে গ্রহণ করেন। মৌলবাদ ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধেও ছিলেন সোচ্চার। আহমদ শরীফের গবেষণার ক্ষেত্র বিস্তৃত। তার রচিত বই শতাধিক। এর রয়েছে বিচিত্র চিন্তা, স্বদেশ চিন্তা, কালিক ভাবনা, যুগ-যন্ত্রণা, বিশ শতকের বাঙালি, স্বদেশ অন্বেষা, মধ্যযুগের সাহিত্য সমাজ ও সংস্কৃতির রূপ, বাংলার সুফি সাহিত্য, বাঙালির চিন্তা-চেতনার বিবর্তন ধারা, বাংলার বিপ্লবী পটভূমি, এ শতকে আমাদের জীবনধারার রূপরেখা, প্রত্যয় ও প্রত্যাশা ইত্যাদি। আহমদ শরীফ গত শতকের পঞ্চাশ থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত সমাজ ও রাষ্ট্রের সব বিষয়ে, যা তাকে পীড়া দিয়েছে, যা দেখে তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন, যেখানে চিন্তার বারুদ উস্কে দেওয়া প্রয়োজন তার সব দিকেই নজর দিয়েছেন। সেসব বিষয় নিয়ে অজস্র প্রবন্ধ লিখেছেন। প্রগতিশীল ও মুক্তবুদ্ধির ধারক হিসেবে তিনি অগ্রসর পাঠকের কাছে আজও অনন্য। ১৯৯৫ সালে একটি উইলে মরণোত্তর চক্ষু ও দেহ দান করার কথা লেখেন, ‘চক্ষু শ্রেষ্ঠ প্রত্যঙ্গ, আর রক্ত হচ্ছে প্রাণ প্রতীক, কাজেই গোটা অঙ্গ কবরের কীটের খাদ্য হওয়ার চেয়ে মানুষের কাজে লাগাই তো বাঞ্ছনীয়।’ ১৯৯৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। উইল অনুযায়ী মৃত্যুর পর তার মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার উপকরণ হিসেবে ব্যবহারের জন্য দান করে দেওয়া হয়। এ জ্ঞানসাধকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা।

  • শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা