× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

বাজারে কারসাজি বন্ধের বিকল্প নেই

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪ ০৯:২৭ এএম

বাজারে কারসাজি বন্ধের বিকল্প নেই

একদিকে মূল্যস্ফীতির অভিঘাত অন্যদিকে খাদ্যপণ্যে ভেজালের ছড়াছড়ি- এ দুই-ই স্বাভাবিক-সুস্থ জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে অন্তরায়। বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন কিছু নয়। মুজদদারি কিংবা সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোক্তার পকেট কেটে নিজেদের পকেট স্ফীত করার অপতৎপরতার চিত্র ইতোমধ্যে সংবাদমাধ্যমে কম উঠে আসেনি। ৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে জেলা প্রশাসকদের চার দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা প্রশাসকদের মুজদদারি কিংবা সরবরাহ ব্যবস্থার বিঘ্ন করে রমজান মাসে বাজারে কোনো মহল অস্থিরতা সৃষ্টি করলে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। বাজার তদারকি নিয়মিত চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অতিমুনাফালোভী সিন্ডিকেটের হোতাদের প্রতি কোনোরকম অনুকম্পা না দেখানোর কথাও তিনি জেলা প্রশাসকদের বলেন। জেলা প্রশাসকরা বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন। বিদ্যমান বাজার পরিস্থিতি এবং পবিত্র রমজান সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী নির্দেশনার জন্য আমরা সাধুবাদ জানাই।

নিরাপদ খাদ্যপণ্য নিশ্চিত করা এবং সিন্ডিকেটের হোতাদের কঠোর নির্দেশ সত্ত্বেও বাজারকে অস্থিতিশীল করার পেছনের কারণগুলো অচিহ্নিত নয়। ইতোপূর্বে আমরা এই সম্পাদকীয় স্তম্ভেই বলেছি, মূল্যস্ফীতির অভিঘাত এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধে বাজার ব্যবস্থাপনায় মনোযোগ বাড়াতে হবে। আমরা জানি, রমজানে কিছু নিত্যপণ্যের চাহিদা স্বাভাবিক কারণেই বাড়ে এবং ভোক্তার চাহিদাকে পুঁজি করে নিয়মনীতির প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে অতিমুনাফালোভীরা রমজানের আগেই নানারকম অপকৌশলের ছক কষতে থাকে। রমজানে যাতে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের কোনো সংকট সৃষ্টি না হয়, এজন্য সরকার আগে থেকেই কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে, সরকারের উদ্যোগ নসাৎ করে দিতে অসাধুরা তাদের কারসাজির ধরনও পাল্টে ফেলে। পরিবহন ব্যবস্থায় জিইয়ে থাকা বিশৃঙ্খলা এবং বাজারে চাঁদাবাজিসহ নানারকম অপতৎপরতাও মূল্যস্ফীতির অনুঘটক। অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতির হ্রাস টানতে হলে বাজারে নিয়মিত তদারকি-নজরদারির যেমন বিকল্প নেই, তেমনি চাহিদার নিরিখে সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

৪ মার্চ প্রতিদিনের বাংলাদেশেই প্রকাশিত ভিন্ন একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে রমজানের আগে বাজার ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ায় অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমরা জানি, বিদ্যমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে মানুষ চাহিদায় কাটছাঁট করে জীবনযাপন করছে। রমজানের মর্মবাণী ও সংযম চর্চা যদি যথাযথভাবে স্বার্থান্বেষী ব্যবসায়ীদের কাছে অনুসৃত হতো তাহলে কোনোভাবেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। মজুদদারি কিংবা সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটানোর দায় সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কোনো পক্ষই এড়াতে পারে না। আমাদের স্মরণে আছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উত্তর সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল পক্ষগুলোকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমরা মনে করি, সরকারের নির্বাহী প্রধান প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুপুঙ্খভাবে প্রতিপালনের দায় এবং দায়িত্ব মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সংস্থার কর্তব্য। আমরা জানি, সাধারণত চাহিদার তুলনায় সরবরাহ হ্রাস পেলে কিংবা উৎপাদনব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটলে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে এবং তা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু মুক্তবাজারে যখন যেকোনো পণ্য সহজেই আমদানি করা যায় এবং আমাদিনকৃত অনেক পণ্যের ক্ষেত্রেই সরকার বিশেষ শুল্ক সুবিধা দিয়েছে একই সঙ্গে চাহিদার নিরিখে মজুদও পর্যাপ্ত এমন প্রেক্ষাপটে কোনোভাবেই বাজারে অস্থিতিশীলতা জিইয়ে থাকার কারণ নেই।

জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য নিরাপদ খাদ্যপণ্য জরুরি। এই লক্ষ্যে সরকার আইন প্রণয়নসহ আনুষঙ্গিক কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার পরও খাদ্যে ভেজালের মতো অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ড থেমে নেই। সুস্বাস্থ্যের জন্য খাদ্যের প্রাপ্যতা, অভিগম্যতা নিশ্চিতকরণসহ যেকোনো পদক্ষেপ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে যদি নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্যপণ্য সবার জন্য নিশ্চিত করা না যায়। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাজারে অসাধুদের কারসাজি বন্ধ ও নিরাপদ খাদ্যপণ্য নিশ্চিত করার জন্য সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থা রয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করব, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে দায়িত্বপালনে নিষ্ঠার পরিচয় দিতে সক্ষম হবে। একই সঙ্গে রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং সব পক্ষের জবাবদিহি নিশ্চিত করাও সমভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। এর কোনো বিকল্প নেই। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা