× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মরিচে এবার দ্বিগুণ লাভ, খুশি ঠাকুরগাঁওয়ের চাষি

রহিম শুভ, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৩ ১১:৩৪ এএম

আপডেট : ২৭ মে ২০২৩ ১১:৩৫ এএম

ঠাকুরগাঁওয়ে গম, আলু, ভুট্টার আবাদ বেশি হলেও ভালো উৎপাদন ও দাম পাওয়ায় বর্তমানে বেড়েছে মরিচের আবাদ। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ঠাকুরগাঁওয়ে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার হাটবাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে কাঁচা ও পাকা মরিচ। জেলার ভাউলার হাট, রুহিয়া, শীবগঞ্জ, মাদারগঞ্জ, গড়েয়া, লাহিড়ি হাটে চলে শুকনো মরিচ কেনাবেচা। 

জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে রুহিয়া থানা পর্যন্ত রেললাইন এখন যেন কৃষকদের মরিচ শুকানোর চাতাল। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার চাষিরা এখানে আসছেন মরিচ শুকাতে।

সম্প্রতি কথা হয় সদর উপজেলার রুহিয়া সেনিহারি এলাকার চাষি আবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এইবার মরিচে ৩ গুণ লাভ হুবে। গতবার লস হইছিল। মোর এক একর জমিত মরিচ গাড়াসহ সব মিলে খরচ হইছে ৭০ হাজার টাকা। এক একর জমিত মোর মরিচ হুবে ২০ মণ। ২০ মণ মরিচের দাম প্রায় আড়াই লাখ টাকা। মুই এবার অনেক খুশি।’

আগাম আলু চাষ করেছিলেন বালিয়াডাঙ্গীর চাড়োল ইউনিয়নের কৃষক সুলতান আলী। তিনি বলেন, ‘মোর মাটি এক বিঘা। আগাম আলুত মোর লস হইছে। পরে চিন্তা করে মরিচ লাগাইছু। পাছুরি হইলেও মোর মরিচ খুব ভালো হইছে। এইবার ঝড়-বাতাস তেমন হয়নি। মরিচ শুকাছু। কিছু মরিচ বিক্রি করিছু ১৪ হাজার টাকা মণ। আশা করছু আলুর লসসহ মরিচ অনেক টাকা লাভ দিবে।’

বিন্দু মরিচ চাষ করেছেন সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের কৃষক শাহিনুর ইসলাম। তিনি তার দুই বিঘা জমি থেকে ৩ লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। রুহিয়া খালপাড়া এলাকার কৃষক মসলিম উদ্দিনও বললেন তার খুশির কথা। 

তিনি জানান, এবার ঝড়বৃষ্টি হয়নি। তাই মরিচের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে মরিচের সাইজ একটু ছোট। পৌষ মাসে চারা রোপণ করার পর থেকে উৎপাদন পর্যন্ত প্রায় ছয় মাস সময়ের প্রয়োজন হয়। বিন্দু, সেকা, মাশকারা, মল্লিকাসহ বিভিন্ন জাতের মরিচ চাষ হয় এ এলাকায়। পীরগঞ্জ থেকে রুহিয়া পর্যন্ত প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ রেললাইনে মরিচ শুকায়। মসলিম উদ্দিন তার দুই বিঘা জমিতে ১ লাখ টাকা খরচ করে প্রায় ২ লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

ভাউলার হাটের মরিচ ব্যবসায়ী কুদরত আলী বলেন, সকাল ৫টা থেকে এই বাজারে মরিচ কেনাবেচা শুরু হয়। বিভিন্ন মরিচ বিভিন্ন দামে বিক্রি হয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা এখানে এসে মরিচ কিনে নিয়ে যান। সব থেকে বিন্দু, মাশকারা ও সেকা মরিচের দাম বেশি। ভাউলার হাটে প্রতিদিন প্রায় ৬০ লাখ টাকার মরিচ কেনাবেচা হয় বলে তিনি জানান। 

ঢাকা থেকে রুহিয়ায় মরিচ কিনতে আসা ব্যবসায়ী রেজাউল করিম বলেন, প্রতিবছর আসি ঠাকুরগাঁওয়ের মরিচ কিনতে। কিনে ঢাকায় নিয়ে যাই। তবে গত কয়েকবারের থেকে এবার মরিচের দাম অনেক বেশি। গাড়িভাড়াও ডাবল।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল আজিজ বলেন, এবার ঠাকুরগাঁও জেলায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় কৃষকদের সঠিক পরামর্শ প্রদান করেছেন এবং মাঠপর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন। গতবারের তুলনায় এইবার মরিচের দাম তুলনামূলক ভালো। কৃষকেরা বেশ লাভবান হচ্ছে। 

চলতি মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে, যা থেকে প্রায় ১৬৬ কোটি টাকার শুকনা মরিচ উৎপাদিত হবে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

পীরগঞ্জ থেকে রুহিয়া পর্যন্ত রেললাইন এখন যেন কৃষকদের মরিচ শুকানোর চাতাল। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার চাষি এখানে আসছেন মরিচ শুকাতে। শুক্রবার তোলা। প্রবা ফটো

পীরগঞ্জ থেকে রুহিয়া পর্যন্ত রেললাইন এখন যেন কৃষকদের মরিচ শুকানোর চাতাল। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার চাষি এখানে আসছেন মরিচ শুকাতে। শুক্রবার তোলা। প্রবা ফটো

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা