বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩ ১৬:০০ পিএম
বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদ মিছিল ঘিরে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই শতাধিক সদস্য। প্রবা ফটো
পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তার অনুসারীরা।
সেই মিছিল ঘিরে ছিল পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত দুইশ সদস্য মোতায়েন ছিল বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশি পাহারায় পৌরশহরে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন সাত শতাধিক মোতালেব অনুসারী।
মিছিলটি পৌরশহরের কাগুজিরপুল এলাকা থেকে শুরু হয়ে হয়ে পাবলিক মাঠ সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানা সংলগ্ন ইলিশ চত্বরে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
প্রতিবাদ সমাবেশে উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করা হয়।
সমাবেশে বক্তব্য দেন মোতালেব হাওলাদারের ভাগ্নে মো. সাহবুদ্দিন, উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে ও বগা ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান, কৃষকলীগ নেতা রেজাউল করিম পল্টু ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
এদিকে, একই দিনে বিএনপির জ্বালাও পোড়াও অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে শান্তি সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিল কর্মসূচির ডাক দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ। সংঘাত এড়াতে জেলা প্রশসান এ দিনের শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি একদিন পিছিয়ে দেয়।
আগামীকাল বুধবার উপজেলা ও সব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ওই শান্তি সমাবেশ করবে।
গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আওয়ামী লীগের বিবাদমান তিনপক্ষ পৃথক পৃথক শোভাযাত্রার ঘোষণা দেয়। উপজেলা প্রশাসন তিনপক্ষকে ভিন্ন ভিন্ন সময় বেঁধে দেয়।
বেলা ১১টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের শোভাযাত্রা হাইস্কুল মাঠ থেকে শুরু করেন। সেটি উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও উপজেলা চেয়ারম্যান অপর পক্ষের কর্মসূচিস্থল জনতা ভবনে যেতে চান।
এ সময় দুপক্ষের সংঘাত এড়াতে ইউএনও ও ওসিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপজেলা চেয়ারম্যানের শোভাযাত্রা উপজেলা গেটের সামনে আটকে দেয়। এর পরই শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে ওসিসহ ৮ পুলিশ সদস্য আহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও পরে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। আহত হয় মোতালেবসহ তার অনুসারীরা।
ধারালো অস্ত্রের কোপে উপজেলা চেয়ারম্যানের হাতপা জখম হয়। উপজেলা চেয়ারম্যানকে আহত অবস্থায় প্রথমে বাউফল হাসপাতালে পরে বরিশাল পাঠানো হয়।
পরিস্থিতি শান্ত হলে ১১টার ৪০ মিনিটের সরকারি কলেজ মাঠ থেকে জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েলের নেতৃত্বে পৃথক আরেকটি শোভাযাত্রা উপজেলা পরিষদ চত্বরে আসে।
পরিষদ চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে আবার কলেজ মাঠে গিয়ে শেষ হয়। বেলা ১২টার কিছু সময় পর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবন থেকে আ স ম ফিরোজ এমপির নেতৃত্বে শোভাযাত্রা বের হয়। সেটি শেষ হয় পাবলিক মাঠে গিয়ে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ৩০০ জনকে আসামি করে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করে। তবে এখন পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়নি।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত রাখতে র্যাব পুলিশসহ প্রায় ২০০ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মাঠে কাজ করছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’