× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অনৈক্যে আটকা যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা

বাছির জামাল

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১১:০২ এএম

আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১১:০৫ এএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নাকি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে? সংবিধান সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের কাজ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার করবে নাকি জাতীয় সরকার করবে? এমন সব বিষয়ের সুরাহা না হওয়ায় আটকে আছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের সাত দফার যৌথ রূপরেখা ঘোষণা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে এসব আলোচনার পর যুগপৎ আন্দোলনের অন্য শরিকদের সম্মতি নিয়ে এ রূপরেখা প্রকাশ করার কথা ছিল। কিন্তু শরিকদের আপত্তির মুখে এ রূপরেখা প্রকাশ করা হয়নি। এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে এ নিয়ে আগামীকাল রবিবার (২ এপ্রিল) বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক বসছে। বৈঠকে থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, তিনি আশা করছেন বৈঠকের পর ‘যৌথ রূপরেখা’ ঘোষণার দিনক্ষণ বলা যাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন এ নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ শুরু করি, প্রথমে ফেব্রুয়ারিতে এবং পরে মার্চে এটি চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বিএনপির হয়ে যিনি লিয়াজোঁ করতেন, সেই ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে এ প্রক্রিয়া অনেকাংশে বিলম্বিত হয়েছে।’

এ ব্যাপারে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জানান, আগামী ৬ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে চিকিৎসকের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট রয়েছে। তার পর তিনি দেশে ফিরতে পারবেন। 

যুগপৎ আন্দোলনে দলগুলোর মধ্যে বিএনপির ১০ দফা ও রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফা, গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা ও গণফোরামের ৫ দফা রয়েছে। বাকি ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি এবং বাম গণতান্ত্রিক ঐক্যজোটের আলাদা কোনো দাবিনামা নেই। এসব দলের নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপি তাদের মতামতের ভিত্তিতেই ১০ দফা দাবি তৈরি করেছে। ১০ দফাই তাদের সংগঠনের দফা। 

গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ১০ দফার ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। ১০ দফা দাবির মধ্যে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়াও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালাকানুন বাতিল এবং খালেদা জিয়াসহ দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তির বিষয়টি রয়েছে। পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের সার্বিক সংস্কারে ১৯ ডিসেম্বর রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করে দলটি।

ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে কী কী করতে চায়, ওই রূপরেখার মধ্যে সেটা স্পষ্ট করেছে বিএনপি। এ ছাড়া বিএনপির ১০ দফার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ১২ ডিসেম্বর যুগপৎ আন্দোলনের ১৪ দফা ঘোষণা করে গণতন্ত্র মঞ্চ। সেখানে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, সংবিধানের ৭০তম অনুচ্ছেদের সংশোধন করে সরকার গঠনে আস্থা ভোট ও বাজেট পাস ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা রাখাসহ বেশকিছু দাবি রয়েছে।

ভিন্ন মতাদর্শভিত্তিক পৃথক দফার ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলন পরিচালিত হওয়ায় শরিকদের মধ্যে ‘প্রকৃত’ ঐক্য নিয়ে মানুষের মধ্যে এক ধরনের সন্দেহ সৃষ্টি হতে পারে; এমন আশঙ্কা থেকে আন্দোলনের একটি অভিন্ন দফার ভিত্তিতে যৌথ রূপরেখা তৈরি করার উদ্যোগ নেয় বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ। তারা বিএনপির পক্ষে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবং গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষে অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম ও জোনায়েদ সাকিকে নিয়ে একটি ড্রাফট কমিটি গত জানুয়ারি মাসে গঠন করে। এ কমিটি তিন-চারটি বৈঠক করে সাত দফার একটি যৌথ রূপরেখা তৈরি করে। 

তারা একাধিক বৈঠক করে অভিন্ন রূপরেখার ৭ দফা খসড়া প্রণয়ন করেন। এরপর প্রয়োজনীয় মতামত নিতে গণতন্ত্র মঞ্চের কাছে তা হস্তান্তর করে বিএনপি। গণতন্ত্র মঞ্চ ওই খসড়ার রূপরেখার সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করে। এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে যৌথ ঘোষণার সাত দফা খসড়া রূপরেখা হস্তান্তর করে গণতন্ত্র মঞ্চ। 

একটি সূত্র জানায়, সাত দফার অভিন্ন যৌথ রূপরেখা তৈরি হলেও এখনও মূল কয়েকটি বিষয় নিয়ে দুপক্ষ একমত হতে পারেনি। বিএনপির অবস্থান হচ্ছে- নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হবে। এরপর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর প্রতিনিধি নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে। এই জাতীয় সরকার কী করবে তার জন্যও ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেছে দলটি। কিন্তু গণতন্ত্র মঞ্চের কথা হচ্ছে- অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন করবে এবং সংবিধান সংস্কারে বাধ্য করবে।

সূত্র জানায়, ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে বিএনপি বলেছে- এ নিয়ে কী করা হবে তা জাতীয় সরকার এসে সিদ্ধান্ত নেবে। গণতন্ত্র মঞ্চ বলছে, ৭০ অনুচ্ছেদে অনাস্থা ও বাজেট ছাড়া বাকি বিষয়গুলোর ব্যাপারে এখনই ঘোষণা দিতে হবে। পরে বিএনপি ৭০ অনুচ্ছেদে চারটি বিষয় নিয়ে আসে। সেগুলো হলো অনাস্থা, বাজেট, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সংবিধান সংশোধন। এ চারটি বিষয়ে দলের সিদ্ধান্তে ভোট হবে। বাকিগুলো সদস্যদের নিজস্ব মতে চলবে। এগুলো নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে। এগুলো তারা এখন স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে। 

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। সেখানে জোটের পক্ষ থেকে কয়েকজন নেতা ৭ দফা যৌথ রূপরেখার বিষয়টি উত্থাপন করে এ ব্যাপারে বিএনপির বক্তব্য জানতে চান। তখন বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি গণতন্ত্র মঞ্চের প্রস্তাব। বিএনপি এখনও তাতে সম্মত হয়নি। যখন বিষয়টি এগোবে তখন অন্যদের মতামতও নেওয়া হবে।

যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ রূপরেখা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের দফাগুলোর সমন্বয়ে যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। আমাদের লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান হলেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে বেশ কিছুদিন ধরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন। টুকু ভাইয়ের অনুপস্থিতির কারণে আমরা এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেতে পারছি না।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা