বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:২৯ পিএম
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:৫৫ পিএম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফাইল ফটো
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘শিশুর হাতে ১০ টাকা ঘুষ দিয়ে এ ধরনের কথা, পরে বললেন ভুল। উন্নত গণতান্ত্রিক বিশ্বের কোনো দেশে এই ধরনের চাইল্ড এক্সপ্লইটেশন (শোষণ) হলে সেই মিডিয়া বা গণমাধ্যমের লাইসেন্স বাতিল করা হতো। শেখ হাসিনা অনেক কিছু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছেন।’
রবিবার (২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেউ কেউ বলেন, ভুল তো অপরাধ নয়। ঠিক আছে ভুল অপরাধ নয়। অপরাধকে নিছক ভুল বলে কি এড়িয়ে যাওয়া যায়। এটা জঘন্যতম অপরাধ। এটা চাইল্ড এক্সপ্লইটেশন। এই ভুলের জন্য কেউ কি ক্ষমা চেয়েছে? অথচ ঔদ্ধত্যভাবে তারাই ঠিক, সেই অহংকারে বুঁদ হয়ে তারা তাদের বক্তব্যকে সমর্থন করে যাচ্ছে।’
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের বিবৃতি প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ’তারা বিবৃতি দিয়েছে, সাংবাদিককে ভয় দেখাতে সরকার এই কাজ করেছে, একটি পত্রিকার রিপোর্টারকে গ্রেপ্তার করেছে, তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলা সরকার করেনি, মামলা বেসরকারিভাবে হয়েছে। কিন্তু অপরাধের কি কোনো শাস্তি নেই? স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধের পাশে যারা একটা বাচ্চাকে ব্যবহার করে দিনমজুরের নামে একটা উদ্ধৃতি দিয়ে যে জঘন্য অপরাধ করেছে, এই জঘন্য অপরাধের শাস্তি তাদের পাওয়া উচিত। আমরা অনেক কিছু সহ্য করছি।’
দেশে স্বাধীনতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ’দেশে আইনের কোনো বাধা নেই। দিনভর অশ্রাব্য গালিগালাজ করা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তারপরও নাকি স্বাধীনতা নেই। প্রতিদিন কিছু পত্রিকার পাতা খুললেই সরকারবিরোধী সমালোচনা করে জঘন্য ভাষায় সরকারকে আক্রমণ করতে দেখা যায়। ব্লুমবার্গের মতো ইনফ্লুয়েন্সিয়াল চ্যানেল প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করছে। কিন্তু বাংলাদেশে এক শ্রেণির মিডিয়া তাকে প্রতিদিন আক্রমণ করে যাচ্ছে। অন্যান্য দেশ প্রশংসা করতে জানে, কিন্তু আমাদের দেশ প্রশংসা করতে জানে না।’
সাংবাদিকদের স্বাধীনতার জন্য আওয়ামী লীগই সব সময় কাজ করেছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ’আজকে বিএনপি সাংবাদিকদের স্বাধীনতার জন্য মায়াকান্না করে। অথচ এ দেশে অসংখ্য সাংবাদিক হত্যার হোতা হচ্ছে তারা। সংবাদপত্রের ৮ম ওয়েজ বোর্ডসহ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট; যা কিছু হয়েছে তা আওয়ামী লীগ সরকার করেছে। আমরা সাংবাদিকদের সুখে-দুঃখে আছি। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় আমরাও বিশ্বাসী। এই স্বাধীনতা আমরা ক্ষুণ্ণ করতে চাই না। কিন্তু সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল হতে হবে।’
জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টারমাইন্ড উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ বাংলার মাটিতে পলাশীর ষড়যন্ত্রের পুনরাবৃত্তি ঘটেছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে। পলাশীতে যেমন মীর জাফর, ইয়ার লতিফ বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, তেমনি ১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্রে খন্দকার মোশতাক ও সেনাপতি জিয়াউর রহমান সেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। নির্দ্বিধায় বলতে পারি, ১৫ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড হচ্ছেন জিয়াউর রহমান।’
আলোচনা সভায় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।