বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করতে সবই করছে সরকার : মির্জা ফখরুল

বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করতে সবকিছু করছে সরকার। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রবিবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক কর্মশালায় এ মন্তব্য করেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই) এ কর্মশালার আয়োজন করে। তাতে অংশ নেওয়া বিএনপির একাধিক নেতা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে কর্মশালায় আলোচনার বিষয়ে জানিয়েছেন।

তারা জানান, বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ডিআইর সহযোগিতা চেয়েছেন মির্জা ফখরুল। 

নেতৃত্ব উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক চর্চা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য নেতাকর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে গত বছরের আগস্টে বিএনপি ও ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের মধ্যে দুই বছরমেয়াদি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর আলোকে প্রশিক্ষণ, সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ বিষয়ে কৌশলগত ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণে একটি গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে এই কর্মশালাটি আয়োজন করে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল। 

দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সকালে উদ্বোধনী অধিবেশনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বিকালে সমাপনী অধিবেশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বক্তব্য দেন।

কর্মশালায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে যখন গণতন্ত্র থাকে না, তখন কোনো প্রশিক্ষণ, কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। বাংলাদেশে এখন কোনো গণতান্ত্রিক স্পেস নেই, আইনের শাসন নেই, রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই, জনগণের ভোটের অধিকার নেই। সেজন্য আমরা লড়াই-সংগ্রাম করছি।’

ডেমোক্রেটিস ইন্টারন্যাশনালের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা সারা বিশ্বে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য কাজ করছেন। এর অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোকে শক্তিশালী করতে প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেন। সেই প্রশিক্ষণের ফলে আমরা যা অর্জন করছি, সেটা ততক্ষণ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পারব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না দেশে গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক পরিবেশ থাকে। অর্জিত প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন করতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে, তাদের সমস্যা চিহ্নিত করে আমাদের বক্তব্যে, কর্মসূচিতে আনতে হবে। কিন্তু জনগণের কাছে যাওয়ার যে প্রক্রিয়া সেটাই এখানে অনুপস্থিত। সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হয় না, কর্মিসভা করতে দেওয়া হয় না, কর্মসূচি করতে গেলে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়। অর্থাৎ বিএনপিকে সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য যা যা করা দরকার, সরকার তার সবই করছে। তারপরেও আমরা চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকার জন্য, তাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সেটা আমরা করছি।’ 

কর্মশালায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আপনাদের থেকে অর্জিত প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন করতে হলে দেশে রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। এ জন্য সবার আগে প্রয়োজন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। আমাদের প্রত্যাশা, বাংলাদেশেও গণতন্ত্র নিয়ে আসার জন্য আপনারা কাজ করবেন।’

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরীন, কেন্দ্রীয় নেতা জহির উদ্দিন স্বপন, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন ও শহীদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি ডানা এম ওল্ডসসহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।