গ্রেনেড হামলা
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৫৯ পিএম
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৩ ১৬:১৪ পিএম
নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রবা ফটো
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনাকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জঘন্য হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে ওই ঘটনার বিচারপ্রক্রিয়াকে সাজানো নাটক বলে দাবি করেছেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব দাবি করেছেন, গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ও লুৎফুজ্জামান বাবরদের মতো নেতাদের জড়িয়ে রাজনৈতিক কারণে ফায়দা লুটে নেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব বলেন তিনি। আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে দলের অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে যৌথসভা শেষে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নজিরবিহীন গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই দিন প্রাণে বেঁচে গেলেও আক্রান্ত হন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের নেতাকর্মীরা মানববর্ম রচনা করে তাকে রক্ষা করেন। তবে প্রাণ হারিয়েছেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গুরুতর আহত হন শত-শত নেতাকর্মী। শরীরে স্প্লিন্টার নিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে এখনও সেই হামলার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকেই।
সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিচার কার্যক্রম তো শেষই করে ফেলেছে। কী বাকি আছে আর? ব্যাপার হচ্ছে, পুরো বিষয়টাই (বিচার প্রক্রিয়া) একেবারে সাজানো নাটক। যেখানে সমাবেশ (আওয়ামী লীগের) হওয়ার কথা ছিল, সেখানে না হয়ে অন্য জায়গায় চলে গেল তারা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়নি। তারেক রহমানের নাম এজাহারে ছিলই না। কখনই ছিল না। তিনবার এজাহার হয়েছে- একবারও তার নাম ছিল না। এরপর অবসরে যাওয়া ব্যক্তি আবদুল কাহ্হার আখন্দকে নিয়ে এসে পুনরায় চাকরি দিয়ে আইও করা হলো; যিনি অবসরের পর আওয়ামী লীগের নমিনেশন চেয়েছিলেন। সেই ভদ্রলোক তারেক রহমানের নাম দিলেন।’
তিনি বলেন, ‘পুরো তদন্তে কোথাও তারেক রহমানের নাম উচ্চারিত হয়নি। একমাত্র মুফতি আবদুল হান্নানকে দিয়ে উচ্চারণ করা হলো ১৪৫ দিন আটক রাখার পর, রিমান্ডে নেওয়ার পর। তিনি (মুফতি হান্নান) কিন্তু সেটাকে অস্বীকার করে হলফনামা দিয়েছিলেন। সেটা গ্রহণ করা হয়নি। যাতে তিনি (মুফতি হান্নান) আদালতে কিছু বলতে না পারেন, এজন্য তড়িঘড়ি করে অন্য একটি মামলায় তাকে ফাঁসি দিল। তাকে আদালতেই আসতে দিল না।’
বিএনপি মহাসচিব প্রশ্ন করেন, ‘এটাকে আমরা কী বলব? এটাই শুধু নয়, আমার কাছে অনেক রেকর্ড আছে– ইচ্ছাকৃত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তারেক রহমানের নাম এখানে দেওয়া হয়েছে। বিএনপি নেতাদের নাম দেওয়া হয়েছে। বিষয়টির পুরোপুরি সুষ্ঠু তদন্ত না করেই এ কাজটা করা হয়েছে। বারবার বলেছি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত হোক।’
তিনি বলেন, ‘একুশে আগস্টের ঘটনার আমরা নিন্দা জানাই। এটা অবশ্যই বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম জঘন্য ঘটনা, নিন্দনীয়। মানুষের যে প্রত্যাশা তা হচ্ছে, অযথা, শুধু রাজনৈতিক কারণে রাজনৈতিক নেতাদের নাম দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটে নেওয়া হচ্ছে। এটা কেউ সমর্থন করতে পারে না। আমরা আবারও বলছি, তারেক পিন্টু, বাবর, কেউ এটার সঙ্গে জড়িত ছিল না। রাজনৈতিক কারণে তাদের জড়িত করা হয়েছে।’