প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩ ১৭:১৯ পিএম
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৩ ১৮:০৬ পিএম
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ফটো
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বারবার বিএনপির ওপর আঘাত এসেছে। বহু ষড়যন্ত্র চলছে। দলকে ভেঙে ফেলা ও ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু বিএনপির অগ্রযাত্রা থামানো যায়নি। কারণ বিএনপি হলো স্রোতস্বিনী ও প্রবাহমান নদী। এখানে কেউ এসেছে কেউ চলে গেছে।
সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিরোধী দলের মাঠ শূন্য করতে আবার চক্রান্ত চলছে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যে ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন তাতে বিরোধী দল শূন্য নির্বাচন করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘একই কায়দায় গত পরশু দিন রাতে আমাদের দলীয় কার্যালয়ে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করেছে। অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করেছে। গত শনিবার হবিগঞ্জে সাবেক মেয়র জি কে গউছের বাড়িতে গুলি করেছে। তিন শতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল রবিবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেখানে দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও গুলি করেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন শুরু হয়েছে মেগাপ্রকল্প চালু করা। কার জন্য? কীসের জন্য? এগুলোর লক্ষ্য হলো তাদের পকেট ভরানো। এগুলো তো জনগণের করের টাকায়– সুতরাং এখানে তো বলার কিছু নেই আপনি উন্নয়ন করেছেন। জাতি এদের হাত থেকে মুক্তি চায়।’
‘শেখ হাসিনাকে দুর্বল করলে ক্ষতি সবার’– যুক্তরাষ্ট্রকে এমন একটি বার্তা ভারত সরকার দিয়েছে বলে দাবি করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এখনও রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হইনি। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করি। তাদের নিয়েই আমরা আছি। আজকে দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। সেই বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এ ধরনের কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেউ স্বীকার করেনি। ভারতেরও কেউ স্বীকার করেনি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫২ বছরে সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছি। এই সরকার দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা ধ্বংস করেছে। প্রশাসন বলুন আর কিছু বলুন সব কিছু ধ্বংস করেছে। একটি কোম্পানি ১১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। কারণ তাদের নিজেদের লক্ষ্য সেটা। আর আমরা ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার লড়াই করে যাচ্ছি। এখানে সবারই ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। তিনি যখন দেশের হাল ধরেছিলেন, তখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সকল দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। দেশ একটি দলের হাতে চলে গিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে স্বনির্ভর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার সহধর্মিণী খালেদা জিয়ার যোগ্য নেতৃত্বে বিএনপি এগিয়ে চলছে।’
আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল জানান, আগামী ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন ও সময়মতো আলোচনা সভা হবে। পোস্টার প্রকাশ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক মো. আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, মো. মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।