প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩ ১৮:৫৩ পিএম
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৩১ পিএম
সচিবালয়ে সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ড. হাছান মাহমুদ। প্রবা ফটো
রাজনীতির মাঠে যত দিন বিএনপি থাকবে, তত দিনে রাজনীতির মাঠ কলুষমুক্ত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি হত্যা-খুনের রাজনীতিতেই বিশ্বাস করে, খুনের রাজনীতি করে। খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে তারেক রহমান ২১ আগস্ট ঘটিয়েছে। আর ১৫ আগস্ট ঘটিয়েছে জিয়াউর রহমান। এরা যত দিন রাজনীতির মাঠে থাকবে রাজনীতির মাঠ কলুষমুক্ত হবে না, ঘৃণা ও সাংঘর্ষিক রাজনীতি কখনও যাবে না।’
সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১৯ বছর নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নজিরবিহীন গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই দিন প্রাণে বেঁচে গেলেও আক্রান্ত হন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের নেতাকর্মীরা মানববর্ম রচনা করে তাকে রক্ষা করেন। তবে প্রাণ হারিয়েছেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গুরুতর আহত হন শত শত নেতাকর্মী। শরীরে স্প্লিন্টার নিয়ে পঙ্গুত্ববরণ করে এখনও সেই হামলার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকেই।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে, আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিল। ঘটনার পূর্বাপর বিশ্লেষণে দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে তৎকালীন সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় বিএনপি ও জঙ্গি গোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সেখানে যে গ্রেনেড পাওয়া গিয়েছিল, সেগুলো সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করে। এই গ্রেনেড তো সন্ত্রাসীদের কাছে থাকার কথা না। এগুলো সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘একজন সেনা কর্মকর্তা আলামত হিসেবে একটি গ্রেনেড রেখে দিয়েছিল। সে কেন রেখে দিল, সেজন্য তাকে সেনাবাহিনী থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কারণ অন্য সব আলামত ধ্বংস করা হয়েছিল। হামলার স্থান পানি দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনা সেদিন আহত হলেও সৃষ্টিকর্তার কৃপায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। আমাদের নেতারা বঙ্গবন্ধুকন্যার চারপাশে মানবঢাল তৈরি করেছিল। আমাদের ২৪ জন নেতাকর্মী সেদিন নিহত হয়েছেন। পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সমগ্র পৃথিবী নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়েছে। কিন্তু সংসদে একটি শোক প্রস্তাব আনতে বা কোনো আলোচনাও করতে দেওয়া হয়নি, বরং হাস্যরস করা হয়েছে।’
দেশ-বিদেশের যেসব মানবাধিকারকর্মী বা সংগঠন ২১ অগাস্ট নিয়ে সরব নয়, তাদেরও সমালোচনা করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কিছু দেশ মানবাধিকারকে অস্ত্র হিসেবে নিয়েছে অন্য দেশকে ঘায়েল করার জন্য। যারা এগুলো করে তাদের দেশে যে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, সেটি নিয়ে তো কোনো কথা হয় না। যারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বা অগ্নিসন্ত্রাসের নিন্দা জানায় না, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক বিষয় আখ্যা দিয়ে কিছু বলতে চায় না, এরা আসলে মানবাধিকারকর্মী বা মানবাধিকার সংগঠন নয়, এরা মানবাধিকার নিয়ে ব্যবসা করে।’