× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আজ কাউন্সিল

তৃণমূল বিএনপি নিয়ে কী হচ্ছে

বাছির জামাল

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:০৪ এএম

আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:০৩ এএম

বিএনপির সাবেক নেতা প্রয়াত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় তৃণমূল বিএনপি। ফাইল ফটো

বিএনপির সাবেক নেতা প্রয়াত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় তৃণমূল বিএনপি। ফাইল ফটো

রাজনীতির মাঠে তৃণমূল বিএনপি কি আলাদা ও গুরুত্বপূর্ণ একটি দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে? এ দলটি সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় হয়ে উঠলে কি বিএনপির রাজনৈতিক গুরুত্ব ও শক্তি কমে আসবে? এ দলটির রাজনৈতিক তৎপরতার নেপথ্যে কি কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে? তৃণমূল বিএনপির প্রথম কাউন্সিল অধিবেশনকে সামনে রেখে এমনসব প্রশ্নকে গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই করে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যদিও এ প্রসঙ্গে বিশ্লেষকদের কেউই এখনও সরাসরি মুখ খুলছেন না।

বিএনপির সাবেক নেতা প্রয়াত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার প্রতিষ্ঠিত দল তৃণমূল বিএনপির প্রথম কাউন্সিল অধিবেশন হতে চলেছে আজ মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর)। ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ কাউন্সিল হবে। ইতোমধ্যে এ দলটিতে বেশ কয়েকজন সাবেক বিএনপি নেতা যোগ দিয়েছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে, আজ কাউন্সিলের দিনও বিএনপির আরও কয়েকজন সাবেক নেতা দলটিতে যোগ দিতে চলেছেন। পরেও যোগ দিতে পারেন আরও অনেকে।

তিন গুরুত্বপূর্ণ দলের অনেকেই যোগদানের ‘পাইপলাইনে’ 

বিএনপির সাবেক নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা প্রতিষ্ঠিত তৃণমূল বিএনপি নিবন্ধন পায় চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি। এরপরই দলটির পালে হাওয়া লাগে। নাজমুল হুদা মারা গেলে তার বড় কন্যা অন্তরা সেলিম হুদা হাল ধরেন দলের। গত ৬ মে রাজধানীর গুলশানে তৃণমূলের এক কার্যালয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় অন্তরা হুদাকে। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আয়োজিত প্রথম কাউন্সিল অধিবেশনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করা হবে। অধিবেশনের মধ্য দিয়ে বিএনপির সাবেক দুই নেতা শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকার তৃণমূলের শীর্ষ দুই পদে অধিষ্ঠিত হতে পারেন।

এ ব্যাপারে তৃণমূল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আক্কাছ আলী খান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, যোগ দেওয়ার পর ওই দুজন দলের দুই শীর্ষ পদে প্রার্থী হবেন। কাউন্সিলররা ঠিক করবেন দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব কারা হচ্ছেন।

তৃণমূলের নেতারা বলছেন, শুধু বিএনপি নয়, এর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির অনেকেও এ দলে যোগ দেওয়ার ‘পাইপলাইনে’ রয়েছেন। তবে আজই ঘটতে চলেছে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান। তাই সবাই তাকিয়ে আছেন আজকের কাউন্সিলের দিকে।

দৃশ্যত আগ্রহ দেখাচ্ছে না বিএনপি 

এদিকে দৃশ্যত এ দল নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বিএনপির নেতারা। এ নিয়ে তারা কোনো কথাও বলতে চাইছেন না। তৃণমূল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে তার কোনো ধারণা নেই।

তবে গুঞ্জন রয়েছে, বিএনপি থেকে বিভিন্ন সময় বাদ পড়া এবং ক্ষোভ-অভিমানে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া অনেক নেতাই এ দলে যোগ দিতে পারেন। এমনকি বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তারও রয়েছেন এই তালিকায়। এর আগে বর্তমান জাতীয় সংসদে তিনি বিএনপির এমপি ছিলেন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ডিসেম্বর বিএনপির এমপিরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। যাদের মধ্যে তিনিও ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপনির্বাচন করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন।

শোনা যাচ্ছে, বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলেরাও যোগ দিতে পারেন তৃণমূলে। তবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খোন্দকার দেলোয়ারের ছেলে ড. খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এ কথা মোটেও সত্য নয়। আমাদের প্রতিপক্ষ কেউ হয়তো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য এ ধরনের কথা ছড়াচ্ছে। কিন্তু আমাদের পরিবারের কেউ বিএনপি ছাড়া অন্য কোনো দলে যাবে না। আমৃত্যু আমরা এই দলেই আছি।

যেভাবে এগোচ্ছে তৃণমূল বিএনপি

বর্তমানে তৃণমূল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন মেজর (অব.) ডা. শেখ হাবিবুর রহমান। 

২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর তৃণমূল বিএনপি গঠন করেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। প্রসঙ্গত, বিএনপি থেকে পদত্যাগ করার পর ব্যারিস্টার হুদা পর্যায়ক্রমে আরও তিনটি দল গঠন করেন। ২০১২ সালে তিনি গঠন করেন নতুন দল ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট’ (বিএনএফ)। যদিও তাকেই বহিষ্কৃত হতে হয় এ দল থেকে। এরপর তিনি গঠন করেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (বিএনএ) ও বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি (বিএমএ) নামে দুটি দল। 

২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপি গঠন করে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন ব্যারিস্টার হুদা। কিন্তু তখন এ দলটি নিবন্ধন পায়নি। অনেকেই মনে করেন, বর্তমানে এ দলটিকে একটি বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা চলছে। যাতে বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি কোনো কারণে এবারও সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে তৃণমূল ভোটে দাঁড়াতে ইচ্ছুক অনেকের বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে।

জোটবদ্ধ হবে কি না ঠিক করেনি তৃণমূল

তৃণমূল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার অন্তরা সেলিমা হুদা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আমাদের দলের প্রথম কাউন্সিল। এ সময় শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকার আমাদের দলে যোগ দিচ্ছেন। তারা ভালো পদে থাকবেন।

বিএনপির বিকল্প দল হিসেবে কি তৃণমূল বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিস্টার অন্তরা বলেন, ‘বিএনপিকে ভাঙার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। বিএনপি তাদের রাজনীতি করবে। আমরা আমাদের রাজনীতি করব। তৃণমূল বিএনপি একটি নতুন রাজনৈতিক দল। আমরা একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গড়তে চাই। এক্ষেত্রে আমরা সবার সহযোগিতা চাই। তৃণমূল বিএনপির দরজা সবার জন্য খোলা।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো জোটে যাব কি না, সেটি এখনও ঠিক করিনি।’

অন্তরা সেলিম হুদা ২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে ঢাকা-১ আসনে বিএনপির কাছে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তার আরও একটি বোন রয়েছে। তার নাম শ্রাবন্তী আমিনা হুদা।

তৃণমূলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আক্বাছ আলী জানান, তৃণমূলের কমিটি রয়েছে ৬৪ জেলায়। আজকের কাউন্সিলে সারা দেশ থেকেই কাউন্সিলররা আসবেন।

যা বলছেন অ্যাডভোকেট তৈমূর

এদিকে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমার প্রতি বিএনপি অবিচার করেছে। যখন আমাকে বলা হয় বহিষ্কৃত নেতা, তখন ভীষণ কষ্ট পাই। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অপরাধে আমাকে বহিষ্কার করা হলো। অথচ তখন বিএনপি মহাসচিব বলেছিলেন, ‘দল থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না। ব্যক্তিগতভাবে কেউ স্বতন্ত্র নির্বাচন করলে এটা তার বিষয়।’ সে সময় বিএনপির অনেক নেতা আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন, আমি তাদের নাম বলতে চাই না। সেদিন আমাকে কোনোরকম আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেট তৈমূর বলেন, বিএনপি করতে গিয়ে গুলি খেয়েছি, বাড়িঘর হারিয়েছি, একাধিকবার জেল খেটেছি। এমনকি ১/১১-তে যখন তারেক রহমানকে আটক করা হলো, তখনই তার পক্ষে আইনি লড়াই শুরু করি। বহিষ্কার করা হলেও বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচিতে শত শত লোক নিয়ে আমি উপস্থিত থেকেছি। তারপরও একবারের জন্যও কেউ আমার খোঁজ নেননি। দল হয়তো আমার প্রয়োজন আছে বলে মনে করে না।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা