রাজধানীতে ১২ দলীয় জোটের বিক্ষোভ

যুগপৎ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বিএনপি ও বিভিন্ন জোট ও সমমনা দলের ঘোষিত সারা দেশে তিন দিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালনের দ্বিতীয় দিনে সারা দেশে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কি সংলগ্ন এলাকায় ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা মিছিল করেন।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জোটের শীর্ষ নেতারা জানান, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে দেশের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অবরোধের প্রথম দিন পালন করেছে। সংসদ বিলুপ্তসহ এই সরকারের পদত্যাগের দাবি জানান তারা।

তারা জানান, ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অধিকার আদায়ে আন্দোলনরত সাত জন নিরীহ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে এই সরকার। সারা দেশে গত কয়েকদিন যাবৎ নির্বিচারে নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘর তল্লাশির নামে ভাঙচুর ও নিরীহ পরিবার পরিজনদের অত্যাচার ও নিপীড়ন করা হয়েছে। হাজার হাজার বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরা সরকারের এই অবিবেচক আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ গ্রেপ্তার সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন।

১২ দলের শীর্ষ নেতারা বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন একতরফাভাবে অনুষ্ঠিত করে আবারও ক্ষমতা কুক্ষিগত করার গভীর ষড়যন্ত্র করছে এই সরকার। যার ফলে দেশব্যাপী সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে ব্যাপকহারে গ্রেপ্তার শুরু করেছে। ক্ষমতা লোভের পাশাপাশি চলমান গণআন্দোলনে ভীত হয়ে সরকার বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে গুলি চালিয়ে মানুষ হতাহতের নৃশংসতায় মেতে উঠেছে।

তারা আরও বলেন, এই ক্ষমতালোভী সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্ভরযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়, এটা সরকার চোখে আঙুল দিয়ে দেশবাসী এবং গণতন্ত্রকামী বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিল। সরকার নিজেই নিজেদের ভয়ঙ্কর রূপ প্রকাশ করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে যৌক্তিক এবং সঠিক বলে প্রমাণ করল।

নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের পছন্দের সরকার গঠন করবে। ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা দেশবাসীকে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।

অবরোধের স্বপক্ষে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) এর চেয়ারম্যান শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার নওয়াব আলী আব্বাস খান, যুগ্ম মহাসচিব কাজী নজরুল, মহানগর সভাপতি হান্নান আহমেদ খান বাবলু, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রধান, বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজউদ্দিন টিটু, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রওনক ইব্রাহিম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আবুল বাশার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব নুরুল কবির পিন্টু, আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিব, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুল আহাদ, সারোয়ার আলম, বেলায়েত হোসেন শামীম, ইসলামী ঐক্য জোটের সিনিয়র সভাপতি মাওলানা শওকত আমিন, যুগ্ম মহাসচিব ইসমাইল রেজা, বাংলাদেশ লেবার পার্টির যুগ্ম মহাসচিব শরিফুল ইসলাম, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম এর সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসেন, যুব জাগপার সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি ফয়েজ আহমেদ প্রমুখ।