প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৩২ পিএম
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৪৪ পিএম
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
মুজিবনগর ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত মেহেরপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রফেসর আব্দুল মান্নানের ফোনালাপের একটি অডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী, এটি তোমাকে মনে রাখতে হবে। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি। সাবধান হয়ে যাও তুমি। আমি তোমার কোনো কথা শুনব না। আমি যে রিপোর্ট পেয়েছি, আমি খুব অসন্তুষ্ট তোমার প্রতি, তুমি সাবধান হয়ে যাও।’ তিনি মেহেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাসের সঙ্গে ফোনালাপে এসব কথা বলেন। আব্দুল মান্নান সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকালে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘প্রফেসর আব্দুল মান্নানের এই বক্তব্য চরম রাষ্ট্রদ্রোহিতা। অথচ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, প্রতিবাদেরও সাহস পায় না সরকার বা নির্বাচন কমিশন। তার মানে তারা স্বীকার করে নিয়েছে, ভারত তাদের অনুগত বহুসংখ্যককে মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা জানতে চাই প্রফেসর আব্দুল মান্নানের মতো আর কে কে ভারতের প্রার্থী। তার তালিকা প্রকাশ করা হোক।’
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তাহলে বাংলাদেশ কি পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ? তলে তলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব কি বিকিয়ে দেওয়া হয়েছে? ভারত এখন তাদের এ দেশীয় অনুচরদের নমিনেশনও দিচ্ছে?’
তিনি বলেন, ‘বিএনপিসহ সকল দলকে বাদ দিয়ে এই পাতানো নির্বাচনের অন্যতম মদদদাতা হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশের নাম সর্বজনবিদিত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসে একদলীয় নির্বাচনের পক্ষে সাফাই গাইছেন। ভারতীয় কূটনীতিকরা বাংলাদেশে এসে বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্থিতিশীলতা চান। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার চান না। এখন তাদের থলের বিড়াল বের হতে শুরু করেছে। ভারত মনোনীত প্রার্থীরা বীরদর্পে বলছেন, আমাকে ভারত মনোনয়ন দিয়েছে। আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’
রিজভী বলেন, ‘দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে না চাইলে ভোট বর্জন করুন। তারা নির্বাচিত হলে দেশকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়াটা অসম্ভব কিছু না।’ তিনি দ্বাদশ নির্বাচনকে ‘আমরা আর মামুদের’ নির্বাচন আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘৭ জানুয়ারি একদলীয় ডামি নির্বাচন ঘিরে একদিকে চলছে রীতিমতো রঙ-তামাশা আর অন্যদিকে নৌকা-ডামির কামড়া-কামড়ি, গোলাগুলি, খুনোখুনি, সংঘাত-সহিংসতা।’
তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলহীন পূর্বনির্ধারিত ফলাফলের এই নির্বাচনে ভোটারদের ন্যূনতম আগ্রহ না থাকলেও গণতান্ত্রিক বিশ্বকে তথাকথিত ভোটের উৎসব দেখানোর জন্য অত্যাচার-নিপীড়ন থেকে তাদের রেহাই নেই। সাধারণ মানুষকে জোর করে মিছিলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। এলাকা ছাড়া করার ভয় দেখানো হচ্ছে। নৌকার প্রচার-মাইকের আওয়াজ শুনলেই লোকজন সেখান থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। ভোটের উৎসবের বদলে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা সর্বত্রই। তারা দেশটাকে যুদ্ধাবস্থায় নিয়ে যেতে চায়। সারা দেশে এখন আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে নামানো হয়েছে আমি আর ডামির ভোটরঙ্গে।’