প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:৫৯ এএম
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:১২ পিএম
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতারা। ছবি : সংগৃহীত
‘সংবিধান লঙ্ঘন করে ডামি এমপিদের’ শপথগ্রহণ ও পার্লামেন্টের অধিবেশন আহ্বানের প্রতিবাদে আগামী ৩০ জানুয়ারি সংসদকে লাল কার্ড দেখানোর কর্মসূচি দিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন দলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু।
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের সংবিধান থেকে আইনি বিধান উল্লেখ করে বক্তব্য রাখেন, এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেশে মিডনাইট একাদশ সংসদের ৩৫০ জন আর ডামি দ্বাদশ সংসদের ২৯৮ জন মোট ৬৪৮ জন শপথবদ্ধ এমপি রয়েছেন। আগামী ২৯ জানুয়ারি একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়া অবধি এই অরাজকতা থাকবে। এটি একটি চরম সাংবিধানিক লঙ্ঘন। এই সময়ের মধ্যে চাইলে দ্বাদশ অবৈধ সংসদ বাতিলও করে দেওয়া সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডামি সরকার যেহেতু স্বজ্ঞানে ইচ্ছাকৃতভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে, যাতে ৭(খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘এই সংবিধান বা ইহার কোনো বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে, তাহার এই কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ওই ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবে। (৩) অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধে দোষী ব্যক্তি, প্রচলিত আইনে অন্যান্য অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত হইবে’ তাদের ওপর ক্যাপিটেল পানিশমেন্টও বরাদ্দ।’
সংবিধানের ১২৩ (৩) অনুচ্ছেদের ‘ক’ দফা উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট তাজুল বলেন, ‘এতে বলা হয়েছে, সংসদ অবসানের কারণে সংসদ ভাঙিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙিয়া যাইবার পূর্ববতী নব্বই দিনের মধ্যে সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে। তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার ‘ক’ উপদফা অনুয়ায়ী অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তিরা উক্ত উপদফার উল্লিখিত মেয়াদ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত, সংসদ সদস্যরূপে কার্যভার গ্রহণ করিবেন না।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সংসদের মেয়াদ আছে ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত। অর্থাৎ, এই দফা ও উপদফা অনুযায়ী দ্বাদশের জন্য নির্বাচিতরা ২৯ জানুয়ারির আগে শপথগ্রহণ করতে পারবেন না। করলে, তা অসাংবিধানিক এবং অবৈধ হবে। অন্যদিকে সংবিধানের ১৪৮ এর (৩) দফায় বলা আছে- এই সংবিধানের অধীনে যে ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তির পক্ষে কার্যভার গ্রহণের পূর্বে শপথগ্রহণ আবশ্যক, সেই ক্ষেত্রে শপথগ্রহণের পর তিনি কার্যভার গ্রহণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে। তার মানে ১০ জানুয়ারি যেদিন দ্বাদশের ২৯৮ জন সদস্য শপথ নিয়েছেন, সেদিন থেকেই তারা পদে আসিন হয়েছেন। এটি সাংবিধানিকভাবে অবৈধ। একটি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ এক বিস্ময়কর বাকশালি যুগে প্রবেশ করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমদ ভূঁইয়া, দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নাসির, যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ, মশিউর রহমান মিলু, শরণ চৌধুরী, আনোয়ার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।