× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভারতীয় পণ্য বর্জনে সংহতি জানালেও কর্মসূচি দেবে না বিএনপি

বাছির জামাল

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪ ২৩:০৩ পিএম

আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪ ০০:০২ এএম

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ফাইল ফটো

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ফাইল ফটো

দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে প্রচারাভিযান চলছে, তাতে সংহতি জানালেও এ নিয়ে আপাতত কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছে না বিএনপি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতবিরোধী রাজনৈতিক বলয়ের পুরোধা হিসেবে পরিচিত এই দলটি বেশ কয়েক বছর ধরেই ভারত প্রশ্নে ঘন ঘন অবস্থানের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনের সময় প্রতিবেশী এই রাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পক্ষে কূটনৈতিক অবস্থান নেওয়ায় দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়। ভারতে সংশোধিত নাগরিক আইন (সিএএ) চালু হওয়ার পর বিএনপির এই নেতাকর্মীরা আবারও নড়েচড়ে বসেছেন। যদিও দলটি কোনো সুস্পষ্ট, সুসংহত অবস্থান ঘোষণা করেনি।

গত ১৮ মার্চ বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ভারতের সংশোধিত নাগরিক আইন (সিএএ) চালু হওয়ার পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। এর পর দলটির নীতিনির্ধারকদের কয়েকজন নাম না প্রকাশের শর্তে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, ‘বিএনপি ভারতের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করবে। এখন থেকে ভারতের যেকোনো কর্মকাণ্ড বিএনপি পর্যবেক্ষণ করবে এবং প্রতিক্রিয়া জানাবে।’

একই সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান গণমাধ্যমে মন্তব্য করেন, তারাও প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্রের সহযোগিতা চান, তবে তা একদলীয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নয়- বরং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে। তবে এর পরপরই বিএনপি গত বুধবার ভারতীয় পণ্য বর্জনের প্রচারাভিযানে সমর্থন ঘোষণা করে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) আবার বিএনপির বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনে সংহতি জানালেও এ নিয়ে দলটি কোনো কর্মসূচি দেবে না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, বিএনপির এমন রাজনৈতিক অবস্থান থেকে বোঝা যাচ্ছে, ভারতের ব্যাপারে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে দোদুল্যমানতা রয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি মাসে দেশের সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা ভারতের সঙ্গে একটি ইতিবাচক সম্পর্কে পৌঁছার চেষ্টা করেন। তখন বেশ কিছুদিন ভারতের কোনো বিষয়ে বিএনপির নেতাদের কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বও নির্বাচন ইস্যুতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর প্রচণ্ড কূটনৈতিক চাপ তৈরি করে। তবে এ বিষয়ে ভারত এই কূটনৈতিক মন্তব্য করে যে, ‘নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেখানকার জনগণই ঠিক করবে, কারা দেশ পরিচালনা করবে।’ বিএনপির নীতিনির্ধারকদের ধারণা, ভারতের অবস্থানের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চাপ উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ছাড়াই সংসদ নির্বাচন করতে এবং আবারও ক্ষমতায় আসতে পেরেছে। অবশ্য ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ভারতে সরকার গঠন করার পর থেকেই বিএনপি নেতাদের মধ্যে এই ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে, ভারত এদেশে শুধু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে স্বস্তিবোধ করছে।

মুখ খুলছেন না নীতিনির্ধারক নেতারা

এদিকে সংসদ নির্বাচনের পর থেকে গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে সরকারবিরোধী নানা গ্রুপ ও ব্যক্তি। বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা কয়েকটি দলের ব্যানারেও এমন প্রচারাভিযান হতে দেখা গেছে রাজধানীতে। বিএনপির সঙ্গে যূথবদ্ধ আন্দোলনে থাকা গণঅধিকার পরিষদ নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরও ঢাকায় একাধিক রাজনৈতিক সভায় ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সমালোচক হিসেবে পরিচিত প্রবাসী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরাও একই ধরনের প্রচারে সম্পৃক্ত রয়েছেন।

এরই মধ্যে গত বুধবার বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তার নিজের গায়ে থাকা ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলে ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনের’ প্রচারাভিযানে সংহতি জানান।

যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি বিএনপির কয়েকজন নীতিনির্ধারক। বিএনপি দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে এটি না করলেও ধারণা করা হচ্ছে দলটির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার এ ধরনের সংহতি প্রকাশ দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের ইঙ্গিত ছাড়া হয়নি। 

এ ব্যাপারে গত বুধবার দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে ঢেউ দৃশ্যমান হয়েছে, তাতে মনে হয় দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে।’ 

তবে এটি বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত বা অবস্থান কি না জানতে চাইলে তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এটি দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। এটিকে বলা যেতে পারে, গত নির্বাচনে ভারতীয় নীতিনির্ধারক ও কূটনীতিকরা যেভাবে এদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থা নিয়েছে, সেসবের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিবাদে অংশ নেওয়া।’

উল্লেখ্য, বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ মনে করে, ভারতীয় নীতিনির্ধারক ও কূটনীতিকদের কারণেই বাংলাদেশের মানুষ আবারও ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ কারণেই মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এবং সে ক্ষোভ থেকে পণ্য বর্জনের আন্দোলন শুরু হয়েছে।’ তিনি বলেছিলেন, ‘তাদের আপত্তি ভারতীয় শাসকদের পলিসি বা নীতি নিয়ে।’

ভারতের উচিত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা করা : মিন্টু

ভারতের ক্ষেত্রে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ভারত বৃহৎ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। আমরা চাই, এই গণতান্ত্রিক প্রতিবেশীর সঙ্গে সব সময় সম্পর্ক ভালো রাখতে। কারণ, সবকিছু বদলাতে পারলেও প্রতিবেশী বদলানো সম্ভব নয়।’

আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘কিন্তু ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশ গত একতরফা নির্বাচনে অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকারকে সমর্থন ও সহযোগিতা করায় দেশে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভোটাধিকার হরণ হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই দেশের জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। বিএনপি জনগণের দল। এ কারণে আমরা জনগণের দাবি ও মতামতকে অগ্রাহ্য করতে পারি না। তাই ভারতের উচিত হবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করা।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা