× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের লড়াই সহজ নয় : মির্জা ফখরুল

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪ ১২:৪৪ পিএম

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৪ ১৭:৫০ পিএম

সোমবার রাজধানীর পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে বক্তৃতা করছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রবা ফটো

সোমবার রাজধানীর পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে বক্তৃতা করছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রবা ফটো

গত ২৯ অক্টোবর গ্রেপ্তার হওয়ার পর সাড়ে তিন মাস কারাবন্দী ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মুক্তির মাস খানেক পর সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে’ বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা রক্তের দাম দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। কারও দয়ায় স্বাধীন হয় নাই। কোনো দেশ যদি মনে করে যে, আমাদের ওপরে প্রভুত্ব করবে, তাহলে তাদের মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন সেই প্রভুত্ব স্বীকার করেনি। মোগল আমলেও করেনি, ব্রিটিশ আমলেও করেনি, পাকিস্তান আমলেও করেনি, এখনও করবে না।’

তিনি তরুণ সমাজকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি বৃদ্ধ হয়ে গেছি। আমরা এখনও লড়ছি। আমরা এখনো বিশ্বাস করি, এই দেশকে পরাধীন করে রাখার ক্ষমতা কারো নেই। এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী রেজিমের শাসকগোষ্ঠীকে একদিন চলে যেতেই হবে।’

এ জন্য জনগণকে নিয়ে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে ছাত্র-শ্রমিক, যুবক—সবাইকে মাঠে নামার আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, যারা পুলিশের একটি হুইসেল, একটি সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজ শুনে পালাবে না—সেই ধরনের মানসিকতা তৈরি করতে হবে, সেই ধরনের সাহস তৈরি করে দাঁড়াতে হবে।

মির্জা ফখরুল পাকিস্তানের উদারহণ টেনে বলেন, ‘পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে দেখেন। ইমরান খান…আমরা পাকিস্তান নাম বললে সবাই আঁতকে উঠি, অন্যভাবে চিন্তা করি। সেই ইমরান খান দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে তরুণদের মাঠে নিয়ে আসতে হয়, কিভাবে মহিলাদের মাঠে আনতে হয়। আমাদের চেয়ে কম অত্যাচার তাদের উপরে হয়নি। তারা সেনানিবাস আক্রমণ করেছিল। তারা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে…পাকিস্থানে এই অবস্থান নিয়ে কেউ কোনো দিন রাজনীতিতে টিকতে পারে নাই।’

তিনি বলেন, ‘ইমরান খান জেলে চলে গেছে। ৩৪ বছর সাজা হয়েছে। তার দুই হাজারের বেশি নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। জোর করে দল বদল করানো হয়েছে। তার পরও জেলে বসে যখন তার দলের মার্কা নিয়ে গেছে, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্বাচনে যাওয়ার। এই সেই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে কারা…এই তরুণেরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আপনারা সবাই ব্যবহার করেন…সেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সেজন্য বলি, মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নামতে হবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে না নামলে আপনারা জয়ী হতে পারবেন না। সেই মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কিছুক্ষণ আগে এখান দিয়ে রিকশা শ্রমিক ভাইয়েরা গেলেন না…এ রকম শ্রমিক ভাইদের নামাতে হবে। এই রকম সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র ভাইদের আনতে হবে। সমস্ত জায়গা থেকে মানুষ উঠে আসবে। সেই দিন হবে সত্যিকার অর্থেই সফল গণঅভ্যুত্থান, সফল বিস্ফোরণ…বিজয়।’ 

একাত্তরে ইতিহাস তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ‘সেইভাবে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আমি জানি আমার বহু ছেলেরা সেইভাবে কষ্ট করছে, তারা কেউ বাড়িতে থাকতে পারে না, তাদের চাকরি-বাকরি নাই, টাকা-পয়সা নাই, তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নাই। তারা লড়াই করছে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘এই গণতন্ত্র ফেরানোর বিষয়টি ছড়িয়ে দিতে হবে সারাদেশে তরুণ সমাজের মধ্যে, সেই সাহস ও বোধ তৈরি করতে হবে যে আমি যা করছি তা আমার দেশের জন্য করছি, আমি যা করছি তা আমার গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য করছি, আমি যা করছি তা আমার দেশমাতৃকাকে রক্ষা করার জন্য করছি।’

আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, লক্ষ্য, আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন—সব ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা, ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করা, গণতান্ত্রিক পরিবেশে বাস করা, স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারা, লিখতে পারা, ভিন্নমত পোষণ করতে পারা, রাষ্ট্রে জনগণের মালিকানা—সব তারা কেড়ে নিয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা সংবিধানও কাটাছেঁড়া করে শেষ করেছে। এই সংবিধানে এখন তিনটি অনুচ্ছেদ আছে। যে অনুচ্ছেদ আপনি কোনো দিন পরিবর্তন করতে পারবেন না। সেখানে একজন ব্যক্তি, একটি পরিবার ছাড়া আর কিছু নেই। সর্বজনগ্রহণযোগ্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনী ব্যবস্থা তুলে নিয়ে আবার একদলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন ফিরিয়ে এনেছে। সেটা করতে গিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে তারা বিরোধী দলকে আসতে দেয়নি। অত্যন্ত সুকৌশলে ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করেছে। এবার আরও চমৎকার নাটক করে নিজেরা নিজেরা ডামি প্রার্থী খাড়া করে নির্বাচন করেছে। যারা বিরোধী দল (জাতীয় পার্টি) বলে দাবি করে, তাদের আসন বণ্টন করে নির্বাচন করেছে। সেই নির্বাচনকে কেউ গ্রহণ করেনি। বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করেনি, আন্তর্জাতিক বিশ্বও গ্রহণ করেনি।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে জনগণ স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তিনি কারও নাম উল্লেখ করে বলেন, আজ ২৫ মার্চ কালরাত। আওয়ামী লীগ অস্বীকার করতে পারে, এই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত চেষ্টা করেছে পাকিস্তানের সঙ্গে একটা দফারফা করার জন্য। যখন ব্যর্থ হয়েছে, তখন আমাদের তৎকালীন রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ যারা ছিলেন, তারা কেউ দেশে থাকেননি। ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আর মূল নেতা আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানে চলে গেছেন। পরে জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বলেই ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে।’

বিএনপির স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির উদ্যোগে এই মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ হয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। সেখানে একটি কাপড়ের ব্যানারে বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা ছিল ‘ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন’। তবে বক্তাদের কেউ কেউ ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বললেও পণ্য বর্জনের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা