প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৪:৩৮ পিএম
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৫:৩৩ পিএম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে। প্রবা ফটো
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘গুরুতর’ অসুস্থ উল্লেখ করে বন্দি অবস্থায় এখনও তিনি ‘মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ একটি অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি এখনও বন্দি অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। গতকাল রাতে তিনি এতো অসুস্থ হয়েছিলেন যে, চিকিৎসকরা সবাই বলছিল আর বোধহয় বেশি সময় পাওয়া যাবে না।
জানা যায়, আগের দিন বুধবার দুপুরে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি হয়। পরে এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেন। সন্ধ্যার পরে তার অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়।
এর আগে বুধবার বিকালে খালেদার অবস্থার অবনতি হয়েছে জানিয়ে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়ার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিট পুলিশ প্রশাসনকে দ্রুত চিঠি দেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়।
পরে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা গুলশানের বাসায় কয়েক ঘণ্টা অবস্থান করে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করে হাসপাতালে নেওয়ার পরিকল্পনা বদলান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডারের অবস্থা আগের মতোই আছে। বাসায় মেডিকেল বোর্ডের ডাক্তারদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ চিকিৎসাধীন। সার্বক্ষণিক তার শারীরিক অবস্থা ‘ক্লোজড মনিটরিং’ করা হচ্ছে। এরবেশি কিছু বলতে চাই না।
দেশবাসী ও দলের নেতাকর্মীদের কাছে বিএনপি চেয়ারপারসনের আশু আরোগ্য কামনায় দোয়া চান অধ্যাপক জাহিদ।
গত ১৩ মার্চ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে ভর্তি হয়ে এক দিন পরই তিনি বাসায় ফেরেন।
৭৯ বছর বয়সি খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস, আর্থরাইটিস ও হৃদরোগে ভুগছেন। সাময়িক মুক্তির পর তাকে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড গত অক্টোবরে জানায়, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার লিভারের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। দ্রুত ‘বিদেশে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে’ তার লিভার প্রতিস্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে।
সরকার তাকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি না দেওয়ায় বিদেশ থেকে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে ঢাকায় এনে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার লিভারে ট্রান্সজুগলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোরটোসিসটেমিক সান্ট (টিপস) সম্পন্ন করা হয়।
এদিকে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বৃদ্ধি করে বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তার বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।’