প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৭:৩৭ পিএম
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৯:০৪ পিএম
‘আমরা বিএনপি পরিবার সেল’এর উদ্যোগে বিরোধী আন্দোলনে গুম-খুন-পঙ্গুত্বের শিকার পরিবারের সদস্যদের ঈদ উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্রবা ফটো
বিএনপির নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়ি কেনেন না বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি করেন।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘আমরা বিএনপি পরিবার সেল’এর উদ্যোগে বিরোধী আন্দোলনে গুম-খুন-পঙ্গুত্বের শিকার পরিবারের সদস্যদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার প্রদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আচ্ছা ওরা এতো কিছু করছে, শাল পোড়ায়, তো বউয়ের শাড়িটা পুড়াতে পারে না, ইন্ডিয়া থেকে আনা শাড়ি।’ আমি বলতে চাই, আমাদের বিএনপি নেতারা ইন্ডিয়া থেকে শাড়ি তেমন কেনে না।’
নিজের পুরোনো স্মৃতি তুলে রিজভী বলেন, ‘আমার নানার বাড়ি হচ্ছে ইন্ডিয়া। বিয়ের পরে একবার গিয়েছিলাম। আমার ছোট মামা একটা শাড়ি দিয়েছিলেন। আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, ওই শাড়িটা কই? আমার মিসেস বললেন, ‘কাঁথা সেলাই করতে কবে দিয়েছি সেটাও ছিঁড়ে গেছে’।’
ভারতীয় পণ্য বর্জনের সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে সকলের সম্পৃক্ত হওয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এদেশকে স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। আমরা সেই প্রত্যয় সেই আদর্শ নিয়ে কাজ করছি। আমাদের নিজের বুনন করা যে ফসল সেটা আরও বেশি করে উৎপাদন করব, আমাদের মিল-কারখানায় যে শাড়ি তৈরি হয় সেই শাড়ি আমাদের মেয়েরা পরবে, আমাদের কল-কারখানায় যে লুঙ্গি তৈরি হয় সেই লুঙ্গি আমাদের দেশের ছেলেরা পড়বে। কিন্তু আমরা অন্যের কাছে নতজানু হব না, অন্যের কাছে দ্বারস্থ হব না। এই জাতীয়তাবাদী চিন্তা থেকে আমাদের কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘‘আজকে যদি এটুকু বলতো (ভারত), ‘না আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, আমরা কোনো দলের পক্ষে না।’ যেটা আমেরিকা বলছে, যেটা ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে যে, ‘আমরা কোনো দলের পক্ষে না, আমরা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই’- সেটা পর্যন্ত তারা (ভারত) বলে নাই। উল্টো ইন্ডিয়ার হাইকমিশনের কর্মকর্তারা বলে দিলেন যে, ‘আমরা এ সরকারের পক্ষে’। অতএব আমি মনে করি, অবশ্যই যে সামাজিক আন্দোলন হচ্ছে পণ্য বর্জনের তার প্রতি সংহতি জানানো ন্যায়সঙ্গত।”
ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান রেখে তিনি বলেন, ‘কেন আমরা অন্য দেশের সমালোচনা করি। ৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি হয়েছে, বেরুবাড়ি ভারত নিয়ে যাবে। কথা ছিল বেরুবাড়ি নিয়ে যাবে, আমাদের দোহগ্রাম-আঙ্গরপোতা যাওয়ার জন্য করিডোর দেওয়া হবে সেটা ৪০ বছরেও দেওয়া হয়নি। এখনও কিন্তু দেওয়া হয়নি। বেরুবাড়ি কিন্তু তারা নিয়ে গেছে। করিডোর দিয়ে ২৪ ঘণ্টা যাতায়াত করতে পারবে কিন্তু আইনগতভাবে যেটা দেওয়ার কথা সেটা দেওয়া হয়নি। ভারতের পার্লামেন্টে এটা বন্ধ করে রেখেছে। আমাদের যে প্রাপ্য যেটা আমাদের দেওয়া হয়নি। এটার জন্য প্রতিবাদ করতে পারব না। দেশের স্বার্থের পক্ষে আমরা কথা বলতে পারব না। এই যে গুম-খুনের পরিবার আজকে এম ইলিয়াস আলী কেন গুম হয়েছে? মানুষ বলে ভারতের টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে তার যে শক্ত অবস্থান সেজন্য তাকে গুম করা হয়েছে, আজকে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ তিনি বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসের ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন, এমপি ছিলেন পাঁচ বার, মন্ত্রী ছিলেন, তাকে গুম করা হলো, পাওয়া গেল আরেকটি দেশে। এটি কি বড় ধরনের কেলেঙ্কারি নয়? এটা কি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যায় না? এভাবে ওরা আগ্রাসন করছে।’
সেলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও সদস্য নাজমুল হাসানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর হেলাল, যুব দলের আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াসিন আলী, ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব, নাছির উদ্দীন নাছির, গুম-খুন হওয়া পরিবারের মধ্যে চৌধুরী আলমের ভাই খুরশীদ আলম মিন্টু, সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজীদা ইসলাম তুলি, নুরে আলমের স্ত্রী রিনা আলম, মাহবুবুর রহমান বাপ্পীর বোন ঝুমুর আক্তার, পারভেজ রেজার ছোট মেয়ে হৃদি বক্তব্য রাখেন।
পরে গুম হওয়া পরিবারের সদস্যদের হাতে তারেক রহমানের ঈদ উপহার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।