খালেদা জিয়া মনে করেন, রাজনীতির জন্যই বন্দি আছেন : মির্জা ফখরুল

ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপির নয় জ্যেষ্ঠ নেতা।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাত  আটটায় গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে যান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির আটজন সদস্য।

বিএনপি মহাসচিব ছাড়া অন্যরা হলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

পরে  লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি(এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদও বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

ঘণ্টাব্যাপী  বিএনপি নেতৃবৃন্দ দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করেন।

সাক্ষাৎ শেষে ফিরোজার বাসার সামনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ উনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ, বন্দি অবস্থায় আছেন। আজকের আমরা তার সঙ্গে দেখা করেছি। এটি পুরোপুরি সৌজন্য সাক্ষাত।এখানে আমরা কোনো রাজনৈতিক আলোচনা করিনি। তবে তিনি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন। তিনি তিন বার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এখনও তিনি রাজনৈতিক কারণেই বন্দি হয়ে আছেন। আমরা যেটা মনে করি, আমরা যেটা সবসময় বলে আসছি, তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়া উচিত এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো উচিত।’

ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া তিনি আপনাদের মাধ্যমে সারা জাতিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, ঈদ মোবারক জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি দোয়া চেয়েছে তিনি যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন। তিনি ভালো থাকেন। তিন(খালেদা জিয়া ) এও বলেছেন, তিনি জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করেছেন, রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য তিনি রাজনীতি করেছেন... রাজনীতি করছেন। এখন যে তিনি বন্দি অবস্থায় আছেন, বলা যেতে পারে- সেটাও রাজনীতির জন্য।’ 

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়া হয় তাকে।

এরপর থেকে গুলশানের ওই বাসায় থাকছেন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত ৭৯ বয়সী খালেদা জিয়া। যেখানে দলের নেতাকর্মীসহ অন্যরা তার সাক্ষাৎ পান না।

‘স্বজনদের নিয়ে ঈদ’

ঈদের দিন সকালে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, অভিক এস্কান্দারসহ কয়েকজন নিকট স্বজন ফিরোজায় যান। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, ছোট ভাই বাসা থেকে খাবার তৈরি করে আনেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ীখালেদা জিয়ার জন্য খাবার রান্না করে আনা হয়।

স্বজনদের নিয়ে দুপুরের খাবার খান খালেদা জিয়া। দুপুরে লন্ডন থেকে বড় ছেলে তারেক রহমান, তার স্ত্রী জোবায়েদা রহমান, তাদের একমাত্র মেয়ে জাইমা রহমান, প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শার্মিলা রহমান, তাদের দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান, জাফিয়া রহমানের সঙ্গে ভার্চুয়ালি কথা বলেন খালেদা জিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসাধীন মেজ বোন সেলিমা ইসলামের খোঁজ-খবর নেন খালেদা জিয়ার।