নিউইয়র্ক (যুক্তরাষ্ট্র) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১০:২৬ এএম
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১০:২৭ এএম
নিউইয়র্কের কংগ্রেসম্যান ও ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির র্যাংকিং সদস্য গ্রেগরি মিকসের সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
যুক্তরাষ্ট্রে লুকিয়ে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত পলাতক খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে দ্রুত ফেরত পাঠানোর জন্য মার্কিন কংগ্রেসম্যানের সাহায্য চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নিউইয়র্কের কংগ্রেসম্যান ও ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির র্যাংকিং সদস্য গ্রেগরি মিক্সের সঙ্গে এক বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে দ্রুত ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানান।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ), তৌফিক ইসলাম শাতিলসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত পলাতক খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে দ্রুত ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে কংগ্রেসম্যানের সমর্থন চান।
র্যাবকে জঙ্গিবাদ, সহিংস চরমপন্থা, মাদক নিয়ন্ত্রণ ও মানব পাচারসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ও নির্মূলে দীর্ঘদিন যাবৎ একটি অত্যন্ত দক্ষ ও কার্যকরী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী র্যাবের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে বলে অবহিত করেন।
আলোচনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণতন্ত্রকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম ভিত্তি উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতি পূনঃব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কংগ্রেসম্যানকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ বিশ্ব দরবারে স্বীকৃত ও প্রশংসিত।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার উপর আলোকপাত করে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার যে অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে তা কাজে লাগানোর মাধ্যমে দু’দেশের বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার বিষয়ে কংগ্রেসম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
কংগ্রেসম্যান মিক্স বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বন্ধুরাষ্ট্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করে দুদেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বাংলাদেশ সরকারকে রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলায় মানবিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
তিনি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ও বাংলাদেশে সাময়িক আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের স্বদেশে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ প্রয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাগণকে আহ্বান জানান।
কংগ্রেসম্যান মিকস জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ও বাংলাদেশে সাময়িক আশ্রয়গ্রহণকারী বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিক্সকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে এ বিষয়ে তিনি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।