প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৩ ১৫:৫১ পিএম
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৩ ১৬:৫০ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবসেবামূলক প্রতিষ্ঠান শাহ ফাউন্ডেশন এবারে পবিত্র মাহে রমজান সামনে রেখে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস ও জ্যামাইকায় ৬ শতাধিক মানুষের মধ্যে রমজানের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শাহ ফাউন্ডেশন আর্তমানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। সংগঠনটি শুধু নিউইয়র্কে নয়, মানবতার দিকে সব সময় হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ ও ভারতে অসহায় মানুষের পাশে সাধ্যমতো দাঁড়িয়েছে শাহ ফাউন্ডেশন।
এর আগে বন্যার সময়, করোনা মহামারিতে, শীতার্ত মানুষের পাশে উষ্ণতা নিয়ে হাজির হয়েছে শাহ ফাউন্ডেশন। এবারও শাহ ফাইন্ডেশন পবিত্র মাহে রমজান আসার প্রাক্কালে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা জ্যাকসন হাইটস ও জ্যামাইকায় রমজান উপলক্ষে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে।
১৮ মার্চ বিকালে জ্যাকসন হাইটসে নবান্ন রেস্টুরেন্ট ও ১৯ মার্চ বিকালে জ্যামাইকায় ফাতেমা গ্রোসারি থেকে রমজানের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। শাহ ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর মইনুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও ডিরেক্টর ফাহাদ সোলায়মানের পরিচালনায় এ আয়োজনে অতিথি ছিলেন জ্যাকসন হাইটস এলাকার অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাটেলিনা ক্রুজ ও জেসিকা রামোস গঞ্জালেস। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন শাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রেসিডেন্ট শাহ জে. চৌধুরী, ডিরেক্টর এবং ব্যবসায়ী একেএম ফজলুল হক, কো-ফাউন্ডার হুসনে আরা চৌধুরী, কো-ফাউন্ডার সাদিয়া জে. চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, পরিচয় পত্রিকার সম্পাদক নাজমুল আহসান, জেবিবিএর পরিচালক ও ব্যবসায়ী লিটু চৌধুরী, জেবিবিএর কর্মকর্তা শাহ চিশতি, আড়াংয়ের মালিক মোহাম্মদ হুমায়ুন, লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আহসান হাবিব, মেজর (অব.) জালাল, শো টাইম মিউজিকের প্রেসিডেন্ট আলমগীর খান আলম, সাংবাদিক আহমেদ হোসেন দীপু, সাংবাদিক নিহার সিদ্দিকী, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট মোহাম্মদ আজিজুল, জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর নিজামুল হক, সভাপতি শাকিল মিয়া, সোলায়মান পাটোয়ারি প্রমুখ।
অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাটেলিনা ক্রুজ শাহ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এর আগে শাহ ফাউন্ডেশন মানবতার সেবায় অনেক কাজ করেছে। আমার অফিস থেকেও শাহ ফাউন্ডশনের কম্বল বিতরণ করা হয়েছিল। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় ধর্ম। মানুষের সেবা করা এবং অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমি সব সময় ভালো কাজের সঙ্গে আছি এবং থাকব। কমিউনিটিতে শাহ ফাউন্ডেশনের মতো আরও প্রতিষ্ঠান দরকার।’
অ্যাসেম্বলিওম্যান জেসিকা রামোস গঞ্জালেস বলেন, ‘শাহ ফাউন্ডেশন ভালো কাজ করছে। তিনি বলেন, রমজান হচ্ছে আত্মশুদ্ধির মাস, পবিত্র মাস। এ মাসে মানুষ সিয়াম সাধনা করে। রোজার মধ্যে অনেকেই দরিদ্রতার কারণে নিজেদের পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে পারেন না, সেই কাজটি শাহ ফাউন্ডেশন করে দিচ্ছে। আশা করি আগামীতেও তাদের এই সুন্দর কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে।’
শাহ জে. চৌধুরী বলেন, ‘এ অনুদান আমাদের পরিবারের অনুদান। বিশেষ করে আমার বড় মেয়ে এই প্রতিষ্ঠানের কো-ফাউন্ডার এবং সিইও ফৌজিয়া জে. চৌধুরী এই দুটো আয়োজনের পুরো অনুদান দিয়েছে। তা ছাড়া হক অ্যান্ড সন্স তাদের কেনা মূল্যে আমাদের এসব পণ্য সরবরাহ করেছে। তারা কোনো লাভ করেনি। সে হিসেবে বলা যায় হক সন্সও এর অংশীদার। এটি আমাদের তৃতীয় অনুষ্ঠান। এর আগের দুই বছরও রমজানের সময় আমরা খাদ্যসামগ্রী দিয়েছিলাম। এটি কোনো সহায়তা নয়, আমাদের ভালবাসা। এভাবেই মানুষকে ভালোবেসে যেতে চাই।’
খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, মসুর ডাল, খেজুর, কালা ছানা, তেল, মুড়ি, সেমাই ও মসলা। জানা গেছে, প্রতিটি বক্সের মূল্যমান ছিল ৫০ ডলার। জ্যাকসন হাইটসে ৩ শতাধিক মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। খাদ্যসামগ্রী বিতরণ বিকাল সাড়ে ৫টায় হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর থেকেই লোকজন ভিড় শুরু করেন। সে কারণে তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত চাল-ডাল কেনা হয়। প্রত্যেককেই খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়।
জ্যামাইকায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
১৯ মার্চ বিকালে জ্যামাকাইয়ও রমজানের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে শাহ ফাউন্ডেশন। এলাকার ফাতেমা গ্রোসারির সামনে ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর একেএম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে এবং জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জে. মোল্লা সানির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন কাউন্সিলম্যান জিম জিনারো, কাউন্সিলওম্যান নাতাশা উইলিয়াম, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট এবং মূলধারার রাজনীতিবিদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট শাহ জে. চৌধুরী, কো-ফাউন্ডার হুসনে আরা চৌধুরী, প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর মঈনুজ্জামান চৌধুরী, ব্যবসায়ী বিলাল চৌধুরী, রেজাউল করিম চৌধুরী, কামরুল ইসলাম সনি, এনায়েত উল্যাহ সেন্টু, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট এএফ মিসবাউজ্জামান, ব্যবসায়ী এবিএম ওসমান গনি, আজহার আহমেদ, রীমি ভূইয়া প্রমুখ।
কাউন্সিলম্যান জিম জিনারো শাহ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। রমজান এবং ধর্মের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো অসহায় মানুষের সেবা করা। সেই মহৎ কাজটি করে যাচ্ছে শাহ ফাউন্ডেশন। তিনি বলেন, আমি এ এলাকায় বাংলাদেশিদের বন্ধু। আমি সব সময় বাংলাদেশিদের পাশে আছি এবং আগামীতেও থাকব।’
কাউন্সিলওম্যান নাতাশা উইলিয়াম বলেন, ‘শাহ ফাউন্ডেশনের এই সুন্দর অনুষ্ঠানে আমি আসতে পেরে আনন্দিত। কারণ ভালো কাজের সঙ্গে থাকতে পারা এবং মানুষকে সাহায্য করার মধ্যে বিশেষত্ব আছে। আর সেই কাজটিই করে যাচ্ছে শাহ ফাউন্ডেশন।’
ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার বলেন, ‘শাহ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মানুষের সেবায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করেছে। সেজন্য ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শাহ জে. চৌধুরী এবং তার পরিবারকে ধন্যবাদ।’