সৌদিতে বাস দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে আটজন বাংলাদেশি

সৌদি আরবে বাস দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে আটজন বাংলাদেশি বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১৮ বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সেহেলি সাবরিন গণমাধ্যমকে জানান, ‘নিহতদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি। আহত ১৮ বাংলাদেশিকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া মোট মৃতের সংখ্যা ২২ জন বলে সৌদি আরব থেকে জানা গেছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’

এদিকে সৌদিতে বাস দুর্ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোক-সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তাদেরকে আহত বাংলাদেশিদের চিকিৎসার উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।

হতাহত বাংলাদেশিদের অধিকাংশই চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা। নিহত বাংলাদেশিরা হলেন- শহিদুল ইসলাম (সেনবাগ, নোয়াখালী), মামুন মিয়া (মুরাদনগর, কুমিল্লা), মো. হেলাল (নোয়াখালী), সবুজ হোসাইন (লক্ষীপুর), রাসেল মোল্লা (মুরাদনগর, কুমিল্লা), মো. আসিফ (মহেশখালী, কক্সবাজার), মো. ইমান হোসাইন রনি (টঙ্গি, গাজীপুর) এবং বকু মিয়া (চাঁদপুর)।

গত সোমবার ইয়েমেন সীমান্তবর্তী আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাসের আরোহীরা ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় যাচ্ছিলেন। ব্রেক কাজ না করায় একটি সেতুর উপর উল্টে গিয়ে বাসটিতে আগুন ধরে যায় বলে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গালফ নিউজের খবরে বলা হয়।

জেদ্দা থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে যাওয়ার পথে বাসটি গভীর খাদে পড়ে যায়। ওই বাসে ৪৭ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৩৫ জন বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

একটি সূত্র জানায়, বাসটিতে আগুন ধরে যাওয়ায় মরদেহগুলোর চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। ফলে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে সমস্যা হচ্ছে।

আল-এখবারিয়া টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, সোমবার মক্কায় ওমরাহ পালনের জন্য যাওয়ার সময় দক্ষিণাঞ্চলীয় আসির প্রদেশে একটি সেতুর সঙ্গে সংঘর্ষে বাসটি উল্টে আগুন ধরে যায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

অন্যদিকে সৌদির বেসরকারি সংবাদপত্র ওকাজ বলেছে, দুর্ঘটনাটি ব্রেকের সমস্যার কারণে হয়েছে। এর ফলে বাসটি সেতুর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে গিয়ে আগুন ধরে যায়।

জেদ্দায় বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেলের প্রথম সচিব (শ্রমিক কল্যাণ) আরিফুজ্জামান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বাসে মোট যাত্রী ছিল ৪৭ জন। এর মধ্য বাংলাদেশি ৩৫ জন। দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২২ জন। ৮ বাংলাদেশি নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকিদের বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান চলমান।

এর আগে গত শনিবার মক্কায় ওমরাহ করে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বাংলাদেশি নিহত হন। নিহতরা হলেন বরগুনার বেতাগী উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের সাগর জোমাদ্দার ও তার দুলাভাই মোজাম্মেল হোসেন। 

পরদিন রবিবার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় মনির হোসেন ভূইয়া নামে আরও এক প্রবাসী বাংলাদেশি নিহত হন। মনির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ গ্রামের ইমাম হোসেন ভূইয়ার ছেলে।

এর আগে, ২০১৯ সালের অক্টোবরে মদিনার কাছে এক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছিলেন।