× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হেরে যেতে আসিনি, শেষ দেখতে চাই

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১২:৩৩ পিএম

আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১২:৩৫ পিএম

দেশের প্রথম নারী নাবিকদের অন্যতম বিউটি আক্তার।

দেশের প্রথম নারী নাবিকদের অন্যতম বিউটি আক্তার।

বিউটি আক্তার। সমুদ্রগামী জাহাজের প্রথম বাংলাদেশি নারী। এ পর্যন্ত নোঙর ফেলেছেন বিভিন্ন দেশের ৩০টি বন্দরে।

চট্টগ্রাম বন্দরের বিপরীত তীরে কর্ণফুলীর মোহনায় অবস্থিত একাধিক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে ভর্তি হন ২০১২ সালে ৪৮তম ব্যাচে। দুই বছর সফলভাবে প্রাক-সমুদ্র প্রশিক্ষণ শেষে নারী ক্যাডেটদের ১৬ জনের প্রথম ব্যাচ বের হয় ২০১৪ সালে। 

প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠলেও প্রথম দিকে এতে শুধু পুরুষ ক্যাডেটদেরই প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী ক্যাডেট ভর্তির নির্দেশনা দেওয়ার পর এখানে ২০১২ সালে প্রথম নারী ক্যাডার ব্যাচ ভর্তি করা হয়। প্রথম প্রশিক্ষণ নেয়া এই নারী ক্যাডারদের মধ্যে প্রথমে জাহাজে ওঠেন দুই নারী- ডেক ক্যাডেট পদে বিউটি আক্তার এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট পদে লাভলী দাশ। বিউটি আক্তারের এ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এস এম রানা

প্রতিদিনের বাংলাদেশ : বাংলাদেশে নারী ক্যাডেট ছিল না। আপনি নারী ক্যাডেট হওয়ার স্বপ্ন দেখলেন কীভাবে? 

বিউটি আক্তার : বাবা মোহাম্মদ বাহার উদ্দিন ও মা নূরজাহান দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে আমি দ্বিতীয়। বাবা চট্টগ্রামের ইউরিয়া সারকারখানায় চাকরি করতেন। সেই সুবাদে মেরিন একাডেমির অদূরে আমাদের বাসা। এ ছাড়া আমার এক খালুর বাসা ছিল মেরিন একাডেমির ভেতরে। ওখানে বছরে কয়েক দফা বেড়াতে যেতাম। তখন ক্যাডেটদের শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবন ও প্রশিক্ষণ দেখে অনুপ্রাণিত হই। ভাবতাম- ইস্, আমিও যদি ওদের মতো হতে পারতাম! এই ইচ্ছার কথা খালুকে জানালে তিনি বলেন, ‘এটা মেয়েদের পেশা নয়, ছেলেদের পেশা। মেয়েরা এখানে ভর্তি হতে পারে না।’ শুনে নিজের মধ্যে আফসোস তৈরি হয়। ভাবতাম, নাবিক হলে কত দেশ ঘুরে বেড়ানো যেত!

২০১১ সালে চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পরের বছরই খালু জানালেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ বছর থেকেই মেরিন একাডেমিতে নারী ক্যাডেট ভর্তি করা হবে। সার্কুলারও হয়েছে। তুমি চাইলে ভর্তি হতে পারো।’ তারপরই আমি সিদ্ধান্ত নেই, ভর্তি হব। 

২০১২ সালে ৪৮তম ব্যাচে ভর্তি হলাম আমরা ১৬ জন। মেরিন একাডেমিতে আমরাই প্রথম নারী শিক্ষার্থী। দুই বছরের প্রশিক্ষণ। প্রথম ব্যাচে সেরা হিসেবে সিলভার মেডেল পাই। লেখাপড়া, প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে একাডেমি কর্তৃপক্ষ সেরা প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচন করে। 

প্রবা : প্রশিক্ষণ শেষ করার পর জাহাজে উঠলেন কীভাবে? 

বিউটি আক্তার : প্রশিক্ষণ শেষেই আরেক চ্যালেঞ্জে পড়ি। সেটা বেশ বড় চ্যালেঞ্জই ছিল। জাহাজে ওঠার জন্য সিডিসি সনদ লাগে। পুরুষ ক্যাডেটরা সেটি সহজেই পায়। এখন নারীদের সেটা পেতে অসুবিধা না হলেও নারীরা তখন সেটি সহজে পায়নি। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে প্রায় ৯ মাস পর সিডিসি পাই। অনুমতির পর ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন ‘বাংলার শিখা’ জাহাজে উঠি আমি এবং লাভলী দাশ। আমি ডেক ক্যাডেট এবং লাভলী ইঞ্জিন ক্যাডেট পদে যোগ দিয়েছিলাম। 

অবশ্য জাহাজে ওঠার আগে আরও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। প্রশিক্ষণের পর অনুমতি পেতে ক্লান্তিহীন দৌড়ঝাঁপ করতে হয়েছে। এরপর অনুমতিপত্র পেলেও কোনোভাবেই চাকরি পাচ্ছিলাম না। কারণ দেশের সরকারি-বেসরকারি শিপিং লাইনগুলো নারী ক্যাডেটদের চাকরি দিচ্ছিল না। অনেকের অসহযোগিতা ও বেসরকারি শিপিং লাইনগুলোর আচরণে মনে হয়েছিল নাবিক হয়ে ভুল করেছি। কিন্তু আমি তো হেরে যেতে আসিনি। চেয়েছি শেষটা দেখতে। জাহাজে ফ্রি টাইম বা ইন্টার্নশিপ করার নিয়ম আছে নাবিকদের। নারী ক্যাডেট বলে সে সুযোগ দিতে চায়নি কেউ-ই। এক শিপিং লাইনের কর্মকর্তারা তো মুখের ওপর বলেই দিয়েছেন, ‘প্রয়োজনে দ্বিগুণ বেতনে পুরুষ ক্যাডেট নিয়োগ দেব, তাও নারী ক্যাডেট নিয়োগ দেব না।’ কারণ দেশে এর আগে জাহাজে কোনো নারী কাজ করেননি। এটাকে পুরুষের পেশা হিসেবে ধরা হয়। নারী সমুদ্রে মাসের পর মাস থাকবে, সেটা কোম্পানিগুলো চিন্তাই করতে পারেনি। 

অনেক দেনদরবারের পর এগিয়ে আসে বাংলাদেশ শিপিং লাইনস। ‘বাংলার শিখা’ জাহাজে বিনা বেতনে এক বছরের জন্য সি টাইম কাটানোর সুযোগ দেয়। মাস শেষে আমার পুরুষ সহকর্মীদের অ্যাকাউন্টে বেতনের টাকা ঢুকত আর নারী ক্যাডেট বলে আমাকে কাজ করতে হয়েছে বিনা বেতনে! ‘তাও তো জাহাজে কাজের সুযোগ তো পেয়েছি’Ñ এই বলে নিজেকে সান্ত্বনা দিতাম। তখন ‘বাংলার শিখা’ দেশের ভেতরে চলাচল করত। বিদেশের বন্দরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। ওই জাহাজে ছিলাম ২০১৫ সাল পর্যন্ত। 

প্রবা : তার মানে সেই প্রথম আপনারা দুই নারী নাবিক পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে সমুদ্রগামী জাহাজে কর্মজীবন শুরু করলেন। তখন পুরুষ সহকর্মীরা কেমন সহযোগিতা করেছেন? 

বিউটি আক্তার : প্রথম জাহাজে উঠে দেখি ভিন্ন এক পরিবেশ। পুরুষ সহকর্মীরা কাজ দিতে চান না। এমনকি জাহাজে হাঁটাচলায় নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এতে নিজের কাজ বুঝে নিতে এবং শেষ করতে সমস্যা হচ্ছিল। এভাবে দুই-তিন মাস যাওয়ার পর ওই সমস্যা কাটে। পুরুষ সহকর্মীদের ধারণা ছিল নারী হিসেবে শারীরিক পরিশ্রমের কাজ আমাকে দিয়ে হবে না। কিন্তু আমি কখনও তা মনে করিনি। কারণ ট্রেনিং তো ভালোভাবেই শেখ করেছিলাম, তাই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। তারপরও নানা বিধিনিষেধ ছিল। পরে কাজ দেখে সহকর্মীরা আস্থায় নিয়েছেন। এখন সমস্যা হচ্ছে না। সমুদ্রে পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার ব্যাপারটা ছিল নারী ক্যাডেটদের জন্য এক অসম যুদ্ধ। এ যুদ্ধে জয়ী হতে পরিবার সব সময় অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। বাবা-মা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা কর্মজীবনের দুর্দিনে সাহস জুগিয়েছে। জাহাজে ক্যাডেটদের মধ্যে নারী-পুরুষ ভেদাভেদ আছে। নারীদের পদমর্যাদা, বেতন-ভাতাদি কম। কিন্তু এসব সমান হওয়া চাই। তাহলে ভবিষ্যতে অনেক নারী এ পেশায় যুক্ত হবেন।

প্রবা : সর্বশেষ যে জাহাজে কর্মরত ছিলেন ওই জাহাজে থার্ড অফিসার হিসেবে আপনার কাজ কী ছিল? 

বিউটি আক্তার : আগেই বলেছিলাম ইন্টার্নশিপ শেষে ক্লাস থ্রি পরীক্ষা দেই। ইন্টার্নশিপ ছাড়া এ পরীক্ষা দেওয়া যায় না। আর এ পরীক্ষা না দিলে অফিসার হওয়া যায় না। পরীক্ষায় পাস ও চাকরি খুঁজতেই সময় চলে গিয়েছিল বছর তিনেক। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজ ‘এমভি বাংলার অর্জন’-এ থার্ড অফিসার (তৃতীয় কর্মকর্তা) হিসেবে যোগ দিলাম। বাংলাদেশে নারী ক্যাডেটদের মধ্যে আমিই প্রথম জাহাজে থার্ড অফিসার পদে নিয়োগ পাই। আমি সর্বশেষ কাজ করি ‘বাংলার জয়যাত্র’ জাহাজে।

থার্ড অফিসার হিসেবে আমার রুটিন কাজের একটি হলো এক বন্দর থেকে অন্য দেশের বন্দরে যাওয়ার আগেই সমুদ্রে নেভিগেশনের মাধ্যমে রুট নির্ধারণ করে পর্যবেক্ষণ করা। আমি রাত-দিন দুই শিফটে চার ঘণ্টা করে আট ঘণ্টা জাহাজের ব্রিজে অবস্থান করে নেভিগেশনের মাধ্যমে সঠিক রুটে জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করতাম। এ জন্য আশপাশের জাহাজগুলোর দিকে নজর রাখা এবং সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া, নিরাপদে বন্দর চ্যানেলে জাহাজ চলাচলে সহায়তা ও ক্যাপ্টেনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, জাহাজের নিরাপত্তা সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ করা, ক্যাপ্টেন থেকে ক্রু পর্যন্ত সবার মাসিক বেতন শিট তৈরি করে কোম্পানি অফিসে পাঠানো, পোর্ট পেপার তৈরি করে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো ইত্যাদি কাজ করতে হতো। মালামাল খালাসের সময়ও টানা আট ঘণ্টা ডিউটি করতে হতো। পণ্য লোডিং-আনলোডিং যথাযথভাবে হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করাও থার্ড অফিসারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এর বাইরে তিন থেকে চার ঘণ্টা ওভারটাইম করতাম। 

প্রবা : পরিবারের সহযোগিতা কেমন পান? সমুদ্র থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ কীভাবে রাখেন? 

বিউটি আক্তার : যখন বন্দরে থাকি তখন স্থানীয় জাহাজ এজেন্টের মাধ্যমে সিম সংগ্রহ করে পরিবারের কথা বলি। আর সাগরে থাকলে জাহাজের ওয়াই-ফাই ব্যবহার করি। কিন্তু ইন্টারনেটের গতি খুবই ধীর। এ কারণে কল বা ভিডিও কল করা যায় না। তবে মেসেজ আদান-প্রদান করা যায়। জাহাজে নারীদের নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যাই নেই। আর শুরুর দিকে নারী ক্যাডেট হিসেবে সাগরে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সামাজিকভাবে কটূক্তি শুনতে হলেও এখন সময় পাল্টেছে। যারা কটূক্তি করতেন তারাই এখন আমাকে নিয়ে গর্ব করেন। সর্বশেষ ‘বাংলার জয়যাত্রা’ জাহাজে চুক্তি অনুযায়ী থার্ড অফিসার হিসেবে মাসিক এক হাজার ৫০০ ডলার বেতন পেতাম। জাহাজের সবাই বাঙালি হওয়ায় রান্না এবং খাবারদাবারও একেবারেই বাঙালি ঘরানার।

প্রবা : পরিবারের কথা মনে পড়ে? 

বিউটি আক্তার : জাহাজ জীবনের রুটিন আলাদা। তবে সমুদ্র সব সময় উত্তাল থাকে না। শান্তও থাকে। তখন পরিবারের কথা মনে পড়ে। যদিও নিজকে বেশি করে কাজে ডুবিয়ে রাখি, যাতে পরিবারকে কম মনে পড়ে। যত কিছুই বলি না কেন, সমুদ্র হচ্ছে যাযাবর জীবন। সাগরের সঙ্গে যুদ্ধ করেই সময় পার করতে হয়। অবসরে গান শুনি, মুভি দেখি, পরিবারের সঙ্গে কথা বলি। 

প্রবা : বিশ্বের কয়টি দেশে নোঙর ফেলেছেন? 

বিউটি আক্তার : ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বের ৩০টি সমুদ্রবন্দর ঘুরেছি। সর্বশেষ ছিলাম ইতালির বন্দরে। গত বছরের জুলাইয়ের শেষে ছিলাম স্পেনে। এর আগে ব্রাজিল, গায়ানা, গ্রেনেডা, মরোক্কো, তুরস্ক, জিব্রাল্টার, লাস পালমাস, জর্জটাউন, সেন্ট জর্জস, জিয়াংজু, হামর্দ, হো চি মিন সিটিসহ বিভিন্ন বন্দরে গিয়েছি। স্মৃতির পাতায় স্মরণীয় বন্দর হয়ে আছে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচিওন, থাইল্যান্ডের শ্রীরাচা, ভারতের গোয়া ও গ্রেনাডার সেন্ট জর্জস বন্দর। 

প্রবা : সমুদ্র উত্তাল থাকলে কীভাবে সামাল দেন? তখন মনের অবস্থা কেমন থাকে? 

বিউটি আক্তার : দক্ষিণ চীন সাগর, ইন্ডিয়ান ওশান আর বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরে ডিউটি করছিলাম রাতে। ১২টার পর হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হয়ে গেল। প্রবল উচ্চতায় ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকল জাহাজে। একপর্যায়ে জাহাজের গতি শূন্যে নেমে গেল। জাহাজের ভেতরে থাকা জিনিসপত্র তছনছ হয়ে গেল। এরই মধ্যে হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল জাহাজের ইঞ্জিন। ইঞ্জিন বন্ধ হওয়া মানে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ হারানো। তখন কেবলই মনে হচ্ছিল আর বুঝি ভোর দেখব না। মা-বাবার সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলার জন্য ইচ্ছে হচ্ছিল। কিন্তু উপায় ছিল না। বাকি কয়েক ঘণ্টা ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়েছে। প্রায় তিন ঘণ্টা পর পুনরায় ইঞ্জিন সচল করতে সক্ষম হন সহকর্মীরা। তখন বেঁচে যাই আমরা। সর্বশেষ ‘বাংলার জয়যাত্রা’ জাহাজেও বৈরী আবহাওয়ার মুখোমুখি হয়েছিলাম। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে যাচ্ছিলাম। এমন সময় ঢেউয়ের গতির কারণে জাহাজ ২০-২৫ ডিগ্রি কাত হয়ে যায়। তখন সবকিছু ঠিক রেখে জাহাজ নিয়ে সামনে যাওয়া ছিল রীতিমতো কঠিন। তবে নাবিক জীবনে এটি স্বাভাবিক ঘটনা। এটাই জলজীবনের বাস্তবতা। 

প্রবা : আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? 

বিউটি আক্তার : তৃতীয় কিংবা দ্বিতীয় অফিসার হয়ে থাকতে চাই না। ক্যাপ্টেন হিসেবে জাহাজ চালাতে চাই। যেদিন নারী ক্যাপ্টেন হিসেবে জাহাজ চালাতে পারব উত্তাল সমুদ্রে, আমার স্বপ্ন সেদিন সত্যি সত্যি পূরণ হবে। আমি হতে চাই বাংলাদেশের প্রথম নারী ক্যাপ্টেন। 

প্রবা : আবার কবে সমুদ্রে যাবেন?

বিউটি আক্তার : এই তো, সপ্তাহখানেকের মধ্যেই। একটি বিদেশি কোম্পানির ‘হাফনিয়া নানজিং’ নামে ট্যাংকার জাহাজে ছয় মাসের কাজের চুক্তি করেছি। দ্রুতই নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে দেশ ছাড়তে হবে। 

প্রবা : ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে পরিকল্পনা কী? সংসার জীবন শুরু করবেন কবে? 

বিউটি আক্তার : পরিবার থেকে বাবা-মা বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু আমি তো চুক্তি করলাম জাহাজে যাওয়ার। এবারের চুক্তি শেষ করে ফিরি, তখন এসব নিয়ে চিন্তা করব।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা