প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২২ ১২:১৫ পিএম
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২২ ১৫:১২ পিএম
স্টারশিপের মতো এসএলএস পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয়। ছবি : সংগৃহীত
নাসার স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (এসএলএস) রকেট ১৬ নভেম্বর সফলতার সঙ্গে ওরিয়ন স্পেসক্র্যাফটকে বায়ুমণ্ডলের বাইরে পৌঁছে দিয়েছে। নাসা বলছে, এখন পৃথিবীর বাইরে পাড়ি জমানো সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট এটি। একই সঙ্গে জোর গুঞ্জন রয়েছে, ইলন মাস্কের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স এ বছরই তাদের তৈরি রকেট স্টারশিপকে পরীক্ষামূলকভাবে অরবিটালে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যদি স্পেসএক্সের পরীক্ষা সফল হয়, তবে বছর শেষে কোন রকেটের কপালে জুটবে সবচেয়ে শক্তিশালী রকেটের তকমা—নিউজ উইকের প্রতিবেদন থেকে প্রতিদিনের বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।
তবে উভয় রকেটের সক্ষমতাগত পার্থক্য থাকলেও এদের মিশন একই—চাঁদে ও মঙ্গলে কার্গো অথবা নভোচারী পাঠানো বা এর থেকেও দূরে, গভীর মহাকাশে।
এসএলএস নাকি স্টারশিপ, কে পুনর্ব্যবহারযোগ্য?
এসএলএসের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা, এটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয়। স্টারশিপ রকেট যেখানে বারবার ব্যবহার করা যায়, সেখানে এসএলএস কেবল একবারই ব্যবহার করা যায়।
কে বড়—এসএলএস নাকি স্টারশিপ?
এসএলএসের উচ্চতার থেকে স্টারশিপের উচ্চতা বেশি। নাসার তথ্যমতে, এসএলএসের উচ্চতা ৩২২ ফিট। সেখানে স্টারশিপের উচ্চতা ৩৯৪ ফিট।
এসএলএস নাকি স্টারশিপ, কার ইঞ্জিনের সক্ষমতা বেশি?
এসএলএসের ইঞ্জিনের সক্ষমতার থেকে স্টারশিপের ইঞ্জিনের সক্ষমতা বেশি। এসএলএস (ব্লক-১, ভবিষ্যতে ব্লক-২, ৯৫ লাখ পাউন্ড চাপ তৈরি করতে পারবে) যেখানে ৮৮ লাখ পাউন্ড সমপরিমাণ চাপ তৈরি করতে পারে সেখানে স্টারশিপ তৈরি করতে পারে ১ কোটি ৭০ লাখ পাউন্ড চাপ।
কোন রকেটের পেলোড বহন করার ক্ষমতা বেশি?
গভীর মহাকাশে এসএলএসের (ব্লক-১) পেলোড সক্ষমতা ২৭ মেট্রিক টন বা ৫৯ হাজার ৫০ পাউন্ড (ব্লক-২-এর পেলোড সক্ষমতা হবে ৪৬ মেট্রিক টন বা ১ লাখ ১ হাজার ৪০০ পাউন্ড)। তবে স্পেসএক্স বলছে, লো আর্থ অরবিটে স্টারশিপের পেলোড সক্ষমতা ১০০ মেট্রিক টনের বেশি। নাসার মুখপাত্র নিউজ উইককে বলেছেন, লো আর্থ অরবিটে এসএলএস ব্লক-১-এর ৯৫ মেট্রিক টন পর্যন্ত পেলোড বহনের সক্ষমতা রয়েছে।
মিশনে খরচাপাতি, কোন রকেট বেশি সাশ্রয়ী?
স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক আত্মবিশ্বাসী ভবিষ্যতে এসএলএস থেকেও স্টারশিপের মিশন পরিচালনার খরচ অনেক কম হবে। প্রতিটি স্টারশিপ লঞ্চের খরচ ১ কোটি ডলারের নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। যদিও ঠিক কীভাবে এমনটা সম্ভব, তা স্পষ্ট নয়। কারণ এর থেকে অনেক ছোট রকেট ফ্যালকন-৯ এখন স্পেসএক্সের সার্ভিসে রয়েছে। এর প্রতিটি উৎক্ষেপণে অপারেশনাল খরচ ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
তবে এসএলএসের প্রতি লঞ্চে কী পরিমাণ খরচ হয়, তা স্পষ্ট নয়। তবে পুরো আর্টেমিস প্রকল্পে খরচ হতে যাচ্ছে ৪১০ কোটি ডলার। নাসার পরিদর্শক পল মার্টিনের বরাতে এমনটাই জানিয়েছে আরস টেকনিকা।
নাসার আর্টেমিস-১ মিশন
বায়ুমণ্ডলের বুক চিড়ে এসএলএস রকেটে চেপে মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছে নাসার স্পেসক্র্যাফট ওরিয়ন। এখন পর্যন্ত পুরো মিশন নাসার পরিকল্পনামাফিক চললেও আর্টেমিস প্রজেক্টকে পুরোপুরি সফল বলতে গেলে অপেক্ষা করতে হবে আরও বেশ কিছুদিন।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা নাসার ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য বলছে, আর্টেমিস-১-এর পুরো মিশনের সময় ২৫ দিন ১১ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট। এসএলএস উৎক্ষেপণের তারিখ ১৬ নভেম্বর ও ক্যাপসুল ওরিয়ন পৃথিবীতে ফিরে আসবে ১১ ডিসেম্বর। পুরো মিশনে ওরিয়ন পাড়ি দেবে ১৩ লাখ মাইল। পৃথিবীতে প্রবেশের সময় ওরিয়নের গতি হবে ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৫০০ মাইল (ম্যাক ৩২)।