পুরুষ ইঁদুরের কোষ থেকে ডিম তৈরি করে চমক লাগিয়ে দিয়েছেন জাপানি বিজ্ঞানী কাতসুহিকো হায়াশি। ছবি: সংগৃহীত
এ পর্যন্ত মানব জাতির ইতিহাসে শুধু নারীরাই সন্তান জন্ম দিয়ে আসছে। শুধু মানুষ নয়, অন্য জীবিরের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তবে ধর্মীয় ইতিহাসে বা রূপকথায় এর ব্যতিক্রম কিছু গল্প আছে।
কিন্তু প্রযুক্তির কল্যাণে প্রকৃতির এই চিরায়ত নিয়ম আর হয়তো অটল থাকছে না। পুরুষ বা পুরুষ ছাড়া নারীর এককভাবে সন্তান জন্মদানের সম্ভাবনা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।
জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল অধ্যাপক কাতসুহিকো হায়াশির এক গবেষণা মানুষকে এই স্বপ্ন দেখাচ্ছে। লন্ডনের ক্রিক ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক এক কনফারেন্সে হায়াশি জানান, তিনি পুরুষ ইঁদুরের কোষ থেকে ডিম তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এই পদ্ধতি এখনও বেশ প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে আগামী ১০ বছরে এটা বেশ পরিণত হতে পারে। তখন মানুষ বা অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রও এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাবে। অর্থাৎ এ পদ্ধতির মাধ্যমে সমলিঙ্গের দম্পতিদের সন্তান লাভের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
হায়াশি নিজের গবেষণা নিয়ে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধও লিখেছেন। বিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত জার্নাল দ্য নেচারে গবেষণাটি শিগগির প্রকাশিত হবে।
পুরুষ ইঁদুরের কোষ থেকে ডিম তৈরির জন্য প্রথমে পুরুষ ইদুরের একটি স্কিন সেল সংগ্রহ করা হয়। তারপর তাকে স্টেম সেলে রূপান্তরিত করা হয়। অর্থাৎ সেলটিকে যে কোনো কোষে রূপান্তরিত করা যাবে।
আমরা সবাই জানি, পুরুষের সেলে এক্স ও ওয়াই ক্রোমোজম রয়েছে। হায়াশির গবেষক দল সেখান থেকে ওয়াই ক্রোমোজমটি আলাদা করে ফেলে। তারপর সেখনে আরেকটি এক্স কোমোজমন তৈরি করে। ফলে দুটি এক্স ক্রোমোজমন পাওয়া যায়। এই সমন্বয়ের ফলে স্টেম সেল তৈরি করা সম্ভব হয়। আর এই স্টেম সেল থেকে তৈরি করা যায় বহু বহু আকাঙ্ক্ষিত সেই ডিম।
অন্য বিজ্ঞানীরা কী বলছেন
হায়াশির গবেষণা এতটাই নতুন যে, এই বিভাগে অন্য বিশেষজ্ঞরাও এই পদ্ধতির গন্তব্য বা সম্ভাবনা নিয়ে দ্বিধামুক্ত হতে পারছে না। তারা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
হার্ভাড মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক জর্জ ডেলি বলেন, হায়াশির গবেষণা এখনও প্রকাশিত হয়নি। তাই আমার পড়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু তার মুখ থেকে শোনে যা বোঝলাম তা সত্যিই চমকপ্রদ। তবে তা ইঁদুরের ক্ষেত্রে যতটা সহজে প্রয়োগ করা গেছে মানুষের ক্ষেত্রে বোধ হয় এতটা সহজ হবে না। কারণ মানুষের প্রজনন প্রক্রিয়া বা তার গঠন বেশ জটিল। এ সম্পর্কে আমাদের এখনও পুরোপুরি জ্ঞান নেই।
তবে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেম সেল বিজ্ঞানী আমান্দার ক্লার্ক হায়াশির ধারণা নিয়ে দারুণ উৎসাহিত। তিনি মনে করেন, এই প্রযুক্তি মানুষের গৎবাঁধা ধ্যান-ধারণা ভেঙে দেবে। এটা এলজিবিটিকিউপ্লাস কমিউনিটির জন্য আশার আলো দেখাচ্ছে। এই প্রযুক্তি হয়তো এখনই মানুষ ব্যবহার করতে পারবে না। তবে আমার মনে হয়, একদিন এটা মানুষের জন্য একটি সাধারণ প্রযুক্তিতে পরিণত হবে।
নিজের কাজের জন্য জাপানি বিজ্ঞানী হায়াশির সারা দুনিয়ায় খ্যাতি রয়েছে। বিবিসিকে দেওয়ার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সব ঠিক থাকলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে মানুষ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে। নারী, পুরুষ বা সমলিঙ্গের দম্পতিরা এই প্রযুক্তি থেকে উপকৃত হবে।
সূত্র: বিবিসি
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.