দ্য লাস্ট অব আস টেলিভিশন সিরিজের দৃশ্য। ছবি : সংগৃহীত
কিছুদিন আগেই এইচবিওর জম্বি জনরার টেলিভিশন সিরিজ ‘দ্য লাস্ট অব আস’ রোমাঞ্চিত
করেছিল সিরিজপ্রেমী দর্শকদের। সেখানে দেখানো হয়েছিল, এক বিশেষ প্রজাতির ছত্রাক আক্রমণে
মানুষ জম্বি হতে শুরু করে।
তবে স্বস্তির জায়গাটা ছিল, মানুষের শরীরের তাপমাত্রায় সত্যিকার অর্থে প্রায়
সব ক্ষতিকর ছত্রাকের বেঁচে থাকার কথা নয়। এমনকি উদ্ভিদ থেকে মানবদেহে ছত্রাক সংক্রমণের
ঘটনাও গবেষকদের জানা ছিল না। কিন্তু এ স্বস্তির জায়গাটি নষ্ট হয়ে গেছে, ‘দ্য জার্নাল
অব মেডিকেল মাইকোলজি কেস রিপোর্টস’-এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে।
আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে ভারতের কলকাতার এক ব্যক্তির শরীরে বিরল প্রজাতির
উদ্ভিদের ছত্রাক শনাক্ত হয়েছিল। প্রাণঘাতী হওয়ায় এটিকে বলা হচ্ছে কিলার ফাঙ্গাস। একই
সঙ্গে এটিই ছিল চিকিৎসা ইতিহাসে প্রথম কোনো উদ্ভিদের ছত্রাক মানবদেহকে আক্রান্তের
ঘটনা।
এতে নতুন করে যে ভয়াবহ দিকটি ফুটে
উঠেছে তা হলো, উদ্ভিদের সংস্পর্শে এসেও মানবদেহে ছত্রাকজনিত রোগ বাসা বাঁধতে পারে।
আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেও একজন মাইকোলজিস্ট (ছত্রাকবিদ)। পেশাগত কারণেই তিনি
মাশরুম ও ছত্রাক নিয়ে গবেষণা করতেন।
সেই ব্যক্তির চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে কিছু রিপোর্ট সামনে এসেছে। সেখান থেকে
জানা গেছে, তার বয়স ছিল ৬১ বছর। বেশ কিছুদিন ধরেই তার গলা বসে যেতে থাকে এবং তিন
মাস তার কাশি ও গলার সমস্যা লেগেই ছিল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়ায় যে তিনি নিজে
ঠিকমতো খেতেও পারছিলেন না।
চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, রোগীর ডায়াবেটিস, এইচআইভি, কিডনি বা কোনো
ক্রনিক ডিজিজের ইতিহাস নেই। রোগী পেশায় একজন উদ্ভিদ মাইকোলজিস্ট। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি
ছত্রাকসংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে কাজ করছেন, তার একাধিক গবেষণাপত্রও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই রোগীর চিকিৎসকরাও জানিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির
গলায় একটি ফোঁড়াও ধরা পড়ে; যা পরে অপসারণ করতে হয়। পরবর্তীতে এক্স-রে করা হলে আর অস্বাভাবিক
কিছু ধরা পড়েনি।
যদিও রোগীকে অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের কোর্স দেওয়া হয়েছিল। গবেষকরা জানিয়েছেন,
‘টানা দুই বছরের ফলোআপে রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন এবং আবারও তার দেহে সংক্রমণের কোনো প্রমাণ
মেলেনি।’
এ-সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটির সহলেখক ও রোগীর চিকিৎসায় ভূমিকা রাখা কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের গবেষক ড. সোমা দত্ত ও ডা. উজ্জীবনী রায় গবেষণাপত্রটিতে লিখেছেন, ‘কন্ড্রোস্টেরিয়াম পারপিউরিয়াম হলো উদ্ভিদছত্রাক যা বিশেষ করে গোলাপগাছের পাতার রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী। এই প্রথম এ ছত্রাক মানুষের মধ্যে রোগ সৃষ্টি করেছে; যা এককথায় বিরল। এ ঘটনাটি পরিবেশগতভাবে উদ্ভিদের ছত্রাকের মানুষের মধ্যে রোগ সৃষ্টির শঙ্কা আরও প্রবল করে তুলেছে।’
সূত্র : সায়েন্স ডাইরেক্ট
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.