প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৩ ১২:২৯ পিএম
আপডেট : ১৭ জুন ২০২৩ ১৯:০৪ পিএম
সংবাদ সম্মেলনে নিউরালিংক ডিভাইস স্থাপনের রোবট দেখাচ্ছেন ইলন মাস্ক। ছবি : সংগৃহীত
ব্রেন-চিপ স্টার্টআপ কোম্পানি নিউরালিংক প্রত্যাশা করছে চলতি বছরই মানব মস্তিষ্কে
তাদের ডিভাইসের পরীক্ষামূলক স্থাপন শুরু করতে পারবে। প্যারিসে শুক্রবার (১৬ জুন) ভিভাটেক ইভেন্টে বক্তব্য দেওয়ার সময় এমনটাই বলেছেন
কোম্পানিটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক।
বক্তব্যে মাস্ক নিশ্চিত করেননি ঠিক কত জন রোগীর মস্তিষ্কে নিউরালিংক ডিভাইস
স্থাপন করা হবে এবং তা কয় দিনের জন্য। এর আগে রয়টার্সের এক ওয়েবকাস্টে
একজন বলেছিলেন প্যারাপ্লেজিক রোগীর দেহে ডিভাইস স্থাপনের পরিকল্পনা করছে নিউরালিংক।
কোম্পানিটিও সম্প্রতি জানিয়েছে, তারা আপাতত দুটি অ্যাপ্লিকেশনের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। যারা দেখতে পায় না, এমনকি জীবনে কোনো দিনই যারা দেখতে পাননি অর্থাৎ জন্মান্ধ। তাদের দৃষ্টিশক্তি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম অ্যাপ্লিকেশন। আরেকটি অ্যাপ্লিকেশন তাদের জন্য, যারা প্যারালাইসিসের কারণে নিজের পেশিও নড়াতে পারেন না। তারাও অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে কম্পিউটার, মোবাইলের মতো স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন।
এরই মধ্যে শূকর ও বানরের মস্তিষ্কে সফলতার সঙ্গে ডিভাইসটি স্থাপন করতে
পেরেছে কোম্পানিটি। এই ডিভাইসের মাধ্যমে বানর পর্যন্ত কম্পিউটারে গেম খেলতে সক্ষম হয়েছে।
যদিও গবেষণায় শূকর ও বানরের ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়মের তোয়াক্কা না করার অভিযোগ রয়েছে
কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। নিউরালিংক বরাবরই তা অস্বীকার করেছে।
গত মাসে কোম্পানিটি এক টুইট বার্তায় জানায়, মানুষের দেহে প্রথম ক্লিনিক্যাল
ট্রায়ালের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) অনুমোদন পেয়েছে তারা।
এফডিএ রয়টার্সের কাছে মস্তিষ্কে ডিভাইস স্থাপন ও সার্জিক্যাল রোবট পরীক্ষার জন্য ব্যবহার
করার অনুমোদনের বিষয়টি স্বীকার করলেও বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেছে।
যদিও এর আগে বেশ কয়েকবারই মানব মস্তিষ্কে ইমপ্ল্যান্টের এমন সময়সীমা
আগেও দিয়েছেন ইলন মাস্ক। গত বছরের শেষ দিকে নিউরালিংকের ‘শো অ্যান্ড
টেল’ অনুষ্ঠানে
বলেছিলেন, ছয় মাসের মধ্য মানব ইমপ্ল্যান্ট হতে যাচ্ছে। পরে মার্চে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর
বরাতে জানা যায়, সে সময় এফডিএ নিউরালিংকে অনুমোদন দেয়নি।
এদিকে এফডিএর অনুমোদনের পর নিউরালিংকের অগ্রযাত্রায় বাড়ছে কোম্পানির
দাম। প্রাইভেট স্টক ট্রেডের ওপর ভিত্তি করে ইলন মাস্কের এই ব্রেইন মেশিন ইন্টারফেস
কোম্পানিটির মূল্য ৫০০ কোটি ডলার।
এই কোম্পানিটি নিয়ে মাস্কের পরিকল্পনা সুদূরপ্রসারী। ২০২০-এর ইভেন্টে
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এর মালিক ইলন মাস্ক জানান, ভবিষ্যতে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলা,
ব্রেন ড্যামেজ, হতাশা, উদ্বেগ ও আসক্তি এমনকি নিউরো-সংক্রান্ত বহু সমস্যার সমাধান
করবে নিউরালিংক।
একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ভবিষ্যতে নতুন কোনো ভাষা শেখার ক্ষেত্রে
কিংবা কোনো দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে নিউরালিংক ডিভাইস মুহূর্তে তা মস্তিষ্কে আপলোড
করে দেবে। এমনকি ব্রেনকে কপি করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদী মাস্ক।
নিউরালিংক মূলত ব্রেন মেশিন ইন্টারফেস (বিএমআই) বা ব্রেন কম্পিউটার
ইন্টারফেস (বিসিআই) প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে। এ ধরনের প্রযুক্তিতে মানব মস্তিষ্কের সঙ্গে
সরাসরি কম্পিউটারের সংযোগ করে দেওয়া হয়। ফলে শুধু মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়ে কম্পিউটার
ব্যবহার করা সম্ভব।
সূত্র : এনডিটিভি