খুলনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:৪৯ এএম
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ফাইল ফটো
ক্যানসার চিকিৎসায় খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে একটি বিভাগ থাকলেও শুরু থেকেই এটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। রোগীদের কেমো দেওয়া হলেও নেই রেডিওথেরাপির ব্যবস্থা। ২০১২ সালে খুমেকের ক্যানসার ওয়ার্ডের জন্য আনা হয় প্রায় ১০ কোটি টাকা দামের অত্যাধুনিক লিনিয়ার অ্যাকসেলারেটর রেডিওথেরাপি মেশিন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটি স্থাপন করা হয়নি। স্থাপনের জন্য রেডিয়েশন নিয়ন্ত্রিত বাংকারও তৈরি করা হয়নি। ২০১৬ সালের দিকে যেনতেনভাবে একটি বাংকার তৈরি করা হলেও বিশেষজ্ঞরা সেখানে এটি স্থাপনে সম্মতি দেননি। এ অবস্থায় ১০ বছর ধরে হাসপাতালের প্রবেশমুখে বাক্সবন্দি হয়ে পড়ে আছে রেডিওথেরাপি মেশিনটি।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সম্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ্জামান বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের জন্য কোনো রকম সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই খুমেক হাসপাতালে ১০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়। কিন্তু এটি স্থাপন করা হয়নি। এতদিনে এর গুণগত মানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
ক্যানসার বিভাগটির দায়িত্বে রয়েছেন খুমেকের রেডিওথেরাপি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুকিতুল হুদা। তিনি জানান, বিভাগটি স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। তা ছাড়া মেশিন স্থাপন করে চালুর যে সফটওয়্যার দরকার, তা-ও সরবরাহ করা হয়নি। লিনিয়ার অ্যাকসেলারেটর রেডিওথেরাপি মেশিনটির সে সময়ই দাম ছিল প্রায় ১০ কোটি টাকা। আর চালু করতে যে সফটওয়্যার দরকার, তার দাম প্রায় ৩ কোটি টাকা। তা ছাড়া মেশিনটি স্থাপনের জন্য যে বাংকার (ভবন) দরকার, তা-ও নেই। যেটি তৈরি করা হয়েছিল, সেটি ছিল অপরিকল্পিত। মেশিনটি মূলত মহাখালী ক্যানসার ইনস্টিটিউটের জন্য কেনা হয়। পরে সেটি খুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু এটি স্থাপনের জন্য যে ভবন প্রয়োজন, সেটি এখানে নেই। পরে মেশিনটি ফেরত পাঠানোর জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়। সেই থেকে আর কোনো অগ্রগতি নেই। তা ছাড়া এটি যে তাপমাত্রায় সংরক্ষণের দরকার ছিল তা-ও হয়নি। তাই এটির কার্যকারিতা কতটুকু রয়েছে, সেটি আসলে বিশেষজ্ঞদের পক্ষেই বলা সম্ভব।
খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, ক্যানসার ইউনিটের জন্য ১০ বছর আগে দেওয়া যন্ত্রটি আর চালু করা সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়ারেন্টির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। অত্যন্ত দামি এসব মেশিন ফেলে রেখে সরকারি অর্থের অপচয় করা হয়েছে।