× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সুবিধা পেয়ে পেয়ে বড় ঋণখেলাপি

জয়নাল আবেদীন

প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:৩৮ পিএম

সুবিধা পেয়ে পেয়ে বড় ঋণখেলাপি

একসময় রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডকে (আরএসআরএম) বিবেচনা করা হতো দেশের প্রথম সারির ইস্পাত ব্র্যান্ড হিসেবে। এখন একাধিক ব্যাংকের প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ডুবতে বসেছে কোম্পানিটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবসায়িক ভুল পরিকল্পনা, অসৎ উদ্দেশ্যে ঋণগ্রহণের কারণে আরএসআরএম ইস্পাত খাতের ব্যবসা যেমন হারিয়েছে, তেমনি ১০টি ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও বিপদগ্রস্ত করেছে।

ঋণ পুনর্গঠন, দুই শতাংশে দশ বছরের জন্য ঋণ পুনঃতফসিল, করোনার কারণে কিস্তি না দিয়েও নিয়মিত সুদ মওকুফের মতো সুবিধা পাওয়ার পরও খেলাপি গ্রাহক আরএআরএম। অর্থঋণ আদালতে ঝুলছে হাজার কোটি টাকার মামলা। সুদে-আসলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আরএসআরএমের কাছে শুধু জনতা সোনালী ব্যাংকের পাওনা হাজার ৮৮০ কোটি টাকা, যা প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণের ৭৫ শতাংশের বেশি।

জনতা ব্যাংক লালদীঘি শাখার পাওনা গ্রুপটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেডের ৪০৯ কোটি টাকা, মেসার্স রতনপুর শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের ৩১৩ কোটি টাকা এসএম স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের ৪৮২ কোটি টাকা। বিপুল ঋণের বিপরীতে জনতা ব্যাংকের কাছে মাত্র ৩১ দশমিক ১৬ একর জমি বন্ধক রয়েছে, যা পাওনার তুলনায় খুবই সামান্য।

অন্যদিকে মেসার্স মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেডের কাছে সোনালী ব্যাংকের পাওনা ৪৬১ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং রতনপুরস্টিল লিমিটেডের কাছে পাওনা ২১৪ কোটি টাকা। এরই মধ্যে সোনালী ব্যাংক আরএসআরএম গ্রুপের বিরুদ্ধে ১৫টি সিআর মামলা করেছে। মডার্ন স্টিলসের বিরুদ্ধে ২০১৭ ২০১৮ সালে ১১টি এবং রতনপুর স্টিলসের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে চারটি সিআর মামলা দায়ের করে সোনালী ব্যাংক। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে কোম্পানির চট্টগ্রাম বায়েজিদ এলাকায় গ্রুপটির কারখানাসহ ১০০ শতক জমি নিলামে তোলে।

বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের চট্টগ্রাম লালদীঘি শাখার প্রধান (ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার) ইয়াকুব মজুমদার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘কোর্টের মাধ্যমে কিছু টাকা ফেরত দিয়েছে গ্রুপটি। তবে পরিমাণ খুবই সামান্য। এর বাইরেও ব্যাংকের পক্ষ থেকে সমঝোতার মাধ্যমে আমরা টাকা আদায়ের চেষ্টা করছি। কারণ মামলা-হামলার মাধ্যমে টাকা আদায় করা যায় না। শুধু ভয় দেখানো যায়।

ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৪ সাল থেকে চট্টগ্রামে শিপ ব্রেকিং ইস্পাত খাতে ব্যবসা শুরু করে নোয়াখালীর সেনবাগ এলাকার মাকসুদুর রহমান। শুরু থেকে ধীরগতিতে ব্যবসা করলেও ২০০৪-০৫ সালের দিকে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে বড় অঙ্কের ব্যাংকঋণ নেন তিনি। দীর্ঘদিনের ব্যবসার অভিজ্ঞতা ব্যাংকের বড় কর্তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে সহজে মোটা অঙ্কের ঋণ সুবিধা পেয়ে যায় আরএসআরএম। ঋণ নেওয়ার প্রথম কয়েক বছর ব্যাংকের পাওনা যথাসময়ে পরিশোধ করলেও ২০১১-১২ সালের পর শুরু হয় গড়িমসি। এর মধ্যে ঋণ গ্রহণের এক দশক পার হলেও ঋণের টাকা ফেরত পায়নি অনেক ব্যাংক।

জনতা সোনালী ছাড়াও রতনপুর শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের নামে নেওয়া টাকা ফেরত পায়নি গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির কাছে তাদের পাওনা ৫৬ কোটি টাকা। ২০০৭ সালে ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা নেয় মেসার্স মডার্ন স্টিল রি-রোলিং মিলস। এরপর ঋণটি খারাপ হলে সরকারের বড় ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধা নেয় প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৪ সালে আবারও সময় বাড়ানো হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির কাছে ট্রাস্ট ব্যাংক সিডিএ শাখার পাওনা ৬০ কোটি টাকা। টাকা পাওনা রয়েছে লংকাবাংলা ফিন্যান্সেরও।

প্রাইম ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ২০১৩ সালে ঋণ সুবিধা নেয় রতনপুর গ্রুপের এসএম স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড। বর্তমানে এসএম স্টিলের কাছে প্রাইম ফিন্যান্স চট্টগ্রাম শাখার পাওনা ২৪ কোটি টাকা। যার পুরোটাই শ্রেণীকৃত হয়ে রয়েছে। রতনপুর শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে ১৫০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের। দীর্ঘদিন ব্যাংকটির জুবিলী রোড শাখা থেকে পুরোনো জাহাজ আমদানির জন্য ঋণ সুবিধা নিলেও কয়েক বছর ধরে ঋণ পরিশোধে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির কর্মকর্তা। ছাড়াও রতনপুর গ্রুপের কাছে রূপালী ব্যাংক, প্রিমিয়ার লিজিং বিডি ফিন্যান্সের বড় অঙ্কের পাওনা রয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে বিডি ফিন্যান্স প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধারদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে একটি এনআই অ্যাক্ট মামলা দায়ের করেছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা