সিলেট নগরীতে ঢাকনা ভাঙা বক্স ড্রেনগুলোর পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন পথচারীরা। সাবধানে চলতে হয় যানবাহনকেও। প্রবা ফটো
সিলেট নগরীতে ঢাকনা ভাঙা বক্স ড্রেনগুলোর পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা। এর আগে এমন ভাঙা স্থান দিয়ে ড্রেনে পড়ে হতাহতের নজির রয়েছে। ২০২০ সালের ডিসম্বরে আম্বরখানা এলাকায় ড্রেনে পড়ে রডের আঘাতে মারা যান কবি আব্দুল বাসিত।
নগরীর ব্যস্ততম এলাকা সোবহানীঘাট ও মেন্দিবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, ভাঙা জায়গাগুলোয় কোনো ধরনের নিরাপত্তাবেষ্টনী নেই। বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে সোবহানীঘাটে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। পথচারীরা সব সময় আতঙ্ক নিয়ে ওই এলাকা দিয়ে চলাফেরা করছেন।
ওই এলাকার যন্ত্রাংশ বিক্রেতা সোয়েব আহমদ বলেন, ‘প্রায় এক মাস আগে ঢাকনা ভেঙেছে সিটি করপোরেশনের লোকজন। সুরক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’ কবি বাসিতের মতো আর কোনো প্রাণহানি চান না বলে এলাকাবাসী জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাজের সুবিধার জন্য বক্স ড্রেনগুলোর ঢাকনা মাঝে মাঝে ভাঙা হয়েছে। ফলে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সহজে ড্রেনের ভেতরে নেমে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে পারেন। কিন্তু গর্তগুলো দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে নিরাপত্তবেষ্টনী বা ঢাকনা দেওয়ার দরকার থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। এতে ঝুঁকিতে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা।
করিম মিয়া নামে এক চা বিক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মানুষ পড়লে বাঁচবে না মরবে সিটি করপোরেশনকে তা কে বোঝাবে? আমাদের কথা তো আর তারা আমলে নেবে না।’
সোবহানীঘাট এলাকায় বক্স ড্রেনের দায়িত্বে রয়েছেন সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী মো. ইসমাঈলুর রহমান। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘বক্স ড্রেনের ভেতরে ময়লার স্তূপ জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। সহজে ময়লা পরিষ্কার করার সুযোগ থাকলে আর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সুবিধার্থেই এটা করা হয়েছে।’ তবে এখানে বেষ্টনী দেওয়া উচিত ছিল স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘শিগগিরই নিরাপত্তাবেষ্টনীর ব্যবস্থা করব।’
২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর নগরীর জনবহুল আম্বরখানা এলাকায় সিসিকের নির্মাণাধীন ড্রেনে পড়ে প্রাণ হারান কবি ও ছড়াকার আব্দুল বাসিত। তখন সিটি করপোরেশনকে দায়ী করেন সবাই। নিহত কবির পরিবাররকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেন ক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন নামে একটি সংগঠনের নেতাকর্মীার। বিভিন্ন মহল থেকে নিন্দা জানানো হয়। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো গুরুত্বই দেয়নি বলে সমালোচনা করেন নগরবাসী। ওই সমালোচনায় কান দেন না সিটি করপোরেশনের লোকজন।
এ ব্যাপারে সিটির প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা যাতে ড্রেনের ভেতর সহজে পরিষ্কার করতে পারেন সে জন্য এটা করা হয়েছে। তবে খুব দ্রুত এগুলোর চারপাশে লোহার রড দিয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী দেওয়া হবে।’
সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন হলো জনগণের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
২০০২ সালে গঠিত ৪২ ওয়ার্ডের এই শহর নানা সমস্যায় জর্জরিত। যানজট, ধুলা-ধোঁয়া, উন্নয়নের চাপে সারা বছর রাস্তাঘাটের বিভিন্ন স্থানে খোঁড়াখুঁড়ি নিত্যদিনের চিত্র। তা ছাড়া ফুটপাথ বেদখল, যত্রতত্র পার্কিং, অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট ইত্যাদি সমস্যা তো আছেই। এ পরিস্থিতিতে সহজে সমাধান করা যায় এমন সমস্যাগুলোর প্রতি সিটি করপোরেশনের অধিক মনোযোগী হওয়া দরকার বলে মতামত দিয়েছেন নগরবাসী।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.