× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

তিন প্রকল্পের ‘এক্সিট প্ল্যান’ তৈরি করছে ইসি

হুমায়ূন কবীর

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:৩৯ পিএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) বর্তমানে তিনটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এগুলো হলো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম), আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং অ্যাক্সেস টু সার্ভিস (আইডিইএ) দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্প এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালীকরণ (এসসিডিইসিএস) প্রকল্প।

গত জানুয়ারি পর্যন্ত তিনটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি ঘটেছে ইভিএম প্রকল্পে। এ প্রকল্পে বাস্তব অগ্রগতি ঘটেছে ৯৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। সবচেয়ে কম বাস্তব অগ্রগতি ১৭ দশমিক ৬১ শতাংশ ঘটেছে আইডিইএ-২ প্রকল্পে। এসসিডিইসিএস প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। 

সম্প্রতি এ তিন প্রকল্পেরই আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতির হার বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এসব প্রকল্প ইসির নিজস্ব সম্পাদনায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এক্সিট প্ল্যান প্রস্তুত করা হচ্ছে। সম্প্রতি প্রকল্প তিনটির বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত সভায় বিস্তারিত আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় আইডিইএ-২ প্রকল্পের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতির বিষয়ে জানানো হয়, প্রকল্পটি ডিসেম্বর ২০২০ থেকে নভেম্বর ২০২৫ মেয়াদে বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১৮০৫০৯ লাখ টাকা।

২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিপিতে প্রকল্পের অনুকূলে মোট সংশোধিত বরাদ্দ ৪৫২২১ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পটির অনুকূলে মোট ব্যয় ৪১৪৯.৫৯ লাখ টাকা, যা এডিপি বরাদ্দের ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের অনুকূলে ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ১২৭৬০.৫১ লাখ টাকা, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৭ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত বাস্তব অগ্রগতি ১৭ দশমিক ৬১ শতাংশ।

আইডিইএ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে নতুন করে তিন কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড দেওয়ার কথা। এতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রবাসেই ভোটার করে এনআইডি দেওয়ার বিষয়টিও যুক্ত রয়েছে।

নির্বাচন ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগের লক্ষ্যে ইভিএম ব্যবহার প্রকল্পের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতির বিষয়ে সভায় জানানো হয়, প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৮২৫৩৪ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিপিতে প্রকল্পের অনুকূলে মোট বরাদ্দ ২৮১৯৯ লাখ টাকা।

২০২৩ অর্থবছরে জানুয়ারি পর্যন্ত ইভিএম প্রকল্পের অনুকূলে মোট ব্যয় ৭৮৩৯.২৬ লাখ টাকা, যা এডিপি বরাদ্দের ২৭ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত প্রকল্পের অনুকূলে ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ৩৬১৮৪৬.০৯ লাখ টাকা, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৯৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত বাস্তব অগ্রগতি ৯৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। 

সভায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ইসির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচন ও উপনির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হয়।

ইসি জানিয়েছে, সংরক্ষণে থাকা দেড় লাখ ইভিএমের মধ্যে ৪০ হাজার ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বাকি ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিএমটিএফের চাহিদামতো ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে কমিশন। চলমান ইভিএম প্রকল্পটির মেয়াদ আগামী জুনে শেষ হচ্ছে।

এসসিডিইসিএস প্রকল্পের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতির বিষয়ে সভায় জানানো হয়- প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ২১৬১.২৬ লাখ টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রকল্পটির অনুকূলে এডিপিতে ১৪৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের অনুকূলে মোট ব্যয় ৭৫ দশমিক ৯ লাখ টাকা, যা এডিপি বরাদ্দের ৫ দশমিক ১২ শতাংশ এবং ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের অনুকূলে ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ৭২৮ দশমিক ১৪ লাখ টাকা, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৩৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত বাস্তব অগ্রগতি ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ।

প্রকল্পটির আওতায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দেওয়া বিভিন্ন প্রশিক্ষণের বিবরণ তুলে ধরে সভায় জানানো হয়, এক্ষেত্রে শতভাগ অগ্রগতি ঘটেছে। প্রশিক্ষণে অগ্রগতির হার শতভাগ। এ প্রকল্পে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ‘প্রকল্প ব্যবস্থাপনা কোর্স’-এর দুটি ব্যাচে মোট ৫০ জন কর্মকর্তাকে অনলাইন প্লাটফর্মে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা-সংক্রান্ত অগ্রগতির বিষয়ে সভায় জানানো হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ইভিএম প্রকল্পের পণ্য-সংক্রান্ত চারটি প্যাকেজের মধ্যে দুটি, সেবা-সংক্রান্ত তিনটি প্যাকেজের মধ্যে তিনটি, নন-কনসাল্টিং সার্ভিস-সংক্রান্ত ৯টি প্যাকেজের মধ্যে ৪টির ক্রয় কার্যক্রম এখনও সম্পন্ন হয়নি।

এসসিডিইসিএস অপ্রকল্পের অনুকূলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য-সংক্রান্ত আটটি প্যাকেজের মধ্যে পাঁচটি, সেবা-সংক্রান্ত ১০টি প্যাকেজের ৪টি, নন-কনসাল্টিং সার্ভিস-সংক্রান্ত ১টির মধ্যে ১টির ক্রয় কার্যক্রম এখনও শেষ হয়নি। আর আইডিইএ-২ প্রকল্পের পণ্য-সংক্রান্ত ২২টি প্যাকেজের মধ্যে ৭টি, সেবা-সংক্রান্ত ১৫টির মধ্যে ২টি, নন-কনসাল্টিং সার্ভিস ৪৩টির মধ্যে ৪টি প্যাকেজের ক্রয় কার্যক্রম এখনও শেষ হয়নি। বাকি প্যাকেজগুলোর ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য চুক্তি হয়েছে।

সভায় ইভিএম প্রকল্পের আরডিপিপির বিষয়ে প্রকল্পটির পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান জানান, ৪০০০ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধিসহ এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করে প্রকল্পের আরডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে। এক্সিট প্ল্যান অনুযায়ী ইভিএম, সফটওয়্যার, আসবাবপত্র, যানবাহন, কাস্টমাইজেশন সেন্টার, আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি আরডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষে এগুলো ইসিতে কীভাবে কোন শাখায় হস্তান্তর করা হবে, তার একটি চার্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক আরও উল্লেখ করেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষে বিদ্যমান ইভিএম ব্যবহার, রক্ষণাবেক্ষণ এবং অন্য যেসব কার্যক্রম রয়েছে, তা চলমান রাখতে ইসি সচিবালয়ে কোনো একটি অনুবিভাগ সৃষ্টির প্রস্তাবনাও প্রস্তুত করা হয়েছে। সভায় বিস্তারিত আলোচনার পর এপ্রিল মাসের মধ্যে এক্সিট প্ল্যান তৈরি করে ইসি সচিবালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। 

প্রকল্পের এক্সিট প্ল্যানের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘কমিশন তো আজীবন প্রকল্পের ওপর নির্ভর করবে না। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে এগুলো কমিশনের কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত হবে।’

তাহলে চলমান প্রকল্প তিনটির মেয়াদ শেষ হলে এগুলো কি কমিশনের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে চলবে?- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রকল্পের এক্সিট প্ল্যান রয়েছে। যে প্রশিক্ষণগুলো চলছে প্রকল্প শেষ হলে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) মাধ্যমে সেগুলো চলবে। ইভিএমের এক্সিট প্ল্যান করা খুব কঠিন। এজন্য আমাদের যে জনবল আছে, তাদের সক্ষম করে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের লোকজন তো এখনও ঠিকমতো ইভিএম কাস্টমাইজেশনের কাজ করতে পারে না। বিএমটিএফের সহযোগিতা লাগে। বিএমটিএফ থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই মূলত এক্সিট প্ল্যান।’

তিনি বলেন, ‘ইভিএম প্রকল্প চলছে। এটি শেষ হলে কি আরেকটি প্রকল্প নেব? তাহলে আমাদের কাজ কী? কাজেই আমাদের লোকদের সক্ষম করে গড়ে তুলতে হবে। এজন্যই এক্সিট প্ল্যান করা হচ্ছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা