× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অবিশ্বাস্য ফাইনাল! আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন!!

এম. এম. কায়সার

প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ২১:২৫ পিএম

আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:৪৪ এএম

বিশ্বকাপ জয়ের পর ট্রফি হাতে মেসির উল্লাস। ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপ জয়ের পর ট্রফি হাতে মেসির উল্লাস। ছবি : সংগৃহীত

নাটক! অবিশ্বাস্য নাটক জমা রেখেছিলো বিশ্বকাপের ফাইনাল। ৭৯ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থাকা আর্জেন্টিনা তো বিশ্বকাপ জিতেই নিয়েছিল। কিন্তু না, খেলা যে তখনো শেষ হয়নি! ৯৭ সেকেন্ডের মধ্যে দুই গোল শোধ করে দিলো ফ্রান্স!

৮০ মিনিটের সময় পেনাল্টি থেকে গোল করে ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরালেন এমবাপে। পরের মিনিটে তিনি যা করলেন সেজন্য আর্জেন্টিনা কেন, গোটা বিশ্বই সম্ভবত প্রস্তুত ছিলো না। থুরামের ক্রসে ডানপায়ে গোলার মতো শট নিলেন বক্সের কোনা থেকে। বলে হাত লাগালেন আর্জেন্টাইন গোলকিপার মার্তিনেজ। কিন্তু লাভ হলো না। বল জালে। গো..ও..ল! আর্জেন্টিনা ২, ফ্রান্স ২। এই ফাইনালে অতিরিক্ত সময় যে আরো বড় নাটকীয়তা জমিয়ে রেখেছিল। মেসি ফের গোল করলেন। আর্জেন্টিনা এগিয়ে গেল। এমবাপে খানিকবাদে সেই গোল আবার শোধ করে দিলেন। ফের ম্যাচে ৩-৩ গোলের সমতা। টাইব্রেকারে গড়ালো ফাইনাল। সেই লটারিতে ৪-২ গোলে ফাইনাল জিতে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে গেল আর্জেন্টিনা। 

বিশ্বকাপের এই ফাইনাল শুধু দুদলের নয়, পুরো ফুটবল দুনিয়ার ফুটবল দর্শক এবং সাংবাদিক সবার পরীক্ষা নিলো যেন! একবার মনে হলো আর্জেন্টিনা জিতছে। খানিকবাদেই ফ্রান্স ম্যাচে ফিরে এলো। আবার আর্জেন্টিনা এগিয়ে গেল। ফের ম্যাচে সমতা আনলো ফ্রান্স। চরম উত্তেজনার ফাইনাল গেল টাইব্রেকারে। এবার আর আর্জেন্টিনা কোন ভুল করলো না।   

২-২ গোলে ড্র থাকা ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। তবে এই বিশ্বকাপ যেন লিখেই রেখেছিল এটা আর কারো নয়, হবে শুধু এবং শুধুই মেসির। আর তাই ফাইনালে জয়-পরাজয়ের পাথর্ক্য গড়ে দেওয়ার গোলটা এলো যেন মেসির পায়েই! অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ফাইনালের ১০৮ মিনিটের সময় পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোল পায় আর্জেন্টিনা। ফরাসি গোলকিপার লরিসের হাতে লেগে বলটা বাউন্স হলো। ফিরতি বলে গোল করলেন মেসি (৩-২)। ম্যাচ শেষ হতে তখন বাকি আর মাত্র মিনিট পাঁচ। ঠিক তখনই আবার নাটক! মন্টিয়েল হ্যান্ডবল করে বসলেন। তাও আবার বক্সে! ফ্রান্স পেল পেনাল্টি। স্পট থেকে কিক করে আরেকবার ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরালেন এমবাপে। সেই সঙ্গে তার হ্যাটট্রিক পুরো। ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে জিওফ হার্স্টের পরে এটাই প্রথম হ্যাটট্রিক। 

এরপরের কাহিনী সংক্ষিপ্ত। এবার আর কোন নাটকীয়তা নয়। টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনা চার শটের চারটাই গোল করলো। ফ্রান্স শুরুর চার শটের দুটো মিস করে। তাতেই বিশ্বকাপ তাদের হাতছাড়া। আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন। 

মন্টিয়েলের টাইব্রেকার শট জালে জড়াতেই আর্জেন্টিনা থেকে শুরু গোলার্ধের অন্য প্রান্তে বাংলাদেশের আনাচ কানাচও আনন্দে মেতে উঠলো। অভিনন্দন আর্জেন্টিনা। অভিনন্দন মেসি। 


চরম নাটকীয় ভঙ্গিতে ম্যাচে সমতা এসেছিল দ্বিতীয়ার্ধে। ৭৯ মিনিট পর্যন্ত দুই গোলে এগিয়ে থাকা আর্জেন্টিনা দল বাকি অনেকের মতো ভেবে বসেছিলো বিশ্বকাপ জিতে নিয়েছি। কিছুটা আত্মতুষ্টি পেয়ে বসে তাদের। সেই ভুলই তাদের যন্ত্রণা বাড়ালো। ৮০ এবং ৮১ মিনিটে সেই দুই গোলের আগ পর্যন্ত এমবাপেকে ফাইনালে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। সেই ফরাসি তারকাই বদলে দিলেন ম্যাচের চালচিত্র।

খানিক আগে স্বপ্ন ছড়াচ্ছিলো, মেসির হাতে বিশ্বকাপ উঠছে। মাত্র ৯৭ সেকেন্ডে ঘুরে গেল সেই পাশা। দুই গোল করে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ সাত গোলের নায়ক হয়ে গেলেন এমবাপে। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন এই বিশ্বকাপ জিততে তিনিও নেমেছেন। 

২-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পর ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেঁশম চারটি বদল করেন। গ্রিজম্যানের মতো খেলোয়াড়কে তুলে নেন। খেলোয়াড় বদলের ফ্রান্স কোচের এই সিদ্ধান্ত ছিলো মাস্টারপিস। দারুণ কার্যকর। থুরাম, কোলো মুয়ানি, কামাভিঙ্গা ও কোম্যানকে নামিয়ে পুরো খেলার চেহারা বদলে দেন দেঁশম। এতক্ষণ মাঠে ঝিমিয়ে পড়া ফ্রান্স জ্বলে উঠলো। ঠিক যেরকম ফাউলে পেনাল্টি পেয়েছিল আর্জেন্টিনা, তারই যেন পুনরাবৃত্তি হলো ম্যাচের ৭৯ মিনিটের সময়। এবার পেনাল্টি পেলো ফ্রান্স। কোলো মুয়ানিকে পায়ে পা বাধিয়ে তাকে বক্সে ফেলে দেন নিকোলাস ওটামেন্ডি। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিক থেকে গোল করেন এমবাপে। গোল করেই দ্রুত পোস্ট থেকে বল কুড়িয়ে এনে সেন্টারে বসান তিনি। যেন দ্রুতই আরেক গোল করার তর সইছে না তার। করলেনও ঠিক তাই। পরের মিনিটেই থুরামের পাশে চলন্ত বলে দুর্দান্ত শটে তার দ্বিতীয় গোলে ম্যাচে সমতা আনলো ফ্রান্স! খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাড়িয়ে ফ্রান্স তখন আনন্দে আত্মহারা। আর আর্জেন্টাইন গ্যালারিতে আকস্মিকভাবে সব হারানোর শোক-নিরবতা। 

অতিরিক্ত সময়েও সেই একই নাটক। আর্জেন্টিনা এগিয়ে গেল মেসির গোলে। খানিকবাদেই হ্যান্ডবলের সুবাদে পেনাল্টি পেল ফ্রান্স। আবার গোল করলেন এমবাপে। আবার ম্যাচে সমতা। আরেকবার আনন্দের রেশ না ফুরাতেই আর্জেন্টিনার শিবিরে দুঃখ- শোকের ছায়া।
তবে সেই শোক আবার আনন্দে পরিণত টাইব্রেকারে। কোন সন্দেহ নেই বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা ফাইনাল হয়ে রইলো আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের এই বিশ্বকাপ। 

মাত্র তিন সপ্তাহ আগে এই লুসেইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হয়েছিল সৌদি আরবের কাছে হার দিয়ে। সেই স্টেডিয়ামে ফাইনাল জিতে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন। তাহলে কি বুঝলেন শুরুটা সবকিছু নয়। শেষটাই আসল!

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা