প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:১০ পিএম
২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয় এক তরুণের। যে আর পাঁচটা বোলারের মতো নয়। সম্পূর্ণ ভিন্ন তার বোলিং অ্যাকশন। ঝাঁকড়া চুলে লম্বা রানআপ নিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের দিকে বল নিয়ে তেড়ে আসেন তিনি। আগুনঝরা ইয়র্কার ডেলিভারিতে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের উইকেট তোলেন বলে-কয়ে। সেই থেকে যার শুরু। এরপর সময়ের সঙ্গে ২২ গজে গড়েছেন বহু কীর্তি। অসংখ্য রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। বহুবার তার ভিন্ন এই বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হলেও তিনি ছুটেছেন সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে। সেই ছুটে চলা থামে ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর। সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় জানান শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গা।
এ সময় বিশ্বজুড়ে বহু ক্রিকেটার গড়ে উঠেছেন তার বোলিং অ্যাকশন ফলো করে। বহু তরুণের কাছে রোল মডেল তার সিগনেচার বোলিং অ্যাকশন। তাকে অনুকরণ করতে গিয়ে কখন যে নিজের বোলিং অ্যাকশনটাই বদলে গেছে বুঝতেই পারেননি বহু তরুণ। তবে খুব একটা লম্বা সময় ধরে টিকতে পারেননি কেউ। সেখানে ভিন্ন এক মালিঙ্গার দেখা মিলছে গত দুবছর ধরে। ২০ বছর বয়সি শ্রীলঙ্কান তরুণ মাথিশা পাথিরানা যেন কিংবদন্তি বোলার লাসিথ মালিঙ্গারই জেরক্স কপি। একই ধরনের বোলিং অ্যাকশনের কারণে শ্রীলঙ্কায় এরই মধ্যে বেবি মালিঙ্গা হিসেবে পরিচিতি করে নিয়েছেন তিনি।
ছিপছিপে গড়নের এই বোলার এরই মধ্যে মালিঙ্গার অ্যাকশনে বল করে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছেন। গত বছর শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলের হয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেকও হয়েছে তার। তবে অভিষেক রাঙাতে পারেননি তিনি। ১ ওভার বল করেই খরচ করেছেন ১৬ রান। এরপর আর তাকে মাঠে নামায়নি লঙ্কানরা।
তবে এ সময়ই বহু ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলে ফেলেছেন এই তরুণ। মাতিয়েছেন আইপিএলের অন্যতম দল চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতেও। গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে তার আইপিএল অভিষেক ম্যাচে প্রথমবারের মতো বল করতে এসেই শুভমান গিলের উইকেট তুলে নেন তিনি, যা শ্রীলঙ্কান বোলারদের মধ্যে প্রথম।
বর্তমানে আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক লিগ টি-২০-এ ডেসার্ট ভাইপারের হয়ে মাঠ মাতাচ্ছেন তিনি। গতকাল দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে খেলতে নেমে রোভম্যান পাওয়েল ও ইউসুফ পাঠানদের মতো ব্যাটারদের ভড়কে দিয়েছেন তিনি। শেষ ৪ ওভারে যেখানে জয়ের জন্য ক্যাপিটালসের প্রয়োজন ছিল ৩৩ রান। সেখানে শেষ দুই ওভার হাত ঘুরিয়ে এই বোলার খরচ করেছেন মাত্র ৯ রান। আর ওখানেই নির্ধারিত হয়ে যায় ম্যাচের গতিপথ। এদিন কোনো উইকেট না পেলেও ১৭ ও ১৯তম ওভারে যেভাবে একের পর এক ইয়র্কার দিয়ে গেছেন লেগ স্টাম্পের ওপর, তাতে বাউন্ডারি হাঁকানোর সুযোগই পাননি তারা। যার প্রশংসা করেছেন পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তি বোলার ওয়াসিম আকরাম। তিনি বলেন, ‘আমি তার বোলিং অ্যাকশন দেখে মুগ্ধ। আমি তার জন্য গর্বিত।’