প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১২:২৭ পিএম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:০৬ পিএম
ধ্বংসস্তূপ থেকেই উঠে দাঁড়ানো শুরু।
২০১৫ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই বিদায় নেয় ইংল্যান্ড। তবে সেই ব্যর্থতায় তারা নুয়ে পড়েনি। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে বাড়ে।
ফল?
চার বছর পর ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন তারাই। আগ্রাসী ঘরানার ক্রিকেটে নিজেদের ভিন্ন এক ব্র্যান্ড হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত করে জিতেছে ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও। ২০২৩ বিশ্বকাপ অবশ্য ভিন্ন এক চ্যালেঞ্জ নিয়ে দাঁড়িয়ে দলটির সামনে। ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাটে জেতা দুটো বিশ্বকাপই ইংলিশরা জিতেছে খানিকটা সহায়ক কন্ডিশনে। কিন্তু এবারের ভেন্যু ভারত, যেখানে কন্ডিশনটা পুরোপুরি ইংল্যান্ডের বিপরীত।
পরিস্থিতিটা আরও কঠিন হয়ে যায় যখন এই কন্ডিশনে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকে প্রায় ‘নেই’-এর কোঠায়। ইংলিশরা উপমহাদেশে সবশেষ ওয়ানডে খেলেছিল সেই দুই বছর আগে, ২০২১ সালের মার্চে। এরপর থেকে আর ভারত বা বাংলাদেশে পা পড়েনি জস বাটলারদের। আসছে ১ মার্চ থেকে শুরু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ। সেই লড়াইয়ে নামার আগে বাটলার জানালেন, এই সিরিজ থেকে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটাও সেরে নিতে চায় তার দল।
বিশ্বকাপের আর বাকি আট মাসের মতো। এই সময় বাংলাদেশের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজ খেলার পর বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত উপমহাদেশে আর কোনো ম্যাচ নেই ইংলিশদের। এই সিরিজ খেলে গিয়ে ইংলিশরা আতিথ্য দেবে আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডকে। সবকটা ম্যাচই নিজেদের মাটিতে; কোনো অ্যাওয়ে সিরিজও নেই!
সে কারণেই বাংলাদেশের মাটিতে এই সিরিজকে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির উপলক্ষ হিসেবে দেখলেন ইংলিশ অধিনায়ক। বললেন, ‘সব প্রস্তুতি ওই বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করেই। কন্ডিশনটাও তার খুব কাছাকাছি, এই ম্যাচগুলো খেলব, তারপর সেপ্টেম্বরে বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত (উপমহাদেশে) আর খেলব না। তো আমাদের জন্য এটা একটা চ্যালেঞ্জ।’
ইংলিশদের চ্যালেঞ্জটা বাড়িয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ফর্ম। বাটলারের কথা, ‘আমাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ নিজেদের মাটিতে চেনা কন্ডিশনে খুবই কঠিন প্রতিপক্ষ, তাদের হারানো খুব কঠিন। তারা এই কিছু দিন আগেই ভারতকে হারিয়েছে। এই চ্যালেঞ্জটাই আমাদের প্রয়োজন। বিশ্বকাপের আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। তো প্রায় একই কন্ডিশনে, যেটা আমাদের জন্য কঠিন, সেখানে নিজেদের বাজিয়ে দেখার, দল হিসেবে আমাদের অবস্থান কোথায়, তা দেখার সুযোগ আমরা পাচ্ছি।’
তবে এই চ্যালেঞ্জে জিততে তুরুপের তাসও ইংলিশদের কাছে নেহায়েত কম নেই। যদিও ইংলিশ অধিনায়ক জানালেন, তাতে চ্যালেঞ্জের বিশালতাটা কমছে না একটু। বাটলার বললেন, ‘আমাদের অনেক খেলোয়াড় আছে যারা উপমহাদেশে খেলে অভিজ্ঞ। অনেক খেলোয়াড় আছে যারা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। তো আমরা জানি এখানে কী হতে পারে। তবে সেটা চ্যালেঞ্জটাকে একটুও সহজ করে দেয় না।’
২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে খোলনলচে বদলে গেছে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট। বাটলার মেনে নিলেন সে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের কাছে তাদের সেই হারটাই ছিল ‘টার্নিং পয়েন্ট’। বললেন, ‘সেই ম্যাচটা হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়া সম্ভবত... আসলেই ইংলিশ ক্রিকেটের জন্য টার্নিং পয়েন্ট ছিল।’
তবে এরপর থেকে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলছে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশেও সে ঘরানার ক্রিকেটটাই খেলতে চায় ইংলিশরা। বাটলার বলেন, ‘আমরা সব সময়ই যতটা সম্ভব আগ্রাসী ক্রিকেটটাই খেলতে চাই। আমাদের নিয়ে অবশ্য একটা ভুল ধারণা আছে যে আমরা সব সময় ৪০০ রানই করতে চাই। তবে বিষয়টা হচ্ছে নির্দিষ্ট দিনে সীমানাটাকে আরেকটু বড় করে দেওয়া, গড়পড়তা কিছুতে সন্তুষ্ট না থাকা, উইকেট যতটুকু সুযোগ দেয়, তার চেয়েও বেশি আদায় করে নেওয়া, ৮০ রানের জায়গায় ১০০ করা... আমরা কন্ডিশনটাকে পর্যবেক্ষণ করছি, আমাদের খেলাটাকে সে অনুযায়ী সাজানোর চেষ্টা করছি।’