প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ০৯:০৩ এএম
প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডকে চেপেই ধরেছিল বাংলাদেশ। তবে শেষ অঙ্কটা আর মেলানো হয়নি তামিম ইকবালদের। ডেভিড মালানের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ম্যাচটা বেরিয়ে গেছে মুঠো ফসকে। প্রথম ম্যাচটা হারের ফলে সিরিজ জেতাটা কঠিনই হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের। জিততে হবে শেষ দুই ম্যাচেই। কাজটা কঠিন, তবে চেনা কন্ডিশনে একে অসম্ভব হিসেবে দেখছেন না ডেইলি মেইলের প্রতিবেদক রিচার্ড গিবসন। তার অভিমত ২-১ ব্যবধানে সিরিজটা জেতার ভালো সম্ভাবনাই আছে স্বাগতিকদের।
ইংল্যান্ড সিরিজের জন্য বর্তমানে রিচার্ড আছেন বাংলাদেশে। প্রথম ম্যাচে তার দেশের জয়টা দেখেছেন মাঠে বসে। তার অভিমত, একটু এদিক ওদিক হলেই ম্যাচটা পকেটে পুরতে পারত বাংলাদেশ। তার ভাষ্য, ‘ম্যাচটা খুবই ক্লোজ ছিল। একটু হলেই ফলটা অন্যরকম হতো, বাংলাদেশ জিততে পারত।’
সাদা বলে দুই ফরম্যাটের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। তবে বাংলাদেশের মাটিতে তাদের সঙ্গে স্বাগতিকদের শক্তি-সামর্থ্যের পার্থক্যটা খুব বেশি নয় বলেই মনে হলো তার। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের কন্ডিশনে কী হয়, দুই দলের শক্তি-সামর্থ্য প্রায় কাছাকাছি চলে আসে। এখানে বাংলাদেশকে ইংল্যান্ডের পেছনে রাখার কোনো উপায় নেই। তবে ইংল্যান্ড বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তো এমনি এমনি নয়! তারা পরিস্থিতির চাহিদা বুঝে খেলেছে, দেখিয়েছে তারা কেন চ্যাম্পিয়ন। বাংলাদেশও দেখিয়েছে, নিজেদের মাঠে, চেনা কন্ডিশনে তারা কত কঠিন প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারে।’
প্রথম ম্যাচে হারলেও সিরিজটা এখনও শেষ হয়ে যায়নি বাংলাদেশের। রিচার্ডের অভিমত, কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এক সিরিজই হতে যাচ্ছে চলমান এই সিরিজটি। তার ভাষ্য, ‘সিরিজটা সবেমাত্র শুরু হলো। আমার মনে হয় কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হতে চলেছে এখানে। খুবই ক্লোজ সিরিজ হবে, ওয়ানডে তো বটেই, টি-টোয়েন্টি সিরিজটাও। হ্যাঁ, ইংল্যান্ড প্রথম ম্যাচটা জিতেছে, সিরিজে এগিয়ে গেছে, এটা তাদেরকে সুবিধা দেবে। তবে বাংলাদেশের জন্য সিরিজটা শেষ হয়ে যায়নি। পরের দুই ম্যাচ জিতে তাদেরও সিরিজটা জিতে নেওয়া সম্ভব বলে মনে হচ্ছে আমার।’
প্রথম ওয়ানডে হারের কারণ হিসেবে দলের ব্যাটিংকে দুষেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ওয়ানডেতে কেন বাংলাদেশের ব্যাটিং মুখ থুবড়ে পড়েছে ইনিংসের মাঝপথে, তার একটা কারণও খুঁজে বের করলেন রিচার্ড। তার কথা, ‘প্রথম ওয়ানডেতে সবাই ধুঁকেছে। উইকেটে স্পিন ধরেছে, বাংলাদেশের বোলিংটা দারুণ হয়েছে। তবে তাদের ব্যাটিংটা যাচ্ছেতাই হয়েছে। বেশ কিছু উইকেট স্রেফ ছুড়ে দিয়ে চলে এসেছে। সিরিজে ফিরতে হলে এখানেই উন্নতিটা করা চাই তাদের। তাদের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে তাদের যথেষ্ট নির্দেশনার অভাব ছিল। সেটা শিগগিরই শুধরে ফেলতে হবে।’
শুরুর এই ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডও ভালো ব্যাটিং করেনি, মনে করিয়ে দিলেন তিনি। তবে একটু পরই মালানকে স্তুতিতে ভাসালেন। অপরাজিত ১১৪ রানের ইনিংসে বাংলাদেশকে একাই হারিয়ে দেওয়ার পর তিনি জানিয়েছিলেন, মিরপুরের মাটিতে খেলার অভিজ্ঞতাটাই কাজে লাগিয়েছেন তিনি। সে অভিজ্ঞতা তো বাংলাদেশের আরও বেশি থাকার কথা। এরপরও কীভাবে মালান সফল হলেন? তার একটা ব্যাখ্যাও আছে রিচার্ডের কাছে।
তার ব্যাখ্যা, ‘দুই দল মিলিয়ে দেখলে দেখবেন ইংল্যান্ডও ব্যাটিংটা ভালো করেনি। মালানের ইনিংসটা এক পাশে রাখলে ইংলিশদের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটা মাত্র ২৮ রানের। ইংল্যান্ড আর বাংলাদেশের পার্থক্যটা গড়ে দিয়েছে মালান, যেভাবে সে ইনিংসটা গড়েছে, সেটাই ম্যাচটা জিতিয়েছে তার দলকে। এটা শান্তও করেছিল, তবে সে অসময়ে উইকেটটা ছুড়ে দিয়ে এসেছে। আর সবার সঙ্গে মালানের পার্থক্যটা হচ্ছে তার চিন্তাশক্তিটা। এখানে খেলার মানসিক বাধাটা সে যেভাবে উতরে গেছে সেটার কৃতিত্বটা তার ভাবনারও প্রাপ্য।’
প্রথম ওয়ানডেতে উইকেটটা নিখাদ স্পিনবান্ধব ছিল না। শুরুতে পেসাররা, ব্যাটাররাও সাহায্য পেয়েছে বেশ। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে স্পিনাররা সাহায্য পেয়েছে বেশি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তাই উইকেট আরও বেশি স্পিনবান্ধব হবে কি না, তা নিয়েও আছে গুঞ্জন। তবে সেটা হলে বাংলাদেশ জিতলেও দীর্ঘমেয়াদে দলকে তা সাহায্য করবে না, অভিমত তার। জানালেন, তার প্রয়োজন নেই, প্রথম ওয়ানডে থেকে ব্যাটিংটা যদি ঠিক করা যায়, তাহলেই জিতবে বাংলাদেশ।
রিচার্ডের ভাষ্য, ‘প্রথম ওয়ানডেতেই যথেষ্ট স্পিন ধরেছে উইকেটে। ইংলিশ স্পিনাররা ১০০ রান দিয়ে ৫ উইকেট পেয়েছে, বাংলাদেশের স্পিনাররাও ভালো করেছে। তবে এর চেয়ে বেশি স্পিনিং ট্র্যাক হলে হয়তো বাংলাদেশ জিতবে, কিন্তু সেটা তাদের দীর্ঘমেয়াদে উপকারে আসবে না। তার প্রয়োজন নেই, তাদের ব্যাটিংয়ে উন্নতি করলেই সিরিজটা জেতার ভালো সম্ভাবনা তৈরি হবে তাদের।’