কলাম
তারেক আজিজ
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ০৯:৪৮ এএম
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৩:৪৩ পিএম
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে হাথুরুসিংহে যেই ধরনের উইকেট চেয়েছিল ওই ধরনের উইকেটই হয়েছে। আমাদের ইনিংসে ডট বলের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। আমার মনে হয় আমরা এই জায়গাতেই হেরেছি। ম্যাচে যখন ক্রিকেটারদের স্ট্রাইকরেট বাড়ানো উচিত ছিল, সেখানেই আমাদের ব্যাটাররা ব্যর্থ হয়েছে। আমরা ২৮৮ বল খেলেছি। যার মধ্যে ডট বল ছিল ১৭৮টি। এটা আমাদের ইনিংস বড় করতে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল। যদি নাজমুল হোসেন শান্তর ক্ষেত্রে দেখি, প্রথম অংশটা চমৎকার ছিল। পরের ৩২ বলে ১৪ রান করেছে। যখন ব্যাটারের স্ট্রাইকরেট বাড়িয়ে নিয়ে ব্যাটিং করার কথা ছিল, তখন সে পারেনি। যে ধরনের উইকেট ছিল, তাতে ২৪০-২৫০-এর কাছাকাছি করতে পারত, তাহলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জেতা সম্ভব ছিল। ম্যাচে আমাদের বোলিং বিভাগ চমৎকারভাবে লড়াই করেছে। বিশেষ করে তাসকিন আহমেদ দারুণ বোলিং করেছে। সাকিব আল হাসান-তাইজুল ইসলামরা ভালো বল করেছে। আমাদের আশা ছিল, মুস্তাফিজুর রহমান একটু ভালো করবে। এই জায়গাটায় একটু ঘাটতি ছিল। আমার মনে হয় ব্যাটারদের কারণে আমরা ম্যাচ জিততে পারলাম না।
একাদশের কথা যদি বলি, উইকেটের চরিত্র অনুযায়ী একাদশ একদম ঠিক ছিল। সম্প্রতি বিপিএলে খেলেছি। সেখানে ভালো উইকেট ছিল। প্রথম ওয়ানডেতে আমরা দেখেছি, উইকেটের ওপর কাটা ঘাসের আস্তরণ দেওয়া হয়েছে। এতে বলের গতি কমিয়ে আনা যায়। ইংল্যান্ডের পেসারদের গতি কিছুটা কমে এসেছে। সাদা বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ড অসাধারণ। ওদের পেস বোলিং বিভাগ অবশ্য বাংলাদেশের ব্যাটারদের জন্য চ্যালেঞ্জের। তবে আমাদের দলের ব্যাটাররা ওদেরকে ভালোভাবে মোকাবিলা করেছে। ডট বলের সংখ্যা ও স্ট্রাইক রেটের কারণে আমরা ইনিংস লম্বা করতে পারিনি।
ক্রিকেট সব সময় আলোচনার সুযোগ দেবে। ২০ ওভারের পর মুস্তাফিজুর রহমানকে বোলিংয়ে আনা হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়, মুস্তাফিজকে আরেকটু আগে বোলিংয়ে আনা যেত। তবে ক্রিকেটে এটা অনেক সময়ই ঘটে। মুস্তাফিজের এই ধরনের উইকেটে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল। ওই জায়গায় কিছুটা খরুচে হয়েছে। ওকে লাইন-লেন্থের জায়গায় কিছুটা মনোযোগী হতে হবে। রান কিছুটা বেশি হলে ফলাফল অবশ্যই ভিন্ন হতে পারত। ইংল্যান্ডের হয়ে ডেভিড মালান দারুণ ব্যাটিং করেছে। বাংলাদেশকে কোনো সুযোগ দেয়নি। ওর ইনিংসকে ভারতের সঙ্গে মেহেদি হাসান মিরাজের ওই ইনিংসের তুলনা করা যেতে পারে। কীভাবে ভারতের চোখের সামনে থেকে জয় তুলে এনেছে। আমাদের বোলিং বিভাগ ভালো করেছে। আমাদের ফিল্ডিং আরও ভালো হতে পারত। ওভার অল বাংলাদেশ ভালো ফাইট করেছে।
ম্যাচে কোনো স্পিনার সংকট ছিল না। ৩০ ওভার স্পিনাররাই বোলিং করেছে। একটা খেলায় ৩০ ওভার স্পিনাররা বোলিং করার পর সংকট হওয়ার কথা নয়। শান্তকে বোলিংয়ে এনে অধিনায়ক তামিম একটু রিস্ক নেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমাদের অন্য স্পিনাররাও অনেক ভালো বল করেছে। তাইজুলকে সোজাভাবে দেখলে একটুখানি খরুচে মনে হয়। অনেক দিন পর ম্যাচ খেলায় এই রকম হয়েছে। জায়গাটায় আরেকটু সজাগ হলে পরের ম্যাচে দারুণ করবে।
আমার মনে হয়, রিয়াদকে দিয়ে চাইলে বোলিংয়ে ব্যবহার করানো যায়। অধিনায়কের ভাবনায় থাকলে অবশ্যই পরিকল্পনা থাকে। মাহমুদউল্লাহর মতো বোলারকে যদি আমরা বোলিং করাতে পারি, সেটা দলের জন্য সুবিধার। কিন্তু অনেক দিন ধরে ব্যাটিংয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সে ম্যাচে অন্তত ৩-৪ ওভার বোলিং করতে পারত। সেটা করলে অবশ্যই ভবিষ্যতে আমাদের জন্যই ভালো হতো।
তারেক আজিজ: জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার