প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৩ ২১:২১ পিএম
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৩ ২১:২১ পিএম
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের বাংলাদেশ দলে ফিরেছেন তিন ক্রিকেটার ইয়াসির রাব্বী, জাকির হাসান ও শরিফুল ইসলাম। তাদের জায়গা দিতে তাইজুল ইসলাম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে জায়গা ছাড়তে হয়েছে।
কেন হুট করে এই তিনের ডাক পড়ল? কেনই-বা তিন সিনিয়র নেই হয়ে গেলেন এই সিরিজে?
নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন এই প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, নতুনদের দলে জায়গা দেওয়ার পথ সহজ করতে দেওয়া হচ্ছে সুযোগ। এ জন্যই বেছে নেওয়া হয়েছে আয়ারল্যান্ড সিরিজকে। যেখানে ‘কঠিন’ পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে সামর্থ্যের প্রমাণ দেবেন তরুণরা।
গত নভেম্বরের ভারত সিরিজের পর ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়েন ইয়াসির আলী রাব্বি, শরিফুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদ। আর ইংল্যান্ড সিরিজের দলে থাকা তাইজুল ইসলাম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে আয়ারল্যান্ড সিরিজে ‘বিশ্রাম’ দেওয়া হয়েছে। তাদের বাদ পড়ার কারণ ব্যাখ্যায় হাবিবুল বাশার সুমন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় এই অদল বদল। সবাইকে প্রস্তুত করতে হবে। পুরোনোরা থাকতে থাকতেই তা করতে হবে। না হলে, ওরা চলে গেলে সব নতুন হয়ে যাবে। তখন কঠিন হবে। ওরা থাকতে থাকতেই নতুন ও তরুণদের প্রস্তুত করা ভালো হবে।’
পুরোনোদের সময় শেষের অপেক্ষা নয়, ভাবনায় রয়েছে বিশ্বকাপও। ফর্ম কিংবা ইনজুরির কারণে অভিজ্ঞ কেউ বাদ পড়লে তাদের বিকল্প প্রস্তুত রাখার জন্যও নতুনরা সুযোগ পাচ্ছে। সেটাও খোলাসা করেছেন সুমন, ‘সামনে বিশ্বকাপ আছে, বড় গ্রুপ নিয়ে কাজ করলে সুবিধা হবে। সবসময় ইনজুরি নিয়ে ভাবনা থাকে। ফর্মের বিষয়ও থাকে। আমাদের ও দলের জন্য সুবিধা হবে।’
নতুনদের যাচাই করতে কেন আয়ারল্যান্ড সিরিজকে বেছে নেওয়া হয়েছে সেটাও পরিষ্কার করেছেন হাবিবুল বাশার। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে আইরিশদের শক্তিশালী মেনে নতুনদের কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে সেটা স্পষ্ট করেছেন, ‘আয়ারল্যান্ড কিন্তু সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভালো দল। আমার মনে হয়, তাদের পরীক্ষাটা বেশ ভালো হবে।’
পথটা কঠিন হবে, এমন আভাস দিলেও নতুনদের ওপর ভরসা রাখার পক্ষে তিনি। সামর্থ্যের প্রমাণ দেবেন, এমনটা আশা আছে। ‘আশা করছি, সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে পারবে।Ñযোগ করেন হাবিবুল বাশার।
নতুনরা ভালো করলে পুরোনোরা কি বাদ পড়বেন? সেই প্রশ্নের অবশ্য উত্তর মেলেনি। বরং আয়ারল্যান্ডের পরের সিরিজ নিয়ে এখন ভাবনাচিন্তার জায়গা দেখেন না হাবিবুল বাশার সুমন, ‘ভবিষ্যৎ কী হবে তা আমরা পরে ভাবব। আপাতত আমরা এই সিরিজ নিয়েই ভাবতে চাচ্ছি।’
আরও যোগ করে হাবিবুল বাশার বলেন, ‘নতুনদের জন্য এসেই পারফর্ম করা কঠিন। চাপে পড়লে আরও কঠিন হবে। এ জন্য বিষয়টি নিয়ে আমরা বেশি কথা বলছি না।’
পুরোনোদের মধ্যে তাইজুল ফিরতে পারবেন কি না তা নিয়ে একধরনের অনিশ্চয়তা রয়েছে। ইংল্যান্ড সিরিজের দলে তার ফেরা আবার পরের সিরিজেই আইরিশদের বিপক্ষে দল থেকে বাদ পড়া প্রসঙ্গে হাবিবুল বাশার সুমন বলছিলেন, ‘তাইজুল সবসময় লাল বলে প্রাধান্যে থাকে। লাল বলের এক নম্বর স্পিনার। সীমিত ওভারে আমরা সবাইকে প্রস্তুত রাখতে চাই। নাসুম আছে, তানভীর আসছে। তাদেরও সুযোগ দেওয়া উচিত।’
ওয়ানডে ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে মাহমুদউল্লাহর পারফরম্যান্স এমন বাজে কিছু হয়নি যে, তাকে দল থেকেই বাদ পড়তে হবে। একটা হিসাব দিই। পেছনের ১০ ওয়ানডেতে মাহমুদউল্লাহর রান ৩৪৭। হাফ সেঞ্চুরি দুটি। গড় রান ৪৩.৩৭।
মন্দ পারফরম্যান্স বলার উপায় নেই। তারপরও আইরিশদের বিরুদ্ধে সিরিজে তাকে কেন দলে রাখা হলো না? তাকে ‘বিশ্রাম’ দেওয়া হয়েছে। কেন হুট করে বিশ্রাম? তিনি কি নিজে বিশ্রাম চেয়েছিলেন? এই প্রশ্নের জবাবে সুমন বললেন, ‘আমরা বিকল্প তৈরিতে এখন কিছুটা নজর দিচ্ছি। মাহমুদউল্লাহ ওয়ানডেতে যে পজিশনে ব্যাটিং করছেন সেখানে আমাদের দুই-একজন বিকল্প আছে। এই সিরিজে সেটাই আমরা দেখে নিতে চাই। এজন্য (বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে), আর কিছু না। ব্যাটিং অর্ডারে ১-৪ পর্যন্ত আমাদের নতুন কাউকে দেখার সুযোগ নেই।’
তাহলে কি বিকল্প ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের ওপরই এখন নির্ভর করছে রিয়াদের ক্রিকেট ভবিষ্যৎ? এই প্রশ্নে হাবিবুলের উত্তর, ‘না, এরকম কিছু নয়। মাহমুদউল্লাহকে বিশ্রাম দিয়েছি আমরা। তাকে নিয়ে খুব বেশি কাজ করার নেই। বড় টুর্নামেন্টে তিনি আগেই খেলেছেন। তার পরীক্ষা দেওয়ার কিছু নেই। তার জায়গায় কাউকে নিতে হলে তাকে তো অবশ্যই পরীক্ষা দিতে হবে। এই চিন্তাভাবনা থেকে এই সিরিজে মাহমুদউল্লাহকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। আমরা দুই-একটা জায়গায় পরিবর্তন ঠিক বলব না, নতুন কিছু দেখতে চাচ্ছি। প্রস্তুত করতে চাচ্ছি। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে যেন তৈরি খেলোয়াড় পাই।’