প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৩ ২৩:৫৪ পিএম
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৩ ০২:০০ এএম
পারফেক্টই তো। ব্যাটাররা রান করেছেন, নিজেদের ভূমিকার দাবি মিটিয়েছেন। বোলাররা, বিশেষ করে পেসাররা ইনিংসের শুরু আর মাঝে এমনই দাপট দেখিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত যাওয়ার দরকারই পড়েনি। এমন সিরিজকে নিখুঁত না বলে উপায় আছে?
অধিনায়ক তামিমের কাছেও পারফেক্টই ঠেকেছে এই সিরিজে দলের পারফরম্যান্স। তার ভাষ্য, ‘পারফেক্ট সিরিজই বলতে পারি। যদি খামতি জোর করে বের করতে হয়, তাহলে বলব দ্বিতীয় ম্যাচটা ওয়াশআউট না হলে ভালো হতো। এ ছাড়া আমাদের নিয়ন্ত্রণে যা যা ছিল, আমরা তার সবই করেছি। আমরা খুবই সন্তুষ্ট যে আমরা প্রায় সব বক্সেই টিক দিয়েছি।’
আরও পড়ুন : ১০ উইকেটের জয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ
সবশেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ খেলেছে ছয় বোলার নিয়ে। যদিও পেসারদের দাপটে তৃতীয় স্পিনার সাকিব আল হাসানকে কাজেই লাগাতে হয়নি অধিনায়ক তামিমকে। ছয় বোলার খেলানোর সুযোগটা করে দিয়েছেন আসলে মিরাজ। তার ব্যাটিংয়ের সক্ষমতাই একজন ব্যাটার কম নিয়ে খেলার সাহস দিয়েছে দলকে।
অধিনায়ক তামিম জানালেন, ‘মিরাজের ব্যাটিং সক্ষমতায় আমাদের বিশ্বাসটা ছিল। ও দেখিয়েছে। আমরা যদি এই বিশ্বাসটা করতে পারি, মিরাজ যদি এভাবে ডেলিভার করতে পারে, তো ছয় বোলার নিয়ে খেললে কাজ করাটা সহজ হয়ে যায়। কারণ কখনও কখনও পাঁচ বোলার খেলালে পার্টটাইম বোলার নিয়ে কাজটা একটু কঠিন হয়ে যায়, বিশেষ করে যখন উইকেটটা খুবই ভালো হয়, যেকোনো কিছুই হতে পারে। বিশেষ করে আমরা যখন জানতাম স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে যাচ্ছি, এ কারণে আমরা ছয়টা বোলার নিয়ে খেলতে নেমেছি প্রথম থেকেই। বাইরের কন্ডিশনেও এটা দেখতে পারেন, প্রতিপক্ষের ওপর, কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করে এটা হতেই পারে।’
তামিমের চোখে এই সিরিজ ‘পারফেক্ট’; তার আরও একটা কারণ, সিলেটের স্পোর্টিং উইকেট। বাংলাদেশ অধিনায়কের কথা, ‘সাধারণত ঘাসের উইকেটে আমরা খুব বেশি খেলি না। বিশ্বকাপের কথা ভেবে, সামনের যে সিরিজগুলো আছে, এ কারণেই এমন উইকেটে খেলা। কারণ, আপনি যখনই এই ধরনের উইকেটে খেলবেন, বিশেষ করে ঘরের মাঠে, তখন লড়াইটা সমান হয়ে যায়। ওদের যে ফাস্ট বোলার আছে, ওরা কিন্তু ওদের দেশে এই ধরনের উইকেটে বল করতেই অভ্যস্ত। আমরা চ্যালেঞ্জটা নিয়েছিলাম, খেলোয়াড়রাও দারুণভাবে সাড়া দিয়েছে।’
সিলেটের স্পোর্টিং উইকেটে নিজের ব্যাটিং, দলের ব্যাটিং, বিশেষ করে বদলে যাওয়া ভূমিকায় নেমেই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমের মানিয়ে নেওয়া, সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতে নেওয়াও তৃপ্তি দিয়েছে তামিমকে। মুশফিককে ছয়ে নামানোর ভাবনাটা এসেছে তার আর কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মগজ থেকেই। লক্ষ্য ছিল ফিনিশারের অভাব মেটানো। প্রথম সিরিজেই মুশফিক যেভাবে মানিয়ে নিয়েছে, তাতে মুগ্ধ অধিনায়ক।
তামিমের ইঙ্গিত, ফিনিশারের ভূমিকায় নিয়মিতই দেখা যাবে মুশফিককে। তিনি বলেন, ‘শেষ সিরিজে আমি আর কোচ মিলে ঠিক করেছি ওকে আমরা ছয়ে খেলাব। কারণ, আমাদের শেষটা প্রায়ই ভালো হয় না। তার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। তার হাতে অনেক শট আছে। আমার মনে হয় তার হাতে কম ওভার থাকলে সে আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে যায়। ভাগ্য ভালো, বিষয়টা কাজে দিয়েছে, সে অবিশ্বাস্যভাবে ভালো খেলেছে। ও যদি সেটা ক্যারি করতে পারে, তাহলে আমাদের জন্যই সম্ভাব্য সেরা বিষয় হবে সেটা।’
এই সিরিজটায় পেসাররা নিজেদের চিনিয়েছেন নতুন করে। গতকাল নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পেসাররাই নিয়েছেন ১০ উইকেট। এমন বোলিং তাকে দিচ্ছে বাড়তি সাহস, দেখাচ্ছে বিশ্বের যেকোনো জায়গায় শক্তিশালী দল হয়ে ওঠার স্বপ্ন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, মাঠের বাইরে যে কাজটা তারা করেছে, এটা এখন মাঠে কাজে দিচ্ছে। তাদের এই সফলতা ফ্লুক নয়, তারা নেটে কঠোর পরিশ্রম করছে। আপনার হাতে যখন এমন একটা ফাস্ট বোলিং অ্যাটাক থাকবে, তখন কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। আপনি যেখানেই খেলছেন, হোম হোক বা অ্যাওয়ে, যেকোনো জায়গায় আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠবেন।’