প্রথমবার ডাক মিলেছিল ফেয়ারব্রেক আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টে। সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমাণ করেন। ৫ ম্যাচে রুমানা আহমেদের শিকার ৭ উইকেট। টুর্নামেন্টে তার দল বার্মি আর্মিকে তৃতীয় করতে বল হাতে বড় অবদান ছিল তার। বিদেশি টুর্নামেন্টে ভালো করা রুমানাকে দেখা যাবে না বাংলাদেশ নারী দলের পরবর্তী সফরে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দলে জায়গা মেলেনি রুমানার। তার দাবি, বিশ্রামের আড়ালে ‘বাদ’ দেওয়া হয়েছে। যদিও নারী দলের নির্বাচকের দাবি, কোচের ইচ্ছায় বিশ্রামে আছেন রুমানা। শুধু রুমানা নন, বিশ্রামে আছেন সালমা খাতুন ও মারুফা আক্তারও।
ফেয়ারব্রেকে ভালো খেলে আশাবাদী ছিলেন রুমানা। মানসিক প্রস্তুতি ছিল শ্রীলঙ্কা সফরের। ‘বিশ্রাম’ পাওয়ায় শ্রীলঙ্কায় যাওয়া হচ্ছে না। নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু রুমানা, সালমা ও মারুফাকে দলে না রাখার ব্যাখ্যায় বলেন, তাদেরকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। দল ঘোষণার পর রুমানা জানতে পারেন ‘বিশ্রামে’ আছেন। তার মতে, দল ঘোষণার আগেই ‘বিশ্রামের’ কথা তাকে জানানো উচিত ছিল। দল ঘোষণার পর বিশ্রামের বিষয়টি টিম ম্যানেজমেন্ট বা নির্বাচকের কাছ থেকে রুমানা জানতে পারেননি। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটতে যাচ্ছে সেটাই আঁচ করছেন ৩১ বছর বয়সি এই অলরাউন্ডার। জাতীয় দলেও নিজের কাজ পুরোপুরি করার সুযোগ পাচ্ছেন না সেই অভিযোগও আছে তার কণ্ঠে।
প্রতিদিনের বাংলাদেশকে রুমানা বলেন, ‘যেটা আমার কাছে মনে হয়, আমি আমার সুযোগ… মূলত আমি অলরাউন্ডার। অবশ্য অলরাউন্ডারের একটা সুযোগ থাকা দরকার যেটা আমার পাওয়ার কথা। অনেকদিন ধরে সেটা পাচ্ছি না।’
সুযোগের অভাবের কথা বললেও ব্যাট-বলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেষ পাঁচ ম্যাচে বলার মতো কোনো পারফরম্যান্স নেই রুমানার। ব্যাটে এসেছে মোটে ৪৫ রান। নিজের রান দুই অঙ্কের ঘরে নিতে পেরেছিলেন মাত্র একবার। বল হাতে কোনো উইকেটই পকেটে পুরতে পারেননি রুমানা।
তার ওই ছন্দটা ফিরেছে ফেয়ারব্রেকে। সেখানের ভালো পারফরম্যান্সের পর আগে কথা না বলে ‘বিশ্রাম’ দেওয়ায় হতাশ। রুমানার মতে, টানা ক্রিকেট খেললে তবেই বিশ্রামের দরকার। সেখানে দুই মাস বিরতির পর মাঠে নামছে বাংলাদেশ নারী দল। বিশ্রাম কতটুকু যুক্তিযুক্ত সেটা বুঝতে পারছেন না রুমানা, ‘আসলে বিশ্রাম কার কখন দরকার, সেটা নির্দিষ্টভাবে চলে। এমন যদি হইত আমি একটানা ম্যাচ খেলেছি, সেক্ষেত্রে আমার বিশ্রামের প্রয়োজন। এটা তো স্বাভাবিক হিসাব। এখন কীভাবে দিল বুঝতে পারছি না।’
রুমানাকে কেন বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে সেটা অবশ্য পরিষ্কার করেছেন নারী দলের নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে রুমানার বিশ্রামের কারণ হিসেবে মঞ্জু বলেন, ‘কোচের ইচ্ছা।’ নির্বাচকের মতে, কোচ হাসান তিলকারত্নেই শ্রীলঙ্কার কন্ডিশন সম্পর্কে ভালো জানেন। সেই অনুযায়ীই করা হয়েছে দল। মঞ্জুর ভাষ্য, ‘কোচের তো টিম কম্বিনেশনের একটা ব্যাপার থাকে। তার কন্ডিশন বিবেচনায় নিজস্ব পরিকল্পনা থাকে।’
তিলকারত্নে লঙ্কান হওয়ায় তার চাহিদাকেই দেওয়া হয়েছে গুরুত্ব। সেটাও পরিষ্কার করেন মঞ্জুরুল ইসলাম, ‘দেখেন দল শ্রীলঙ্কায় খেলবে। কোচও শ্রীলঙ্কার। সে সবচেয়ে ভালো বুঝবে। আবহাওয়া-কন্ডিশন যাই বলেন সবকিছু কিন্তু সে ভালো বুঝবে।’ দল ঘোষণার সময় পেশাদার আচরণ করা হয় বলেও জানান মঞ্জু, ‘আমাদের পেশাদার আচরণ করতে হয়। আমাদের তো আর আবেগপ্রবণ হলে চলে না।’ তিলকারত্নের অভিজ্ঞতার মূল্য দেওয়া উচিত বলেও জানান, ‘সবকিছু মিলিয়ে কোচের গুরুত্বের মূল্য দেওয়া উচিত।’
নির্বাচক কোচকে গুরুত্ব দিলেও রুমানার চাওয়া ছিল শ্রীলঙ্কায় নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর। ফেয়ারব্রেক আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টে ভালো করার অভিজ্ঞতায় ভালো করতে পারতেন। এমন বিশ্বাস আছে রুমানার মাঝে, ‘ফেয়ারব্রেক থেকে একটা ভালো অভিজ্ঞতা পেয়েছি। সেখানে ভালো ভালো ক্রিকেটারদের বিপক্ষে বল করেছি। ভালো সুযোগ পেয়েছিলাম। মনে করেছি, এবার শ্রীলঙ্কায় গিয়ে ওই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাব।’ হতাশ রুমানার ক্ষোভ বিশ্রাম নিয়ে তার সঙ্গে আগে আলোচনা না করায়। এই নিয়ে রুমানার ভাষ্য, ‘তারা যদি আমার সঙ্গে আগে থেকেই আলোচনা করত যে তোমাকে বিশ্রামে দিচ্ছি। যেটা সিনিয়রদের সঙ্গে সব সময় করা হয়। সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে আচমকা যদি এভাবে জানতে হয়…।’ শুধু তাই নয়, দল ঘোষণার পর বিশ্রামের বিষয়টি জানতে পেরেছেন রুমানা। নির্বাচক বা টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে সরাসরি ‘বিশ্রামের’ বিষয়টি জানায়নি বলেও দাবি রুমানার, ‘উনার (নির্বাচক) সঙ্গে আমার কোনো কথা হয় না। যখন দল দেয় তখন জানতে পেরেছি (বিশ্রামের বিষয়)। দল দেওয়ার আগে এইসব কোনো কিছু জানানো হয়নি।’
দল ঘোষণার এক দিন পর রুমানা দাবি করেন ‘বিশ্রামের’ আড়ালে দল থেকে বাদ পড়েন। রুমানার বক্তব্যে নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখনও দেখিনি। রুমানা যদি অভিযোগ করে তাহলে সেটা ওর বক্তব্য।’ সঙ্গে জানিয়ে দেন, কোচের চাওয়াতেই রুমানা ও সালমাকে দেওয়া হয়েছে বিশ্রাম।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.