প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ১১:৫১ এএম
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:১৪ পিএম
ফেয়ারব্রেক আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টে দারুণ খেলেছেন রুমানা আহমেদ। যার জেরে শ্রীলঙ্কা সফরের দলে সুযোগ মিলতে পারত। তবে কাঙ্ক্ষিত ওই সফরে তার জায়গা হয়নি। কারণ হিসেবে নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু জানান, তাকে ‘বিশ্রাম’ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচকের ওই বক্তব্যের জবাবে রুমানার সাফ জবাব ছিল, ‘বিশ্রামের’ আড়ালে তাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। পাল্টাপাল্টি মন্তব্যের জেরে এখন বিসিবির কাঠগড়ায় রুমানা। কোড অব কন্ডাক্টের দোহাই দিয়ে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছে বিসিবি।
আরও পড়ুন : আজ শ্রীলঙ্কা যাচ্ছে নারী ক্রিকেট দল
‘বিশ্রামের’ আড়ালে বাদ পড়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয়ে মন্তব্য করেন রুমানা। অলরাউন্ডার হিসেবে দলে নিজের কাজ করতে না পারার সুযোগের অভাব ছিল তার জন্য। তার ধারণা, বিশ্রামের অজুহাতে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটবে। নির্বাচকের দেওয়া ‘বিশ্রাম’ নিয়ে রুমানার অভিযোগ- টানা ক্রিকেট খেললে তবেই না বিশ্রাম দরকার। সেখানে প্রায় দুই মাস পর ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ নারী দল। লম্বা বিরতির পরও কেন তার বিশ্রামের দরকার- সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তার মনেও। আর সবচেয়ে বড় বিষয় বিশ্রাম যদি সত্যিকার অর্থে প্রয়োজনই হয়, তবে সেটা তো সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার নিজেই চেয়ে নেবেন। এই বিষয়গুলো নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলে বিসিবির চক্ষুশূল রুমানা। এবার বিসিবিতে তাকে ব্যাখ্যা করতে হবে তার বক্তব্যগুলো।
রুমানা দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন। অথচ এর চেয়ে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক মন্তব্য করলেও সাকিব আল হাসানকে কিছুই বলেনি বিসিবি। নাকি বলতে পারেনি। গত জানুয়ারিতে বিপিএল শুরুর ঠিক আগ-মুহূর্তে টুর্নামেন্টের মান নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছিলেন সাকিব। বলেছিলেন এখনকার বিপিএল যা তা একটা টুর্নামেন্ট! এমনকি তার দাবি ছিল, বিপিএলের দায়িত্ব পেলে খোলনলচে বদলে ফেলবেন টুর্নামেন্টের মান। এর উত্তরে বিসিবির সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেছিলেন, ‘সাকিব কোন প্রেক্ষাপটে এমন মন্তব্য করেছেন সেটা আমাদের জানা নেই। সাকিব যদি আমাদের ভেতরের অবস্থা জানতেন, তাহলে হয়তো এ রকম বলতে পারতেন না।’
ব্যস ওটুকুই বলেই সাকিবের মন্তব্য হজম করে নেয় বিসিবি। সাকিবের ক্ষেত্রে একরকম আর রুমানার জন্য আরেক আইন- বিসিবির এমন দ্বিমুখী আচরণ প্রসঙ্গে বিসিবির প্রধান ম্যাচ রেফারি রকিবুল হাসানের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি প্রথমে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তার মতে, এটা দলীয় শৃঙ্খলার বিষয়। তিনি বলেন, ‘এটা দলের নিয়মের মধ্যে পড়ে। শৃঙ্খলার বিষয়। ক্রিকেটাররা এই রকম চুক্তিই স্বাক্ষর করে যে তারা এই রকম (দল নির্বাচনবিষয়ক) কিছু বলতে পারবে না।’ রুমানাকে দলে না নেওয়ার বিষয়ে কী হয়েছে, সেটা বিস্তারিত না জানায় মন্তব্য করতে নারাজ রকিবুল, ‘কী হয়েছে না হয়েছে, এটা আমরা জানি না। তাই আমার জন্য এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করা উচিত নয়।’
রুমানাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করা হয়েছিল নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত তার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। রুমানাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়ার বিষয়ে এর আগে ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে নাদেল বলেছিলেন, ‘সংবাদমাধ্যমে তার বক্তব্য আমাদের চোখে পড়েছে। আমরা আশা করি না, তার মতো সিনিয়র ক্রিকেটাররা এই রকম আচরণ করুক। আমরা উদাহরণ তৈরি করতে চাই।’
রুমানার ক্ষেত্রে উদাহরণ তৈরি করতে চাইলেও সাকিব আল হাসানের সময় অবশ্য এই রকম কোনো চিন্তাভাবনা করেনি বিসিবি। একই দেশ। একই বোর্ড। একই চাকুরে। অথচ দুজনের জন্য দুই আইন!