প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৩ ১১:৩৩ এএম
আপডেট : ২৭ মে ২০২৩ ১১:৩৭ এএম
বিপিএলে নিজের জাত চেনান তাওহিদ হৃদয়। বিপিএলের সবশেষ আসরে হৃদয় ছিলেন সেরা ব্যাটারদের একজন। ফর্মের তুঙ্গে থেকে নিজেকে প্রমাণের পুরস্কারটা দ্রুত ওঠে হৃদয়ের হাতে। বিপিএল শেষে তার জন্য খুলে যায় জাতীয় দলের দুয়ার। দ্রুত ডাক মিললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেই হারাননি।
আরও পড়ুন : উজবেকিস্তানকে হারিয়ে টিকে থাকল বাংলাদেশ
ধরে রেখেছেন বিপিএলে দেখানো ছন্দ। এরপর থেকে তাকে বিবেচনা করা হচ্ছে সম্ভাবনাময়ী ক্রিকেটার হিসেবে। সম্ভাবনাময়ী হৃদয় নিজেকে প্রমাণও করেছেন। টিম ম্যানেজমেন্টও ভরসা রাখছে তার ওপর। সেই সুযোগে ফুল থেকে কুঁড়ি হয়ে ফোটার অপেক্ষায় তিনি।
আইরিশদের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ও দেশের বাইরে দুই সিরিজে খেলেছেন হৃদয়। ছয় ম্যাচে পাঁচ ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সুযোগ মিলেছিল তার। পাঁচ ইনিংসের সবগুলোতে পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করেছেন। দ্রুতই টপ অর্ডার গুটিয়ে যাওয়া কিংবা দ্রুত রান তাড়া, পাঁচ নম্বরে থাকা ব্যাটারের ওপর সব সময়ই থাকে একটু বাড়তি চাপ।
পজিশন চাপের হলেও তরুণ হৃদয়ের মধ্যে কাজ করেনি কোনো ভীতি। মাঠের খেলায় সেটা হয়ে ওঠে স্পষ্ট। চাপের মধ্যে উল্টো দুই দুইবার হয়ে ওঠেন দলের ত্রাণকর্তা। সিলেটে অভিষেক ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির আক্ষেপে পোড়েন। আক্ষেপে পুড়লেও ওইদিন বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা ছিলেন হৃদয়। তার ৯২ রানে ভর করে বাংলাদেশ দাঁড় করায় ৩৩৮ রানের সংগ্রহ।
ইংল্যান্ড সফরের দ্বিতীয় ওয়ানডে জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে ছিল পাহাড়সম লক্ষ্য। আইরিশদের দেওয়া ৩২০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৪০ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে পথ দেখানোর নায়ক ছিলেন তাওহিদ হৃদয়।
তার ৬৮ রানের ওই ইনিংস দলকে নিয়ে যায় জয়ের কাছাকাছি। আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরে দলের জয় নিশ্চিত করতে পারেননি। তার গড়া ভিতে নাজমুল হোসেন শান্ত-মুশফিকুর রহিমরা বাংলাদেশকে এনে দেন জয়।
ছোট্ট আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। তবুও নিজের পারফরম্যান্সে এখনও তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে চান না তাওহিদ হৃদয়। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘এখনও অনেক কিছু করার আছে। আরও ভালো খেলতে চাই। এজন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
ভালো খেলতে থাকা হৃদয়ের আফগানিস্তান সিরিজ নিয়ে ভাবনা কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে হৃদয়ের সহজ উত্তর, ‘আফগানিস্তান নিয়ে এখনই কিছু ভাবছি না। আমি এক দিন এক দিন করে পরিকল্পনা করি। এটা পরে ভাবা যাবে।’
জাতীয় দলের হয়ে প্রথম বিদেশ সফরে ইংল্যান্ডের মতো কঠিন কন্ডিশনকে মোকাবিলা করতে হয়েছে হৃদয়কে। সাকিব-তামিমদের সঙ্গে প্রথম বিদেশ সফর চ্যালেঞ্জিং ছিল হৃদয়ের জন্য। সেখানে ছিল ধারাবাহিকতা ধরে রাখার পাশাপাশি নিজেকে প্রমাণের চাপ।
ওই সফরে হৃদয়ের নামের পাশে লেটার মার্ক থাকবে সেটা নিশ্চিত। তবুও হৃদয় জানান, কন্ডিশন পুরো দলের জন্য কঠিন ছিল। ইংলিশ গ্রীষ্মে খেললে খুব বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতো না, সেটাও জানান।
হৃদয় বলেন, ‘জুন-জুলাইয়ে ব্যাটারদের জন্য সুবিধা থাকে। আমরা যখন সফর করেছি, ওই সময়টা ব্যাটারদের জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। বোলাররা সুইং-বাড়তি বাউন্স পেয়েছে। ওই সময় বোলিং করাটা বেশ কঠিন।’
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে কন্ডিশন ব্যাটারদের পক্ষে ছিল। সেটা জানিয়ে তাওহিদ হৃদয়ের ভাষ্য, ‘বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বল বারবার ভিজে যাচ্ছিল। ওই ম্যাচে ব্যাটিং করাটা একটু সহজ ছিল।’
চেমসফোর্ডে ছক্কা হাঁকিয়ে হৃদয় প্রমাণ করেছেন বল সীমানার ওপারে আছড়ে ফেলা সহজ কাজ। পেশিবহুল শক্তি নয় বরং টেকনিক্যালি সফল ছিলেন। ছন্দে থাকা তাওহিদ হৃদয় ওয়ানডেতে দুই হাফসেঞ্চুরিতে ৪৯.৮০ গড়ে করেন ২৪৯ রান। অন্যদের মতো ওয়ানডেতে তার গড় একশর নিচে নয়। ওয়ানডেতে হৃদয়ের স্ট্রাইক রেট ১১১.১৬।
এটাই প্রমাণ করে কতটা মারকুটে তিনি। টি-টোয়েন্টিতে তার স্ট্রাইক রেট অবশ্য আরও দারুণ। ৬ ম্যাচে ইতোমধ্যেই ১৩৬.৩৬ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৯০ রান। হৃদয়ের টেকনিকসমৃদ্ধ মারকুটে ব্যাটিং বাংলাদেশকে দেখাচ্ছে স্বপ্ন। আর হৃদয়ও স্বপ্ন দেখেন আরও ভালো খেলার।