প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৩ ১৩:০৫ পিএম
আপডেট : ১১ জুন ২০২৩ ১৩:০৯ পিএম
প্রীতি ম্যাচ খেলতে লিওনেল মেসি এখন চীনের বেইজিংয়ে। কিন্তু তাকে নিয়ে যেন সব আলোচনা যুক্তরাষ্ট্রে। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় মিডিয়ার হইচই ও পারফরম্যান্স নিয়ে কাটাছেঁড়া থেকে বাঁচতে চেয়েছিলেন। সেজন্য বার্সেলোনায় ফেরেননি। অর্থের দাপটে দুর্বার সৌদি প্রো লিগেও নাম লেখাননি।
আরও পড়ুন : আফগানিস্তানের স্পিন ত্রয়ী
কারণ হচ্ছে, অনেক হয়েছে। এবার একটু আড়াল থাকতে চান মেসি। তা আর হচ্ছে কোথায়; মেসি যেখানে সমর্থকরাও সেখানে। ‘ইন্টার মিয়ামিতে যাচ্ছি’- মেসির এই ঘোষণার পর আমূল পাল্টে গেছে মিয়ামির ক্লাবটির ফলোয়ারসংখ্যা। বিশ্বজুড়ে এখন ঘুরছে দুটো নাম মেসি এবং মিয়ামি।
ফুটবলার মেসির ভক্ত-সমর্থক বিশ্বজুড়ে। জনপ্রিয়তাও তার আকাশচুম্বী। ইন্টার মিয়ামির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি না হলেও এতক্ষণে সবার জানা, মেসি আসছেন। তাতেই প্রশংসায় ভাসছেন ফুটবলের যুবরাজ। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় রাস্তায় শোভা পাচ্ছে মেসির ম্যুরাল। রাস্তার পর রাস্তা সেজে উঠেছে মেসির ছবিতে। ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত এনবিএ ফাইনালেও আর্জেন্টাইন মহাতারকাকে নিয়ে উন্মাদনা দেখা গেছে। সেখানে তার জার্সি পরিধান করে দর্শকদের উপস্থিতি এবং জায়ান্ট স্ক্রিনে জানানো হয় অভিনন্দন বার্তা। তাদের মতে, মেসি যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে বিপ্লব ঘটাবেন।
মেসি নামক আবেগকে পুঁজি করেই জৌলুস অর্জনের স্বপ্ন বুনছে মেজর সকার লিগ। যুক্তরাষ্ট্রে এখনও দর্শক জনপ্রিয়তায় বেশ পিছিয়ে ফুটবল। এবিসি এবং ইএসপিএনের গত বছরের হিসাব অনুযায়ী- এনএফএল বা রাগবিতে গত মৌসুমে টেলিভিশন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম জুড়ে গড়ে ১৬.৭ মিলিয়ন মানুষ খেলা দেখেছে।
স্টেডিয়ামে বসে ম্যাচ দেখার সংখ্যাটা আরও বেশি অর্থাৎ ১৮.৮ মিলিয়ন। পরের অবস্থানে রয়েছে এমএলবি বা বেসবল। গড়ে ম্যাচপ্রতি ২৬ হাজার ৮৪৩ জন খেলা দেখেছে স্টেডিয়ামে বসে। টেলিভিশন বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সেই সংখ্যাটা ৬৪.৭ মিলিয়ন।
জ্যামিতিক হারে বাড়ছে মিয়ামির অনুসারীর সংখ্যা। দর্শক চাহিদার তুঙ্গে থাকায় দাম বাড়ালেও চলতি মৌসুমের মিয়ামির সব ম্যাচের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। এবার মেসির নাম পৌঁছে গেছে বাস্কেটবল (এনবিএ) কোর্টে। এনবিএর ফাইনালে ওঠা মিয়ামি হিটের সবচেয়ে বড় তারকা জিমি বাটলার বলেছেন, রোমাঞ্চিত মেসি যুক্তরাষ্ট্রে আসায়। মিয়ামি হিট দারুণ খুশি, ‘অবশ্যই আমরাও ফাইনালে উঠেছি, আমাদের সামনে দারুণ কিছু করার সুযোগ। সে এখানে আসছে, ফলে বিশ্বের অনেক জায়গা থেকে ফুটবল সমর্থকরা এখানে আসবে, তাকে খেলতে দেখার সুযোগ পাবে। আনন্দিত সে এখানে আসছে।’
মেসির আগমনের ছোঁয়া বাস্কেটবলের বাইরেও লেগেছে। আমেরিকান ফুটবল দল মিয়ামি ডলফিনের ১০ নম্বর টাইরিক হিল এক ভিডিও বার্তায় মজা করেছে। জানতে চেয়েছে কে বেশি দ্রুতগতির, ‘লিওনেল মেসিকে স্বাগত জানাতে চাই। এখন আমাদের দুজন ১০ নম্বর হয়ে গেল, জানতে চাই কে বেশি দ্রুতগতির। তবে যা-ই হোক, মেসি তোমাকে অভিনন্দন।’
যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটিতে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নাম লেখানো না হলেও পরিকল্পনা আগে থেকেই সেরে রেখেছিলেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটির সঙ্গে মেসির চুক্তি হলেও ২০১৯ সালেই মিয়ামিতে অ্যাপার্টমেন্ট কিনে রেখেছেন আর্জেন্টাইন তারকা। মেসি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন দ্য পোর্সচে ডিজাইন টাওয়ারে। ৬০ তলাবিশিষ্ট টাওয়ারটি তৈরি হয়েছিল ২০১৭ সালে। এই টাওয়ারের নবম তলার পুরোটার মালিকানা মেসির। ইন্টার মিয়ামি স্টেডিয়াম থেকে যার ২৫ মিনিটের দূরত্ব। ডেইলি মেইলের খবর অনুযায়ী, দ্য পোর্সচে ডিজাইন টাওয়ারে অ্যাপার্টমেন্টটির জন্য মেসির খরচ করতে হয়েছে প্রায় ৯ মিলিয়ন ডলার। এর অবস্থান বাল হার্বার ও অ্যাভেন্টুরার মাঝামাঝি স্থানে।
সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসির দাবি, মিয়ামিতে মৌসুমে ১০০ মিলিয়ন ইউরো বেতন পাবেন মেসি। চুক্তিটা ঠিক তিন বছরের। অন্যদিকে কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম বলছে, বার্ষিক ৫০ মিলিয়ন ইউরো পারিশ্রমিকে আগামী দুই মৌসুম মিয়ামিতে কাটাবেন মেসি। এমএসএল-কে বছরে ২৫০ মিলিয়ন ইউরো দেয় অ্যাপল। মেসি আসায় স্ট্রিমিংয়ে এমএসএলের চাহিদা বাড়বে, যা থেকে একটা লভ্যাংশ দেওয়া হবে মেসিকে। অন্যদিকে মিয়ামির ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা পাবেন মেসি। অবসরের পর ক্লাবের কিছু শেয়ারের মালিকও বনে যাবেন মেসি।