প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৩ ২০:৪৮ পিএম
বাংলাদেশের নারী
ফুটবলের প্রায় সব সাফল্যের নেপথ্য নায়ক তিনি। সেই গোলাম রাব্বানী ছোটন এখন নারী ফুটবলে
অতীত অধ্যায়। গেল মে মাস শেষেই নারী দলের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। তার চলে যাওয়ার
পর এই প্রথমবারের মতো কোনো ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। তাই সংবাদ সম্মেলনের একটা
বড় অংশ জুড়ে আলোচনা হলো তাকে নিয়েই।
দলের অধিনায়ক
সাবিনা খাতুন জানালেন, বাস্তবতাকে মেনে নিতেই হবে। তার কথা, ‘বাস্তবতাটা মানতে হবে,
পেশাদার হিসেবে এটা মানতেই হবেÑ আজ এখানে লিটু স্যার আছেন, কাল এখানে আপনিও থাকতে পারেন।’
ছোটন চলে যাওয়ার
পর মাহবুবুর রহমান লিটুর হাতে দেওয়া হয়েছে দলের দায়িত্ব। দীর্ঘদিন ধরেই ছোটনের সহকারী
হিসেবে তিনি কাজ করেছেন নারী ফুটবল দলে। সাবিনার আশা, তিনি (লিটু) কিছুটা হলেও ছোটনের
শূন্যতা পূরণ করতে পারবেন।
তার কথা, ‘ছোটন
স্যারের সঙ্গে যেমন পারিবারিক একটা বন্ধনের মতো ছিল, তিনি মেয়েদের প্রতি কেয়ারিংও ছিলেন,
স্যারকে মিস করব সেটা স্বাভাবিক, তবে বর্তমান যে পরিস্থিতিটা আছে সেটাও খুব খারাপ নয়।
দীর্ঘদিন ধরে লিটু স্যার আমাদের সঙ্গেই আছেন। শুরু থেকেই ছোটন স্যার আর লিটু স্যার
সঙ্গে ছিলেন। ওভারঅল আমার মনে হয় পেশাদার খেলোয়াড়দের এটা জীবনেরই একটা অংশ, সেটা মেনে
নেবে আর মেনে নিতেই হবে, সবকিছু ওভারকাম করা আমাদের জন্য একটু কঠিন হবে।’
লিটু অবশ্য জানালেন,
পরিস্থিতিটা থেকে উতরে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টাই করছে বাফুফে। তিনি বলেন, ‘আসলে প্রত্যেক
পরিবারেই একটা দুঃসময় আসে, তো আমি বলব আমাদের একটা ক্রাইসিস মোমেন্ট ছিল, সেটা আমরা
চেষ্টা করছি উতরে যাওয়ার। তবে শিগগিরই সেটা কাটিয়ে ওঠার জন্য বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন
ও মাহফুজা আক্তার কিরণ দেশের বাইরেও বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন কোচের জন্য। তো আমি আশা করি,
যে শূন্যতা আছে, সেটা তারা পূরণ করবেন। তবে কোচ হিসেবে এখন আমি বলব, আমরা যথেষ্ট চেষ্টা
করেছি দলটাকে এক সুতোয় গাঁথার জন্য। তাদের মোটিভেট করার জন্য। আশা করছি মেয়েরা শতভাগ
দিতে পারবে।’
ছোটন চলে যাওয়ার
পর এবারই প্রথম বাফুফে নারী দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে।
তাতে ছোটনকে নিয়ে প্রশ্ন-আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে ছোটন না থেকেও আছেন, এ কথাটা
বলা হচ্ছে মূলত দলের কাঠামো আর কৌশলের কারণে।
ছোটনের অবর্তমানে
দুই ম্যাচের জন্য এই দলের দায়িত্ব পড়েছে লিটুর কাঁধে, যিনি শুরু থেকেই ছিলেন ছোটনের
সহকারী। দলটাও তো ছোটনের হাতে গড়াই। গেল সাফে শিরোপা জিতিয়েছেন, সেই দলের অনেকেই ঝরে
পড়েছেন শেষ আট মাসে। তাদের জায়গায় যারা এসেছেন, তারাও তো ছোটনেরই শিষ্য, বয়সভিত্তিক
কাঠামোটাও যে দেখাশোনা করতেন ছোটনই।
সে কারণেই হয়তো
কোচ লিটু জানালেন, খুব একটা পরিবর্তন আসবে না দলের দর্শনে। তার কথা, ‘কোচ বদলে গেলেও
আমাদের দর্শনটা কিন্তু ওই একই আছে। আমরা আগে যে দর্শন নিয়ে খেলতাম, এখনও সে একই কৌশলে
এগোব।’ দর্শনটা তো ঠিক থাকল, এবার মাঠের ফলাফলটাও যদি একই থাকে, তবেই বাঁচোয়া।