জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার
আনিসুর রহমান, ধোবাউড়া (ময়মনসিংহ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ২১:৫৯ পিএম
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৩ ১৭:৩৮ পিএম
শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার পাচ্ছেন ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও নারী ফুটবল দলের টিম ম্যানেজার মালা রাণী সরকার। তাকে ভালোবেসে স্থানীয়রা কলসিন্দুরের ফুটবল কন্যাদের ‘মা’ বলে ডাকেন।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অতিরিক্ত সচিব পরিমল সিংহ খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
আগামী শনিবার (৫ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করবেন মালা রাণী সরকার।
মালা রাণী সরকারের পুরস্কারের ঘোষণায় খুশি হয়েছেন কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছেন তিনি।
কলসিন্দুর নারী ফুটবল দলের কোচ জুয়েল মিয়া জানায়, ‘মাননীয় প্রধামন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা। তিনি মালা রাণী সরকারকে পুরস্কার দিচ্ছেন বলে। আমাদের কলসিন্দুরের মেয়েরা ভবিষ্যতেও দেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখবে।’
শিক্ষার্থী ইউসুফ মন্ডল বলেন, ‘মালা রানী সরকার আমাদের কলসিন্দুরের মা জননী, তিনি পুরস্কার পাচ্ছেন জেনে আমরা খুবই আনন্দিত।’
স্থানীয়রা জানান, নারী ফুটবলের অগ্রযাত্রা,নারীর ক্ষমতায়ন এবং ফুটবলার মেয়েরা যাতে ঝরে না পড়ে সেক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মালা সরকার। কলসিন্দুরের মেয়েদের সাফল্যের পথ পরিক্রমায় সবসময় এদের সঙ্গে ছায়ার মত লেগে থেকেছেন। এদের বিপদে আপদে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেন। যেকোনো সমস্যা ওরা বাড়িতে বাবা মাকে না বলে মালা সরকারকে জানাতো। খেলাধুলা ভালো করার জন্য ওদের উৎসাহ দিতে বিভিন্ন সময় আর্থিক সহায়তাও করেন তিনি। এভাবেই ফুটবলার মেয়েদের কাছে তিনি হয়ে উঠেন মা। অনেক অভিভাবক বিভিন্ন কারণে খেলা বন্ধ করে দেন। তাদের কাছে গিয়ে নানাভাবে বুঝিয়ে আবার খেলায় ফিরিয়ে আনেন তিনি। মেয়েদের খেলাধুলার কারণে এলাকায় বাল্যবিবাহ কমে এসেছে। বংলাদেশের যেকোনো স্থানে খেলা হলে তিনি সঙ্গে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করেন।
ফুটবলার মেয়েদের প্রতি এই আন্তরিকতায় কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মেয়েদের টিম ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব দেন মালা রাণী সরকারকে। গত কয়েক বছর ধরে ফুটবলার মেয়েদের একমাত্র অভিভাবক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। ফুটবলার মেয়েদের সঙ্গে মালা রাণীর রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। মেয়েদের প্রতি এই ভালবাসায় ফুটবলারদের মা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে তাকে।
দ্যা আনবিটেন গার্লস (অপরাজিত মেয়েরা) নামে একাদশ শ্রেণিতে পাঠ্য বইয়ে একটি বিশেষ পাঠ রাখা হয়েছে। সেই পাঠে লেখা হয়েছে মালা রাণীর কার্যক্রম।
মালা রাণী সরকার বলেন, ‘ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা থেকে মেয়েদের পাশে থেকে কাজ করেছেন। মেয়েরা তাকে মা বলে ডাকেন এটা অনেক গর্বের বিষয়। নারী ফুটবলের আতুরঘর খ্যাত কলসিন্দুরে নারী ফুটবলের সংগঠক ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার পাচ্ছি। এটা অনেক গর্বের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজে আমাকে অনুপ্রেরণা যোগাবে।’