প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৩ ০৯:৩৫ এএম
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৩ ১০:০২ এএম
ম্যাচটা লিওনেল মেসির ইন্টার মিয়ামি জেতার পথেই ছিল। তাও একবার নয়, দু'বার। একবার মূল ম্যাচে, আরেকবার পেনাল্টি শ্যুট আউটে। তবে সেটা যদি হয়েই যেত, তাহলে ২২ পেনাল্টির রোমাঞ্চটা ঠিক দেখত না প্রতিপক্ষ ন্যাশভিলের মাঠ জিওডিস পার্কের দর্শকরা। সেটা হলো বলেই লিগস কাপের ফাইনালে ১-১ ড্রয়ের পর পেনাল্টি শ্যুট আউটে স্নায়ুক্ষয়ী লড়াই শেষে ১০-৯ গোলে জিতল মিয়ামি। তাতে ইতিহাসও গড়া হয়ে গেছে মেসির দলের। নিজেদের ৫ বছরের ইতিহাসে এবারই যে প্রথম কোনো শিরোপায় চুমু খেল দলটি!
শুরুটা মেসিই করেছিলেন। মিয়ামিতে যোগ দিয়ে শুরুতে গোল দেওয়াটাকে যেন অভ্যাসই বানিয়ে ফেলেছিলেন। সেটা ধরে রাখলেন ফাইনালেও। ২৩তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে আগুনে এক শটে বল জালে জড়ান স্বাগতিক ন্যাশভিলের। শুরুর অর্ধে সেই এক গোলই মিয়ামিকে আশা দেখাচ্ছিল শিরোপার।
তবে দৃশ্যটা বদলে গেল ম্যাচের ৫৯ মিনিটে। ফাফা পিকার গোলে যখন সমতা ফেরাল ন্যাশভিল। মিয়ামি জেগে উঠল এর পরই। মেসির একটা শট প্রতিহত হলো বারপোস্টে। অন্য বারপোস্টটা আরও একবার পথ আগলে দাঁড়াল মিয়ামির। একেবারে শেষ মুহূর্তে লিওনার্দো কাম্পানইয়ার শটও গিয়ে লাগে বারপোস্টে। তাতে খেলাটা শেষ হয় ১-১ সমতায় থেকে। ডাক পড়ে পেনাল্টি শ্যুট আউটের।
সেখানেও শুরুটা হয় মেসিকে দিয়েই। ন্যাশভিলের দ্বিতীয় শট নিতে আসা র্যানডাল লিয়ালের শটটা ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক ড্রেক ক্যালেন্ডার। মেসির শটটাসহ মিয়ামি নিজেদের প্রথম চার শটেই করেছে গোল। তাতেই জয়ের খুব কাছে চলে গিয়েছিল দলটা। পঞ্চম শটটা জালে জড়াতে পারলেই জয় নিশ্চিত, এমন পরিস্থিতিতে ভিক্তর উল্লোয়ার শট ঠেকিয়ে দেন ন্যাশভিল গোলরক্ষক এলিয়ট পানচো। খেলা গড়ায় সাডেন ডেথে।
দুই দলের সমতা সেখানেও ভাঙছিলই না রীতিমতো। ছয় থেকে দশ নম্বর পেনাল্টিতে কোনো দলই কোনো ভুলচুক করল না। তাই দুই গোলরক্ষকেরই পালা এল শট নেওয়ার। মিয়ামির গোলরক্ষক ক্যালেন্ডার তার কাজটা ঠিকই করলেন, তার শট গিয়ে আছড়ে পড়ল জালে। কিন্তু একই কাজ প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক এলিয়টকে করতে দিলেন না ক্যালেন্ডার। ঠেকিয়ে দিলেন তার শট। তাতেই জয়টা নিশ্চিত হয়ে যায় মিয়ামির। গড়া হয়ে যায় ইতিহাসও। দলের ইতিহাসের প্রথম শিরোপা বলে কথা!
মেসির অবশ্য ক্যারিয়ারের ৪৪তম শিরোপা এটি। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় আর সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারটা গেছে তার ঝুলিতেই। তবে ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা অবশ্য তার হাতে ওঠেনি, উঠেছে গোলরক্ষক ক্যালেন্ডারের হাতে, পুরো ম্যাচে অসাধারণ সব সেভ আর টাইব্রেকারে দুটো শট ঠেকিয়ে তিনিই যে সবচেয়ে বড় অবদানটা রেখেছেন দলের জয়ে! তবে মেসি যে শিরোপাটা জিতেই খুশি সেটা ম্যাচ শেষে তার প্রতিক্রিয়াই বলে দিচ্ছিল।
এবার মিয়ামির সামনে নতুন শিরোপা জেতার হাতছানি। ইউএস ওপেন কাপের সেমিফাইনালে আগামী বৃহস্পতিবার সিনসিনাটির বিপক্ষে খেলবেন মেসিরা।